গ্রামীণ জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দেয়ার কথা বলে শত শত কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ ওঠায় ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাশু শেখর ভদ্র-এর দূর্নীতির বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি মনে করে, তদন্তের ক্ষেত্রে তাঁর স্ব-পদে বহাল থাকার বিষয়টি দেশের সকলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অতি দ্রুত তাঁকে দায়িত্ব হতে অপসারণের জন্য বৈঠকে জোর সুপারিশ করা হয়।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৭ম বৈঠকে তাকে নিয়ে এমনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেল, আহমেদ ফিরোজ কবির, মো. নুরুল আমিন, মনিরা সুলতানা, জাকিয়া পারভীন খানম এবং অপরাজিতা হক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সভাপতির বিশেষ আমন্ত্রণে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বৈঠকে যোগদান করেন।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, গ্রামের জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দেওয়ার কথা বলে শত শত কোটি লোপাট হয়েছে ডাক বিভাগের। যার দায় মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র এড়াতে পারেন না। কেনা-কাটা থেকে শুরু করে ডিজিটাল পোস্ট সেন্টার স্থাপন- সবখানে ধরা পড়েছে অনিয়মের স্বাক্ষর। শুধু তাই নয় বহু ডিজিটাল সেন্টারের অস্তিত্বই নেই, তবুও নাম ভাঙিয়ে ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা লোপাট হয়েছে। এসবই উঠে এসেছে ডাক বিভাগের গঠিত তদন্ত রিপোর্টে। এ নিয়ে সুধাংশু শেখর ভদ্রকে দুর্নীতি দমন কমিশনও তলবও করে, তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

অন্যদিকে গত ১৪ আগস্ট সকালে জাতির জনকের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডেটা কার্ড উন্মোচন ও বিশেষ খামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যান্যের সঙ্গে তিনিও গণভবনে যান। অথচ সেসময় তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টেবিলে বসে উদ্বোধনী খাম, স্মারক ডাকটিকিট এবং ডেটা কার্ড উন্মোচন কাজে স্বাক্ষর করেছেন সেই টেবিলের পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিটি। তা ছাড়া তার দুর্নীতি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। সেই তদন্ত সঠিক যাতে হয় সেজন্য সুপারিশ করেছে কমিটি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সংসদীয় কমিটির ক্ষোভের মুখে কোনো জবাব দিতে পারেননি ডাকের মহাপরিচালক এস কে ভদ্র। এমনকি তাকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রীও একমত পোষন করেছেন বলে জানা গেছে।