বেরিয়ে এলো মালেক ওরফে বাদল উত্থানের রহস্য
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:৫৪ পিএম
আবদুল মালেক ওরফে বাদল/ফাইল ছবি
ইতিমধ্যে আবদুল মালেকের বাড়ির গেইট ও দামি আসবাবপত্র সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েচে মালেকের বাড়ি ও অঢেল সম্পত্তির ছবি
এর আগে মালেককে গ্রেপ্তার করে র্যাব
আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদল চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮২ সালে সাভার স্বাস্থ্য প্রকল্পে। অধিদপ্তরে যোগ দেন ১৯৮৬ সালে। তবে তাঁর উত্থান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক শাহ মুনীর হোসেনের সময়। চার বছর মালেক সাবেক এই মহাপরিচালকের গাড়ি চালিয়েছেন।
[caption id="attachment_243401" align="aligncenter" width="480"] ইতিমধ্যে আবদুল মালেকের বাড়ির গেইট ও দামি আসবাবপত্র সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল[/caption]গতকাল সোমবার অধিদপ্তরের সাবেক একজন ও বর্তমানে কর্মরত, এমন কমপক্ষে তিনটি সূত্রের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। সূত্রগুলোর দেওয়া তথ্যের সঙ্গে র্যাবের তদন্ত মিলে যায়। তবে অধিদপ্তরের সূত্রগুলো নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, শাহ মুনীর হোসেনের নামে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাঁর নিজস্ব প্যাথলজি ল্যাবগুলো নিয়ম মেনে চলছিল না। অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। আবদুল মালেক এ সবকিছুরই সাক্ষী ছিলেন। সে কারণে শাহ মুনীর হোসেন তাঁর ব্যাপারে শক্ত হতে পারেননি।
[caption id="attachment_243404" align="aligncenter" width="800"] আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত[/caption]র্যাবের অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাহ মুনীর হোসেন মহাপরিচালক পদে থাকার সময় ২০০৯ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আবদুল মালেক স্বাস্থ্য সহকারী পদে শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, আবদুল মালেক ছিলেন শাহ মুনীরের ‘কালেক্টর’।
[caption id="attachment_243402" align="aligncenter" width="728"] সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েচে মালেকের বাড়ি ও অঢেল সম্পত্তির ছবি[/caption]আবদুল মালেক পরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি জোট গঠন করে সেটির সভাপতি হন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, অধিদপ্তরে যেসব কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি ব্যবহারের জন্য প্রাধিকারভুক্ত নন, তাঁরাও গাড়ি ব্যবহার করেন। গাড়িচালকেরাও ইচ্ছেমতো তেলের বিল তোলেন। এসব নিয়ে কেউ কখনো আপত্তি তুললে চালকেরা একজোট হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। তাই প্রায় ১০ বছর ধরে আবদুল মালেক সিন্ডিকেট করে অধিদপ্তরে প্রভাব বিস্তার করলেও কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাহ মুনীর হোসেন। তিনি বলেন, নিয়োগ, বদলি তাঁর কথায় হতো না। আর গাড়িচালক মালেক যে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন, সে সম্পর্কে তিনি জানতেন না। তবে তিনি জানিয়েছেন, তিনি যখন স্বাস্থ্যশিক্ষার পরিচালক, তখন থেকেই মালেক তাঁর গাড়ি চালিয়েছেন। মহাপরিচালক যখন ছিলেন, তখনো মালেকই ছিলেন তাঁর গাড়িচালক। সর্বশেষ আবদুল মালেক গাড়ি চালাতেন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের।
[caption id="attachment_243403" align="aligncenter" width="600"] এর আগে মালেককে গ্রেপ্তার করে র্যাব[/caption]আবদুল মালেককে দুই মামলায় গতকাল ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান গতকাল সচিবালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আবদুল মালেকের মতো আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের বিষয়েও অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া চলছে। আবদুল মালেককে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে বলে জানান তিনি।