×

জাতীয়

দেশে চলছে ‘অনলাইন ক্যাসিনো’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২৫ পিএম

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান-র‌্যাবের মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেছেন, দেশে বিদেশি বিভিন্ন ডোমেইন থেকে ‘অনলাইন ক্যাসিনো’ চলছে। তবে সেগুলো একদমই ছোট পরিসরে। তারা এখনো শক্তভাবে অবস্থান করতে পারেনি। এসব অনলাইন ক্যাসিনোর ব্যাপারে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ) র‌্যাবের এ মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। তার একবছর পূর্তিতে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান তিনি।

অনলাইন ক্যাসিনোতে কারা সক্রিয় জানতে চাইলে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘দেশে অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনোর অভিযান মূলত র‌্যাবই প্রথম করেছে। এতে মূল আসামি সেলিম প্রধান বর্তমানে কারাগারে আছেন। বর্তমান সময়ে ছোটখাটো অনলাইনভিত্তিক যেসব অভিযোগ আমরা পাচ্ছি, তা বড়ধরণের সংগঠিত নই। আমরা দেখছি বিভিন্ন বিদেশি ডোমেইন থেকে এসব অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালিত হচ্ছে। এরকম বেশকিছু বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। এবিষয়ে র‌্যাব কাজ করছে।’

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গতবছর ক্যাসিনোবিরোধী ১১টি অভিযান করে র‌্যাব। এরমধ্যে ঢাকা শহরে আটটি এবং চট্টগ্রামে তিনটি। এসব অভিযানে আটক করা হয় ২০১ জনকে। এদের বেশির ভাগ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজাপ্রদান করা হয়। তাছাড়া অবৈধ অস্ত্র, মাদক ছাড়াও সর্বমোট প্রায় ২৭২ কোটি টাকার এফডিআর এবং নগদ টাকা উদ্ধার হয়।

‘পরবর্তীতে আইননানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযানে ৩২টি নিয়মিত মামলা করে র‌্যাব। পরবর্তীতে আদালত ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৪টি মামলা তদন্তের অনুমতি পায় র‌্যাব। এরমধ্যেই ১৩টি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বাকি একটি মামলার কার্যক্রম আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।’

মতিঝিলের ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। পরদিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেপ্তার হন কৃষকলীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ। দুদিন পর নিকেতন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঠিকাদার জি এম শামীমকে। তিনি যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।

এরপর ১১ অক্টোবর ভোরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বরের কমিশনার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বান্ধবীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন। এসময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও নগদ দুই লাখ টাকা উদ্ধার হয়।

এছাড়া সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বরের কমিশনার তারেকুজ্জামান রাজীব গ্রেপ্তার হয় র্যাবের হাতে। তার কাছ থেকে বিদেশি মদ ছাড়াও একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়। এরপরই গ্রেপ্তার হন আরেক কমিশনার ময়নুল হক মনজু। অভিযান শুরুর পর অনেকে গা ঢাকা দিয়ে বিদেশে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা কোন ধরণের অভিযান করতে পারি আর কোনটা পারি না সেটা সুর্নিদিষ্ট আছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান একটি বিশেষ অভিযান ছিল। যা সরকার র‌্যাবকে দিয়ে পরিচালিত করে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর স্থিমিত বা ধীরগতি হয়েছে অনেকে এমনটি মনে করতে পারেন।’

লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু আমাদের ক্যাসিনোবিরোধী বা ফৌজদারি অপরাধের অপারেশন অব্যাহৃত আছে। র‌্যাব অনলাইন ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান সম্প্রতি সময়েও পরিচালিত করেছে। অর্থাৎ, গতবছর থেকে যে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছিল তা এখনো অব্যাহৃত আছে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে যদি সুর্নিদিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকে র‌্যাব সেই অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে জানান আশিক বিল্লাহ।

ক্যাসিনোর মূলহোতা এবং প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কী ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘মূলহোতা বা প্রশ্রয়দাতাদের ব্যাপারে গণমাধ্যমে অনেক তথ্য এসেছে। পরিস্কার করে বলতে চাই, ফৌজদারি অপরাধভিত্তিক যে অপরাধ ক্যাসিনো অভিযানে হয়েছে, র‌্যাব তা তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে। বিচারিক কার্যক্রম শুরুর পর আদালতের নির্দেশক্রমে প্রশ্রয়দাতাদের বিষয়ে কোনও আদেশ থাকলে র‌্যাব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App