×

সারাদেশ

হাসপাতাল-ক্লিনিক ঘিরে ফের সক্রিয় দালাল চক্র

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫৭ এএম

হাসপাতাল-ক্লিনিক ঘিরে ফের সক্রিয় দালাল চক্র

শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ফাইল ছবি)

বরিশালে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে রোগী ধরার দালাল চক্র। দেশে করোনা আঘাত হানার পরপরই বরিশালের বেশির ভাগ প্রাইভেট ক্লিনিকের চিকিৎসকরা রোগী দেখা বন্ধ করে দেন। কেউ-বা আবার নিজস্ব চেম্বারে ‘রোগী দেখা বন্ধ’ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন। এমন পরিস্থিতিতে দালালরাও পড়েন বেকায়দায়। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক চিকিৎসকই এখন আবার চেম্বার বা ক্লিনিকে রোগী দেখা শুরু করেছেন। ফলে দালালরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে বরিশালে। আর তাদের প্রতারণায় নিঃস্ব হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের অভিযানে একাধিকবার দালালরা আটক হলেও তাদের রোধ করা যাচ্ছে না। আইনের ফাঁক গলে জামিনে মুক্ত হয়ে ফের শুরু করে প্রতারণা। তবে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, দালালদের ধরতে তাদের নিয়মিত অভিযান চলবে। সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা নামসর্বস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগী টানতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দালাল নিয়োগ করা আছে। অন্তত অর্ধশতাধিক রোগীর দালাল রয়েছে নগরীতে। বিশেষ করে নগরীর গির্জা মহল্লা, আগরপুর রোড, কাকলির মোড়, বাটারগলি, বিবির পুকুর পাড়, অশ্বিনী কুমার হল চত্বর, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল সদর (জেনারেল) হাসপাতালের সামনে গেলেই চোখে পড়বে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য। এছাড়া রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড, নথুল্লাবাদ ও লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় এসব দালালের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়। আর ওই সব দালালের প্রধান টার্গেট গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সহজ-সরল মানুষ। যাদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে নির্ধারিত ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কথিত ডাক্তার দেখিয়ে কয়েক হাজার টাকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। আর নির্দিষ্ট ওই সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে শতকরা ৩০-৪০ শতাংশ কমিশন পায় একেকজন দালাল। যে কারণে ডায়াগনস্টিকের দালাল চক্র অনেকাংশে হয়ে ওঠে বেপরোয়া। তবে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় ধরা পড়ছে দালালরা। গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরীর বাটারগলিতে অভিযান চালিয়ে ৮ দালালকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরূপম মজুমদার প্রত্যেককে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এর আগে গত ৭ মার্চ বরিশাল নগরীর বাটারগলি ও রূপাতলী এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এছাড়া গত ১৫ ফেব্রæয়ারি রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডিবি পুলিশের অভিযানে ৫ দালালকে আটক করা হয়। পরে আটককৃতদের বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিমের আদালতে সোপর্দ করলে প্রত্যেককে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মঞ্জুরুল আলম বলেন, নির্দিষ্ট বা গোপন তথ্য পেলে সেখানে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালায়। এছাড়া দালাল চক্রকে ধরতে তাদের নিয়মিত নজরদারি রয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার বলেন, প্রতিদিনই কোনো কোনো বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। তবে তথ্য প্রাপ্তির উপর অভিযান নির্ভর করে। ইতোপূর্বে বরিশালে বিভিন্ন ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনস্বার্থে ও সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App