×

সারাদেশ

চট্টগ্রামের ইলিশ যাচ্ছে সারাদেশসহ ভারতেও

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:০৮ এএম

চট্টগ্রামে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। অন্যবারের চেয়ে আকারেও বড়। বঙ্গোপসাগরে ইলিশের প্রাচুর্যতায় জেলেদের পাশাপাশি মাছ ব্যবসায়ীদেরও চোখেমুখে খুশির ঝিলিক। ইতোমধ্যে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের ইলিশকেন্দ্রিক অর্থনীতি। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে। ডিম ছাড়ার মৌসুম ও জাটকা শিকার নিয়ে প্রশাসনের নজরদারির কারণে চট্টগ্রামের উপক‚লীয় এলাকায় দিন দিন ইলিশ বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। চলতি অর্থবছরে শুধু ইলিশ থেকে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি আয় হবে বলে তারা জানান।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বৃহত্তম মাছের আড়ত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ফিশারিঘাটে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ইলিশ বোঝাই ট্রলার ভিড়ছে। ফিশারিঘাট ছাড়াও নগরীর কাট্টলির রাসমনি ঘাট, আনন্দবাজার ঘাট, আকমল আলীঘাটেও এখন শুধু ইলিশ আর ইলিশ। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী বিভিন্ন উপজেলার ঘাটগুলোতেও জেলে, ব্যাপারি আর পাইকারি ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর হয়ে আছে। ইলিশে সয়লাব হওয়ায় ইলিশের দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও এখনো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।

ফিশারিঘাটের সোনালি যান্ত্রিক মৎস্যশিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক বাবুল ভোরের কাগজকে বলেন, এবার ইলিশের কারণে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে ফিশারিঘাট। তিনি বলেন, এই ফিশারিঘাট শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আধুনিক মৎস্যবাজার। এখানে একটি কোল্ডস্টোরেজ তৈরি করে এ বাজারকে জাতীয়করণ করা হলে এখান থেকে সমগ্র চট্টগ্রাম বিভাগে সরাসরি মাছ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এই ফিশারিঘাটেই প্রতিদিন ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকার ইলিশ বেচাকেনা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, এবার প্রায় দেড় হাজার টন ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করা হচ্ছে। ৯টি দেশি প্রতিষ্ঠান এ দায়িত্ব

পেয়েছে। প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা দরে ভারতে রপ্তানি করা প্রতিটি ইলিশের আকার হবে এক কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম ওজনের। এবার ভারতে রপ্তানির কাজ পাওয়া চট্টগ্রামের সেভেনস্টার ফিশ প্রোসেসিং কোম্পানির কর্ণধার মো. সেলিম হাওলাদার ভোরের কাগজকে বলেন, এবার ৯টি প্রতিষ্ঠান ভারতে ইলিশ রপ্তানির কাজ পেলেও সেভেনস্টারই প্রায় অর্ধেকের বেশি ইলিশ ভারতে পাঠাচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এসব ইলিশ ভারতে পাঠানো হচ্ছে।

নগরীর ফিশারিঘাটের কয়েকটি আড়তে সরেজমিন দেখা যায়, সাগর থেকে ইলিশভর্তি সারি সারি ট্রলার ঘাটে ভিড়েছে। ওইসব ট্রলার থেকে ইলিশ নামিয়ে আড়তে সাজিয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ সেই প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। জেলেদের ধরা ইলিশ আড়তে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। কিনছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা। এরপর ড্রামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মাছগুলো।

অন্যদিকে, খুচরা মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ। অলিগলি পাড়া-মহল্লায়ও ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের ইলিশ বিক্রি।

ফিশারিঘাটে ইলিশ নিয়ে আসা এফভি জান্নাত ট্রলারের মালিক মো. রিদুয়ান জানান, আটদিন আগে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া অংশে মাছ ধরতে যান ২৪ জন জেলে নিয়ে। তিনি প্রায় দুই লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করতে পেরেছেন। বড় তিন মণ এবং ছোট-মাঝারি মিলিয়ে মোট ১২ মণ ইলিশ শিকার করেছেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App