মনপুরার ফাদার টিম

আগের সংবাদ

তারা গেটে দাঁড়িয়ে দেখছে রমনা পার্ক

পরের সংবাদ

বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন

সীমান্তে হত্যা বন্ধে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করুন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০ , ৭:৪৭ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০ , ৭:৪৭ অপরাহ্ণ

সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা ও মাদক পাচার বন্ধসহ বেশকিছু এজেন্ডা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের এই সম্মেলন শুরু হয়। আজ সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হবে। এবারো সম্মেলনে সীমান্তে হত্যার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রতি বছর সীমান্ত সম্মেলনে হত্যার বিষয়টি আলোচিত হলেও কার্যকর কোনো ভ‚মিকা দেখা যায় না। সীমান্তে সংযত আচরণে ভারতের প্রতিশ্রুতি সত্তে¡ও বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। যুদ্ধাবস্থা ছাড়া বন্ধুভাবাপন্ন দুই দেশের সীমান্তে এ রকম প্রাণহানি অস্বাভাবিক, অমানবিক। গত এক দশকের মধ্যে কেবল ২০১৮ সালে সীমান্তে হত্যার ঘটনা দুই অঙ্কের নিচে ধরে রাখা সম্ভব হয়েছিল। ওই বছর সরকারি হিসাবে তিনজন হত্যার শিকার হন। ওই সময়ে সীমান্তের পরিবেশও ছিল স্বস্তিদায়ক। অথচ পরের বছরই তা এক লাফে ১৩ গুণ বেড়ে যায়। চলতি বছরও হত্যার ঘটনা কম নয়। অথচ বিভিন্ন সময় ভারতীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার নীতিতে কাজ করা হবে। সীমান্ত হত্যা রোধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেয়া হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নেই। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি দেখানো হয় যে, বিএসএফ সদস্যরা সাধারণ নাগরিকের ওপর গুলি ছোড়ে না, অস্ত্রধারী চোরাকারবারিরা দল বেঁধে জোয়ানদের ওপর আক্রমণ করে, তখন তারা আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণে বাধ্য হয়। কিন্তু এ যুক্তি ধোপে টেকে না। যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাদের অনেকে চোরাচালানি তা ঠিক কিন্তু তারা সশস্ত্র আক্রমণকারী, তার প্রমাণ নেই। আর সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবার নিয়ে সীমান্তের উভয় পাড়েই রয়েছে অসাধু বাণিজ্যের বিস্তার। কিন্তু প্রতিটি ঘটনাতেই নিরস্ত্র বাংলাদেশিরা শুধু নিহত হচ্ছেন। দুদেশের মধ্যে সমঝোতা এবং এ সম্পর্কিত চুক্তি অনুযায়ী যদি কোনো দেশের নাগরিক অননুমোদিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, তবে তা অনুপ্রবেশ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কথা এবং সেই অনুযায়ী ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের নিয়ম। গুলি করে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করা কেন? যেখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, মানুষ পাচার এবং চোরাচালান বন্ধে যৌথ উদ্যোগ ও দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে, সেখানে সীমান্তে গুলি-হত্যা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। সীমান্তে যে কোনো অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে অপরাধীদের বিদ্যমান আইনে বিচার হবে এবং এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। এবারের সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের উচিত সীমান্তে হত্যা বন্ধের ব্যাপারে ভারতের কাছে কঠোর ও দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করা। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গটি গুরুত্ব দিয়ে উত্থাপন করতে হবে। সীমান্তে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন এবং অবশ্যই এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে নীতিগত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা আর সীমান্তে হত্যার বর্বরতা দেখতে চাই না।

এসআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়