×

সারাদেশ

চরফ্যাশনে ঔষুধ প্রতিনিধিরাই চিকিৎসক!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:১৯ পিএম

চরফ্যাশনে ঔষুধ প্রতিনিধিরাই চিকিৎসক!

ফাইল ছবি

চরফ্যাশনে ঔষুধ প্রতিনিধিরাই চিকিৎসক!

অ্যান্টিবায়োটিক

হরদম বিক্রি উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক
ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ঔষধ ব্যবসায় নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। সদর হাসপাতাল রোডসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারের অলি গলিতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হাজার হাজার ঔষধের দোকান। যেসব দোকানে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বা রিপ্রেজেন্টেটিভদের পরামর্শেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঔষধ ব্যবসায় এখন আর বিশেষজ্ঞ কেমিস্টের প্রয়োজন হচ্ছে না। ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধিরারই পরামর্শ দিচ্ছেন কীভাবে কোন ঔষধ বিক্রি করতে হবে। তারা পল্লীর ব্যবসায়ীদের শিখিয়ে দিচ্ছেন, রোগী বা রোগীর স্বজনরা ঔষুধ কিনতে এলে তাদের কোন ঔষধ দিতে হবে। কোন ঔষধ কী কাজে লাগে সেটাও শিখিয়ে দিচ্ছেন। এতে সাধারণ রোগীরা কোনো চিকিৎসকের কাছে না গিয়েই পরামর্শ নিচ্ছেন ঔষধ প্রতিনিধিদের। তাদের দেয়া ঔষুধই সেবন করছেন। এ সুযোগ সামান্য অসুখে ফার্মেসির মালিকরা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করছেন ক্রেতাদের কাছে। এতে ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়লেও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোগীরা। এদিকে, মুনাফার লোভে চরফ্যাশনে অনুমোদন বা ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই হু হু করে বাড়ছে ফার্মাসির সংখ্যা। যেসব ফার্মেসির শতকরা ২০ ভাগই চলছে পৌরসভা থেকে নেয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে। ছোট বড় এসব ঔষধের দোকানেই প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট ছাড়া এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অবাধে বিক্রি হচ্ছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ ঔষধ, নকল ও নিম্নমানের বিভিন্ন প্রকারের ঔষধসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ভেজাল ঔষধ। এতে রোগ নিরাময়ের চেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত ও আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রোগী ও তার পরিবার-স্বজনরা। এসব খুচরা ব্যবসায়ীরা ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের তোয়াক্কা না করেই ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দিচ্ছেন। তাছাড়া ফার্মেসি কাউন্সিলের নিয়ম নীতিও মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। [caption id="attachment_242846" align="aligncenter" width="700"] অ্যান্টিবায়োটিক[/caption] এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সড়কে শত শত ঔষধের দোকানে রয়েছে অল্প পারিশ্রমিকের অদক্ষ কর্মচারিরা। আর এসব কর্মচারি দিয়েই বিক্রি হচ্ছে জটিল রোগের ঔষধ। আবার তাদের হাসপাতালের রোগী ধরার দালাল হিসেবেও ব্যবহার করছেন অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ীরা। বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে ওঠা ড্রাগ এন্ড কেমিস্ট সমিতির মাধ্যমে ৪০/৫০ ভাগ কমিশনে ক্রয় করা মানহীন ঔষধ জনসাধারণকে কিনতে বাধ্য করছে এমআরপি মূল্যে। এমন অভিযোগ রয়েছে ফার্মেসি এন্ড কেমিস্ট সমিতির বিরুদ্ধে। ঔষধ ক্রেতা পৌরসভার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, আমার পরিবারের অসুস্থ বাবা, মায়ের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকার ঔষধ লাগে। যা সিন্ডিকেটের জন্য এমআরপি মূল্যেই কিনতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও ক্রেতা জানান, ঔষধ ব্যবসায় এখন আর বিশেষজ্ঞ কেমিস্টের প্রয়োজন হয়না। ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধিরারই পরামর্শ দেন কীভাবে কোন ঔষধ বিক্রি করতে হয়। তারাই গ্রামের ব্যবসায়ীদের শিখিয়ে দেন রোগী এলে তাদের কোন ঔষধ দিতে হবে। এছাড়াও কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের ওপর কোম্পানির অর্পিত ঔষধ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ফার্মেসিতে বসে বসে নিম্নমানের ঔষধ বিক্রি করে দিচ্ছেন। উপজেলার সচেতন নাগরিকরা দ্রুত এসব নকল, মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি এবং ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ঔষধের দোকান বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে দালাল ও প্রতারক চক্রকে আটকের দাবি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App