×

মুক্তচিন্তা

অবৈধপথে মোবাইল হ্যান্ডসেট আসা বন্ধ হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২০ পিএম

অবৈধপথে মোবাইল হ্যান্ডসেট আসা বন্ধ হোক
অবৈধপথে মোবাইল হ্যান্ডসেট আসা বন্ধ হোক

মোবাইল ফোন

দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। সেটা হোক স্মার্ট বা ফিচার ফোন। মানুষ মোবাইল দিয়ে অসংখ্য কাজ করতে পারছে। আর করোনাকালে মোবাইলের ব্যবহার আরো বেড়েছে। বাচ্চাদের পড়াশোনা, অনলাইন ব্যবসা, অফিসের কাজ, ইউটিউব দেখে বিভিন্ন জিনিস শেখা ইত্যাদি অনেক কিছু মোবাইলে হচ্ছে। মোবাইলের মাধ্যমে টাকা লেনদেন এখন বেশ জনপ্রিয়। মোবাইলের এই বহুমুখী ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা হলো চোরাইপথে আমদানি করা হ্যান্ডসেট। এগুলো সবার জন্য ক্ষতিকর। চোরাইপথে আসায় সরকার শুল্ক পায় না। যিনি এই সেট কিনেন তিনি বিক্রয়োত্তর সেবা থেকে বঞ্চিত হন।

অন্যদিকে ফেয়ার ইলেকট্রনিকসসহ যেসব প্রতিষ্ঠান মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন করে সেসব প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশে স্যামসাং, ওয়ালটন, সিম্ফনি, আইটেল ও ফাইভ স্টার, উই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন করে। আশার কথা, কিছুদিনের মধ্যে দেশ মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ভাবা যায়, স্যামসাং ফ্যাগশিপ মডেলের সেট বানাচ্ছে এ দেশে স্থাপিত কারখানায়। মেইড ইন চায়না, কোরিয়া, ভিয়েতনাম দেখার দিন শেষ হয়ে আসছে। মোবাইলের সব কিছুই বাংলাদেশে উৎপাদিত হবে। ব্যাটারি, চিপ পর্যন্ত। সে লক্ষ্যেই এ সেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে। একাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ১০টি ব্র্যান্ড দেশে মোবাইল ফোন সংযোজন করছে, প্রক্রিয়ায় আছে আরো কয়েকটি।

দেশে হ্যান্ডসেট উৎপাদন বাড়লে সরকার, ব্যবহারকারী সবাই লাভবান হবে। প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এক সময় বড় আকারের রপ্তানির কথাও ভাবা যাবে।

জানা যায়, বর্তমানে দেশে বছরে ৩ কোটি ১০ লাখ হ্যান্ডসেটের (ফিচার ও স্মার্ট) চাহিদা আছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে স্মার্টফোনের বাজার ৭ হাজার কোটি টাকার। ভলিউমে বা সংখ্যায় ফিচার ফোনের বাজার ৭০ শতাংশ এবং স্মার্টফোন প্রায় ৩০ শতাংশ। কিন্তু মূল্যমান অনুযায়ী মোট বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ স্মার্টফোনের দখলে। গত বছর স্মার্টফোনে ১২ শতাংশ, ফিচার ফোনে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছর যত স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে তার ৬২ শতাংশ উৎপাদিত হয়েছে বাংলাদেশে স্থাপিত কোনো না কোনো কারখানা থেকে। স্যামসাং মোবাইল সেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব জানান, ১০ হাজার টাকার মধ্যে একটি ফোরজি স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে। নানা দিক থেকে অন্য কোম্পানিগুলোর তুলনায় এগিয়ে থাকা স্যামসাং তাদের মোট চাহিদার ৯৭ শতাংশ স্থানীয় কারখানায় উৎপাদন করছে। স্যামসাংয়ের স্থানীয় প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফেয়ার গ্রুপের সিএমও মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন জানান, স্থানীয় উৎপাদকরা ইতোমধ্যে চমৎকার কাজ করেছে যেটি সামনের দিনের পথচলাকে সহজ করবে।

ব্যাকোয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা, নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা, পর্যায়ক্রমে আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো, চোরাইপথে অবৈধ ফোন বাজারে অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবি দেশের শীর্ষ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। পাশাপাশি চোরাইপথে হ্যান্ডসেট আসা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। এটাই সবার দাবি। দেশে হ্যান্ডসেট উৎপাদন বাড়লে সরকার, ব্যবহারকারী সবাই লাভবান হবে। প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এক সময় বড় আকারের রপ্তানির কথাও ভাবা যাবে।

লেখক : একটি মোবাইল সংযোজন ও বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

[email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App