×

সারাদেশ

কৃষি কর্মকর্তার ৯ লাখ টাকার চাকরিবাণিজ্য!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৩৯ পিএম

কৃষি কর্মকর্তার ৯ লাখ টাকার চাকরিবাণিজ্য!

অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন

কৃষি কর্মকর্তার ৯ লাখ টাকার চাকরিবাণিজ্য!

প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীর আবেদনপত্র।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসে কমর্রত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

এ নিয়ে রাণীনগর উপজেলায় চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। ভুক্তভোগীর নাম নাছিমুজ্জামান। তিনি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার যোগীভিটা গ্রামের রফিকুল আলম আকন্দের ছেলে।

অভিযোগ ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গেল ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে মোট ১৬৫০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে ভুক্তভোগী নাছিমুজ্জামান চাকরির জন্য আবেদন করেন।

এক পর্যায়ে রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসে চাকরিরত তার এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচয় ঘটে একই অফিসে কমর্রত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। যিনি নাছিমুজ্জামানকে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ভাইভা ও পরীক্ষার আগে ও পরে দফায় দফায় চেকের মাধ্যমে এবং নগদসহ মোট ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন।

তবে শেষ অবধি নাছিমুজ্জামানের চাকরি না হওয়ায় আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে টাকা ফেরত চান। তবে অভিযুক্ত আনোয়ার টাকা ফেরত না দিয়ে নাছিমুজ্জামানকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখান।

অবশেষে নিরূপায় হয়ে টাকা ফেরত পেতে ও সুষ্ঠু প্রতিকার চেয়ে গেল ১৭ আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন নাছিমুজ্জামান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেল ১৫ সেপ্টেম্বর অধিদপ্তরের নওগাঁ উপ-পরিচালক আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাওছার হোসেনকে আহ্বায়ক ও নওগাঁ সদরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মণিকা ও রাণীনগর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন সোহেলকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

[caption id="attachment_243440" align="aligncenter" width="528"] প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীর আবেদনপত্র।[/caption]

গেল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের কর্মস্থল রাণীনগর এসে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান।

ভুক্তভোগী নাছিমুজ্জামান জানান, আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে দফায় দফায় চেকের মাধ্যমে ও নগদসহ মোট ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেন। নিরূপায় হয়ে অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি দ্রুত টাকা ফেরতসহ সুষ্ঠু প্রতিকার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসে কমর্রত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় গেল সোমবার তদন্ত হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাওছার হোসেন বলেন, তদন্ত করে প্রতিবেদন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁ উপ-পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁ উপ-পরিচালক সামছুল ওয়াদুদ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আংশিক হাতে পেয়েছি। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App