×

সারাদেশ

বেড়িবাঁধ উন্নয়নে বাধা, এস্কেভেটরে আগুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:৫৫ পিএম

বেড়িবাঁধ উন্নয়নে বাধা, এস্কেভেটরে আগুন

এস্কেভেটর গাড়ি। ছবি: প্রতিনিধি

বেড়িবাঁধ উন্নয়নে বাধা, এস্কেভেটরে আগুন

আনোয়ারা উপকূলে বেড়িবাঁধ

চাঁদাবাজি, হামলা, হুমকিতে সৈকতের উন্নয়ন কাজে বাধা

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বানুর হাট এলাকার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়ন কাজের জন্য নিয়ে আসা এস্কেভেটর গাড়িতে রাতের অন্ধকারে আগুনে পুড়ে দেয়ার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এস.এ.এস.আই এন্ড ইসরাত এন্টারপ্রাইজ জেভি সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. আমিরুল ইসলাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেড়িবাঁধ উন্নয়ন কাজের জন্য দায়িত্বরত এসও ফারাইুজল ইসলামের নির্দেশে ২০ সেপ্টেম্বর কাজ করার জন্য এ এস্কেভেটর নিয়ে আসা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে স্থানীয় দুস্কৃতিকারীরা সাইটের এস্কেভেটরটি পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটায় সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বানুর হাট এলাকার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়ন কাজে মাটি কাটার জন্য নিয়ে আসা হয় একটি এস্কেভেটর গাড়ি। মঙ্গলবার সকাল থেকে মাটি কাটার কথাও ছিলো। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজটি এস.এ.এস.আই এন্ড ইসরাত এন্টারপ্রাইজ জেভি ঠিকাদারী নেন। স্থানীয়দের বিভিন্ন ধরনের বাঁধার কারণে সে কাজটিও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অবশেষে স্থানীয় ঠিকাদার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক নামে এক ঠিকাদারী নেন। তার কাছ থেকেও বিভিন্ন সময়ে চাঁদা আদায় করায় সেও কাজ করতে পারছে না বলেও জানান স্থানীয়রা। স্থানীরা আরো জানান, অনেকদিন পর কাজ শুরু হচ্ছিল কিন্তু মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে স্থানীয় দুস্কৃতিকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয় গাড়িতে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মামুন জানান, এস্কেভেটর গাড়িতে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে আমি দ্রুত ছুঁটে আসি এবং জানতে পারি শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ কাদের, বর্তমান ইউপি সদস্য বদিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হারুন, আনোয়ার ইসলামের ছেলে দিদারুল আলম, মোহাম্মদ মিন্টু, মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে নুরুল আলম আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি। আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন তাদেরকে দেখছে।

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান বাবু বলেন, যারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তারা এলাকার যুবকদের মাদকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। কেউ কোনো কাজ করলেও তাদের দিতে হয় চাঁদা। অনেকদিন পর অবহেলিত বেঁড়িবাঁধের কাজ হচ্ছিল কিন্তু ঠিকাদার মোজাম্মেলের কাছ থেকেও চাঁদা চেয়েছে। প্রকাশে এসে হুমকিও দিয়েছে তারা। চাঁদা না দেয়ায় গাড়িতে আগুন দিয়েছে। আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির মোহাম্মদ ইসমাইল ও তার স্ত্রী রিনা আকতার নিজে দেখেছে। আমরা এসে তাদের ধাওয়াও করেছি।

[caption id="attachment_243534" align="aligncenter" width="700"] এস্কেভেটর গাড়ি। ছবি: প্রতিনিধি[/caption]

সাব ঠিকাদার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, কাজটি নেয়ার পর থেকে তারা আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছে। তাদের চাঁদা না দেয়ায় রাতে এসে এস্কেভেটরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আমি এটার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আমি এখানে সরকারের উন্নয়নের কাজ করছি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী বা সন্ত্রাসীদের কেন চাঁদা দিতে হবে।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ হারুন স্বীকার করে বলেন, স্থানীয়রা আমার বিরুদ্ধে যেসব কথা বলছেন সবই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র। অনেক বছর আগে আমি ও মামুন ঠিকাদারী কাজ ছেড়ে দিয়েছি। যে ঘটনাটি ঘটছে এসব আমি কিছুই জানি না। ঠিকাদার মোজাম্মেল ও তার সিন্ডিকেটের সঙ্গে আমার পারিবারিক শত্রুতা ছিলো। এর জেরে তারা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

এ ঘটনায় এস.এ.এস.আই এন্ড ইসরাত এন্টারপ্রাইজ জেভি সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আনোয়ারা বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ করার জন্য আমাদের কোম্পানীর এস্কেভেটরটি নিয়ে আসে। কে বা কারা রাতের অন্ধকারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগুন দেয়ার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল মাহমুদ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App