খাদ্য বিভাগে তোলপাড়

কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদামে প্রোগ্রামের পাঠানো ১২০ টন নিম্নমানের চাল খাবার অযোগ্য, পচা ও ডাস্টযুক্ত হওয়ায় তা সংশ্লিষ্ট গুদাম কর্মকর্তা রিসিভ না করে ফেরত পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় রংপুর খাদ্য বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রংপুর খাদ্য বিভাগ গত ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৬(১৩)নং স্মারক মোতাবেক পঞ্চগড় জেলার ফকিরগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে ১৫০ টন আমন চাল কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদামে পাঠানোর জন্য সরকারি আদেশ জারি করে। প্রোগ্রাম অনুযায়ী গত মঙ্গলবার ১২০ টন চাল নিয়ে ৪টি ট্রাক কুড়িগ্রাম সদর খাদ্যগুদামে পৌঁছে। সংশ্লিষ্ট খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা ট্রাকের চাল গুদামে রিসিভ করার সময় অধিকাংশ বস্তায় খাবার অযোগ্য নিম্নমানের পচা ডাস্টযুক্ত চাল দেখতে পান। এরপর গুদামে চাল রিসিভ বন্ধ করে বিষয়টি তিনি জেলা খাদ্য কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন বলে সাংবাদিকদের জানান। খবর পেয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন এবং অধিকাংশ বস্তায় পচা নিম্নমানের ডাস্টযুক্ত চাল প্রত্যক্ষ করেন। এরপরই ওই সব নিম্নমানের খাবার অযোগ্য চাল ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে পঞ্চগড় থেকে কুড়িগ্রামে পাঠানো চাল পচা খাবার অযোগ্য হওয়ার খবর জানাজানি হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি ক্রয় অভিযানের সময়, কতিপয় গুদাম কর্মকর্তা নতুন চাল ক্রয় না করে বিভিন্ন প্রকল্পের ডিও ক্রয়ের মাধ্যমে চাল এডজাস্ট করে বাণিজ্য করায় কয়েক বছরের পুরনো এসব চাল খাবার অযোগ্য হয়। এছাড়া গুদাম কর্মকর্তারা অতিমাত্রায় ঘুষ নিয়ে নিম্নমানের চাল কিনে থাকেন বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগে ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে। কুড়িগ্রাম সরকারি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, ফকিরগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে প্রেরিত চাল একদম খাবার অযোগ্য হওয়ায় তা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। খাবার অযোগ্য এই চাল পরিদর্শনের জন্য জেলা খাদ্য কর্মকর্তাসহ খাদ্য বিভাগের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তদন্তে এসে নিম্নমানের চাল দেখতে পায়।

অন্যদিকে সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে খাবার অযোগ্য পোকাযুক্ত ডাস্ট চাল বের হওয়ার খবর জানাজানি হলে রংপুর খাদ্য বিভাগের টনক নড়ে । এ ব্যাপারে ফকিরগঞ্জ খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেসমিন আকতার জানান, চাল ফেরতের ব্যাপারে জেনেছি, ফেরত আসার পর টেকনিক্যাল তদন্তের আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।