×

সারাদেশ

কমলনগরে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:০১ পিএম

কমলনগরে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

কমলনগরে দেখা দিয়েছে আমন ধানের চারার সংকট / ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে আমন ধানের চারার সংকট দেখা দিয়েছে। গত আগস্টে দুই দফা মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ার ও অতিবৃষ্টিতে আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং সদ্য রোপণকৃত আমনের চারা পচে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন চারার অভাবে কৃষকরা আমন রোপণ করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ফলে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমা-অমাবস্যার প্রভাবে ৪ থেকে ৬ আগস্ট প্রথম দফায় এবং ১৮ থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় মেঘনার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট বেড়ে যায়। এতে করে উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এ ছাড়া লঘুচাপ ও পূর্ণিমা-অমাবস্যার প্রভাবে অতিবর্ষণে অন্য এলাকাগুলোতেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে বেশির ভাগ ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় আমনের বীজতলা এবং সদ্য রোপণকৃত আমন ধানক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবাদ করা ৫০০ হেক্টর আমনের বীজতলার মধ্যে ৪০০ হেক্টর জোয়ার ও অতিবৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত আবাদ হয় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে পাঁচ হাজার ২০০ হেক্টর জমি জোয়ার ও অতিবৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন কৃষকরা ওইসব জমি ফের চাষের মাধ্যমে আবাদের প্রস্তুতি নেওয়ায় চারার চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংকট দেখা দেয়।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানি জমে আমনের চারা পচে যাওয়ায় এবং সদ্য রোপণকৃত আমন চারা নষ্ট হলে ফের চারা রোপণ করতে যাওয়ায় এখন চারার চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পাশ্ববর্তী রামগতি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সামান্য পরিমাণ চারা পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি। ফলে তারা জমি তৈরি করে আবাদের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও চারার অভাবে রোপণ করতে পারছেন না।

উপজেলার চরফলকন এলাকার কৃষক মো. হানিফ (৫০) জানান, তার দুই একর জমির রোপা আমন পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ফের আবাদের জন্য জমি তৈরি করলেও চারার অভাবে রোপণ করতে পারছেন না।

জাজিরা এলাকার কৃষক মো. আলী জানান, তার ৫৬ শতক জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে চারা সংকটে আবাদ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সামান্য পরিমাণ চারা পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি। একই কথা জানিয়েছেন, চরজগবন্ধু এলাকার কৃষক মো. ইকবাল, আবুল বাসার ও আলমগীর হোসেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইকতারুল ইসলাম বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ার ও অতিবৃষ্টিতে আমনের বীজতলা ও সদ্য রোপণকৃত চারা পচে যাওয়ায় এখন চারার সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের কারণে আবাদ করতে না পারা কৃষকরা যোগাযোগ করলে কৃষি বিভাগ অন্য উপজেলা থেকে চারার ব্যবস্থা করে দেবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App