×

সারাদেশ

সাতদিনেই ১৯ কোটি টাকার সড়কের মৃত্যুঘণ্টা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২৩ পিএম

সাতদিনেই ১৯ কোটি টাকার সড়কের মৃত্যুঘণ্টা!

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-ডাকবাংলো সড়কের মৃত্যুঘণ্টা।

সাতদিনেই ১৯ কোটি টাকার সড়কের মৃত্যুঘণ্টা!

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-ডাকবাংলো সড়কের বেহাল দশা

নির্মাণের সাতদিনের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-ডাকবাংলো সড়কের পিচ। দেখা দিয়েছে অসংখ্য চিড়, ফাটল। যান চলাচলও হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। সদ্য নির্মিত সড়কের দিকে অনেকেই হা হয়ে তাকিয়ে থাকছেন। নির্মাণের সাতদিনের মধ্যেই কীভাবে সড়কের এমন দশা হতে পারে! নির্মাণকারী ঠিকাদারের দাবি, বৃষ্টির কারণে পিচ উঠে গেছে। তবে রাস্তা ব্যবহারকারীরা বলছেন, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে সড়কে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ডাকবাংলা পর্যন্ত মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে সে নির্মাণের সাতদিনের মাথায় সদ্য নির্মিত সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে, দেখা দিয়েছে ফাটল, চিড়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গেল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভেঙে যাওয়া অংশে পুনঃনির্মাণের জন্য শ্রমিক দিয়ে পিচ উঠিয়ে ফেলছেন। তবে এলাকাবাসীর দাবি, নির্মিত সম্পূর্ণ অংশটাই তুলে রাস্তাটি পুণরায় নির্মাণ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতকরণ ও সংস্কার কাজ চলছে। কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিং কাজ শুরু করে ৪ থেকে ৫ দিনে অন্তত ৪ কিলোমিটর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরই মধ্যে শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। এলাকবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে শ্রমিক লাগিয়ে বেশি খারাপ অংশের পিচ তুলে ফেলছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

খুলনার মুজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও হাত বদল হয়ে কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া। ১৯ কোটি টাকার টেন্ডার শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। রাস্তা খোঁড়া এবং ইট বালুর কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগেই। সম্প্রতি শুরু করেছে কার্পেটিং এর কাজ।

[caption id="attachment_243414" align="aligncenter" width="700"] ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-ডাকবাংলো সড়কের বেহাল দশা[/caption]

সড়কটির নির্মাণ কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে এমটি হয়েছে। তবে সিডিউল অনুযায়ী সড়কে কাজ সম্পন্ন করার তিন বছরের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজ খরচে পুনঃমেরামত করবেন। তবে বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখার মধ্যেই রাস্তার সমস্যা হয়েছে।

শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আশানুর রহমান বলেন, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে রাস্তার কাজ শেষ করতে না করতেই পিচ উঠে যাচ্ছে। একই গ্রামের বাসিন্দা পান্না মিয়া বলেন, নির্মিত সমস্ত অংশটুকুই নিম্নমানের জিনিস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যা কারণে পিচ উঠে যাচ্ছে। গোটা সড়কটাই পুনঃনির্মাণ না করলে জনভোগান্তি দূর হবে না।

তবে ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম মিয়া দাবি করেন নিম্নমানের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে না। বৃষ্টির দিনে কাজ করায় এমনটা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুণঃনির্মাণ করা হবে।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দারের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্ণা রানী সাহা জানান, নির্মিত সড়কের অংশটুকু তিনি নিজে গিয়ে দেখেছেন। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App