×

সারাদেশ

ধর্ষণ মামলায় ৯ বছরের শিশুর জামিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:৪৮ পিএম

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে পাঁচ বছরের শিশুকে কথিত ধর্ষণের মামলায় ৯ বছরের শিশু খোরশেদ আলমকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার শিশু আদালত তাকে জামিন দেন। পুলিশী তদন্ত পর্যন্ত ওই জামিন বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে শিশুটি যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রয়েছে।

এ্যাড. মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু গাইবান্ধার শিশু আদালতের বিচারক মুরাদ-এ-মওলা সোহেলের আদালতে শিশু খোরশেদ আলমের জামিনের আবেদন করেন। তিনি আদালতকে বলেন, ধর্ষন মামলার আসামি ৯ বছরের শিশু খোরশেদ পাঁচ বছরের শিশু মেয়েকে জোর করে ধর্ষণ করার উপযুক্ত বয়সে এখনো পৌঁছেনি। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এ ধরণের মামলার উদ্ভব ঘটেছে। তা ছাড়া শিশু আইনে আসামি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে।

আদালতের বিচারক জামিন আবেদন শুনানি শেষে শিশু খোরশেদ আলমকে জামিন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, জামিন আবেদনকারী এ্যাড. মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু। তিনি বলেন, জামিনের মাধ্যমে আসামি পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। সঠিক তদন্তে আসামি পক্ষ ন্যায় বিচার পাবে বলে আশা করি।

কথিত পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও গাইবান্ধার সচেতন মহলের ব্যানারে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা শহরের ১নং ট্রফিক মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অভিযুক্ত শিশুর বাবা খাদেমুল ইসলাম বলেন, পারিবারিকভাবে আমাদের হেনস্তা করতে পরিকল্পিতভাবে মামলাটি করা হয়েছে। আমার শিশু ছেলেকে নিজ বাড়ির উঠান থেকে তুলে নিয়ে যায় সাঘাটা থানা পুলিশ। কয়েক ঘন্টা থানায় আটকে রেখে ধর্ষণ মামলার কোর্টে চালান করে। আমার ছেলে একটি শিশু মেয়েকে জোর করে ধর্ষণ করার উপযুক্ত বয়সে এখনো পৌঁছায়নি। আমার ছেলের মুক্তির দাবি জানাই। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর কাচারীবাজার এলাকার নুরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া সাঘাটা থানায় একই গ্রামের খাদেমুল ইসলামের ছেলে ৯ বছর তিনমাস (জন্ম ৫ জুন ২০১১) বয়সের খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে তার পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর নুরুল ইসলামের পাঁচ বছর বয়সের শিশু কন্যাকে খোরশেদ আলম খেলার কথা বলে ডেকে নিয়ে যাওয়ার সময় একই গ্রামের শুভ(৭) ও নিহাত(৭) এর সাথে দেখা হয়। তারা সবাই মিলে কাচারি ঘরের দিকে যায়। এ সময় বৃষ্টি আসলে শুভ ও নিহাত কাচারী ঘরে ঢুকে পড়ে। অপরদিকে খোরশেদ আলম পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে কাচারি ঘরের পাশে গাটু শেকের নির্মানাধীন বাড়ির সিড়ির নিচে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে তার চিৎকারের পাঁচ বছরের শিশু কন্যার মা ও একই গ্রামের শুভ(৭) ও নিহাত(৭) ঘটনাস্থলে আসলে কথিত ধর্ষক ৯ বছর তিন মাস বয়সের খোরশেদ আলম পালিয়ে যায়। কথিত ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের কন্যা শিশুটিকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি বা ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কথা উল্লেখ করা হয়।

নুরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্র কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই কথিত ধর্ষক ৯ বছরের শিশু খোরশেদ আলমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সাঘাটা থানা পুলিশ। অভিযুক্ত শিশুটি স্থানীয় আলোকবর্তিকা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গ্রেপ্তারের পর ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শিশুটিকে গাইবান্ধা আমলি আদালতে পাঠানো হলে আদালতের বিচারক কাজী ফখরুল ইসলাম শিশুটিকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের মাধ্যমে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App