×

মুক্তচিন্তা

চীনের ভয়ে ‘পালাও’ মার্কিন সামরিক ঘাঁটি চায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২৪ পিএম

পালাও প্রেসিডেন্ট টমি রেমেনগেসাও চীনের সঙ্গে সমঝোতায় নারাজ। সমঝোতার মানে তাইওয়ানকে দেয়া স্বীকৃতি প্রত্যাহার এবং চীনকে মেনে নেয়া, একচীন নীতিকে সমর্থন জানানো। আর্থিক অচলাবস্থা পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে চটিয়ে তুলেছে, হতাশাগ্রস্তও করেছে। তারা মনে করেন, যাদের সঙ্গে থাকলে বেশি লাভ এবং বেশি মানুষের লাভ সেটাই করতে হবে। অর্থাৎ তাদের চাওয়া তাইওয়ানের কাছ থেকে সরে আসা। ওদিকে সেইন্ট লুসিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার দেশের পক্ষে চীন ও তাইওয়ানের মাঝখানে পেন্ডুলার হয়ে ঝুলে থাকা সম্ভব নয়।

পালাও নামের একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ যে পৃথিবীতে আছে আমরা অনেকেই জানি না, নামও শুনিনি কেউ কেউ।

পালাও একটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র। বাংলাদেশের পতাকা যেমন গাঢ় সবুজের ভেতর লাল পূর্ণ ভরাট বৃত্ত, পালাওর পতাকা একই ডিজাইনের, নীলের মাঝে হলুদ বৃত্ত, পূর্ণ ভরাট। ১৭৭ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে এই দেশ, ২০১৮ সালের অনুমিত হিসাবে লোকসংখ্যা ১৮ হাজার, মাথাপিছু আয় ১৯ হাজার ডলার ছাড়িয়ে।

পালাও পশ্চিম প্রশান্ত সাগরে, একটি নয়, ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৪০টি দ্বীপ নিয়ে ৩ হাজার বছরের পুরনো এই দেশটির আদিবাসী মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু নাবিক, তারাই প্রথম বসতি স্থাপন করেন। ষোড়শ শতকে স্পেনিশ অভিযাত্রীরা দেশটি খুঁজে বের করেন এবং ১৫৭৪ সালে তারা অঞ্চলটি স্পেনিশ ইস্ট ইন্ডিজে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। ১৮৯৮-এর স্পেনিশ-আমেরিকান যুদ্ধে জার্মান সমর্থনের বিনিময়ে জার্মান-স্পেন চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পরের বছর ১৮৯৯ সালে জার্মানির কাছে বিক্রি করে দেয়; আর তা জার্মান নিউ গিনির অংশ হিসেবে শাসিত হতে থাকে। প্রথম মহাযুদ্ধের পর সাউথ সি ম্যান্ডেট পালাওর অধিকার জাপানকে দিয়ে দেয়, কিন্তু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় পালাও পরিণত হয় রক্তাক্ত নৌ-রণাঙ্গনে- একদিকে যুক্তরাষ্ট্র অন্যদিকে জাপান।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর প্রশান্ত মহাসাগরের একটি ট্রাস্ট টেরিটোরিতে পরিণত হয় পালাও। আর ট্রাস্টি হয় পরাক্রমী যুক্তরাষ্ট্র। মাইক্রোনেশিয়ার সঙ্গে ফেডারেলভুক্ত রাষ্ট্র হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পালাও ১৯৯৪ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবিভর্‚ত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টাকা-পয়সা, সামাজিক সেবা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পুরনো সম্পর্কটি রয়েই যায়।

এবার চীনের কথা ঘুমন্ত চীন জেগে উঠেছে। তাৎক্ষণিকভাবে চীনের বন্ধুত্ব অর্জন সম্ভব নয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে চীনের মহাবৈরী হওয়ার একটিই পথ- তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া। অমনি চীনের দাঁত ঘষটানি শুরু হয়ে যাবে। এমনকি সত্তরের দশকের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে প্রদত্ত স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে চীনকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন ও আস্থা ব্যক্ত করেছে।

তাইওয়ান প্রসঙ্গ এমনিতেই আনিনি, ২০০৪ সালে ঢাকা তাইওয়ানের ট্রেড অফিস খুলে যে অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডটি করেছিল তার খেসারত দিতে হয়েছে এবং চীনের মান ভাঙাতে যথেষ্ট সময় লেগেছে। সেই তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়া একটি দেশের নাম পালাও। চীনের চাপে পড়েই গত বছর দুটি দেশ তাইওয়ানকে দেয়া রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে- এটাও গ্রামবাংলার মোড়ল রাজত্ব বা হুকুমাতের মতোই- স্ত্রীকে ভালোবাসলেও মোড়লের কথায় তালাক দিতে হবে নতুবা সামনে সমূহ বিপদ।

জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে তাইওয়ানকে স্বীকৃতিদাতা দেশের সংখ্যা মাত্র ১৫টি। গত বছর যে দুটি দেশ স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে সেগুলো হলো সলোমন আইল্যান্ড এবং কিরিবাতি। এখনো স্বীকৃতি বহাল রাখা দেশগুলো হচ্ছে : বেলিজে, গুয়েতেমালা, এন সালভাদর, হেইতি, হলি সি, হন্ডুরাস, মার্শাল আইল্যান্ড, সেইন্ট লুসিয়া, এসওয়াতিনি (সাবেক সোয়াজিল্যান্ড), নারাও, নিকারাগুয়া, প্যারগুয়ে, সেইন্ট কিটস এন্ড নেভিস, সেইন্ট ভিনসেন্ট, গ্র্যানেডাইন ও তাভালু। রিপাবলিক অব চায়না (তাইওয়ান) এবং পিপলস রিপাবলিক অব চায়নাকে (চীন) স্বীকৃতি দেয়া দেশের একটি হিসাব চীনের জেগে ওঠার প্রমাণ দেবে।

১৯৬৭ সালে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়া দেশের সংখ্যা ছিল ৭১ আর চীনকে স্বীকৃতিদাতার সংখ্যা ৪৮। ১৯৭১ সালে চীন জাতিসংঘভুক্ত হলো, রিপাবলিক অব চায়নার জায়গায় প্রতিস্থাপিত হলো পিপলস রিপাবলিক অব চায়না । ১৯৭৩ সালে তাইওয়ানের স্বীকৃতিদাতার সংখ্যা কমে ৩১-এ পৌঁছাল আর চীনেরটা বেড়ে দাঁড়াল ৮৯। ১৯৯০ সালে তাইওয়ানের আরো কমে গেল- ২৮ আর চীন বেড়ে পৌঁছল ১৩৯-এ। পরের বছরগুলোতে এই ধারাই অব্যাহত থাকল। ২০২০ সালে এসে চীন পেল ১৮০টি রাষ্ট্র আর তাইওয়ান ১৫, এর মধ্যে একটি- হলি সি এখনো জাতিসংঘের সদস্যপদ পায়নি, কেবল পর্যবেক্ষক।

নিকারাগুয়াও তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাই যাই করছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন দুদিন আগে হোক পরে হোক এল সালভাদরও নাম কাটিয়ে চীনকে স্বীকৃতি দেবে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও এশিয়ার কোনো দেশ তাইওয়ানের ক‚টনৈতিক সূত্রে সম্পর্কিত নয়। চীনের হুমকি আমেরিকার সামরিক গর্জনের মতো নয়। চীনেরটা নীরব এবং কৌশলগত। কৌশলটি অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়ার পথ খুঁজে বের করা।

পালাও বাংলাদেশের তুলনায় যথেষ্ট ধনী অন্তত মাথাপিছু আয়ের হিসাবে। সে দেশের বার্ষিক জিডিপির ৪২.৩ ভাগ আসে পর্যটন খাত থেকে। কিন্তু স্থানীয়দের ভাষায় ‘চায়না ব্যান’ পর্যটন খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখানে আগত পর্যটকদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যক চীন থেকে আসতেন একটি অংশ চাইনিজ, বাদবাকি অন্য দেশি। এখন চীন থেকে ট্যুর অপারেটররা পালাওতে পর্যটক আনতে পারছেন না- চীন থেকে যারা সফর করবেন পালাও তাদের জন্য বেআইনি গন্তব্য। যে দেশের সঙ্গে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক নেই তাদের সিদ্ধান্ত সেখানে আর চীনের উড়োজাহাজ যাবে না। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনাকালের লকডাউন। চীন থেকে ইন্টারনেটে পালাও অনুসন্ধানও ডি-অ্যাকটিভেটেড করে রাখা হয়েছে।

পালাও প্রেসিডেন্ট টমি রেমেনগেসাও চীনের সঙ্গে সমঝোতায় নারাজ। সমঝোতার মানে তাইওয়ানকে দেয়া স্বীকৃতি প্রত্যাহার এবং চীনকে মেনে নেয়া, একচীন নীতিকে সমর্থন জানানো। আর্থিক অচলাবস্থা পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে চটিয়ে তুলেছে, হতাশাগ্রস্তও করেছে। তারা মনে করেন, যাদের সঙ্গে থাকলে বেশি লাভ এবং বেশি মানুষের লাভ সেটাই করতে হবে। অর্থাৎ তাদের চাওয়া তাইওয়ানের কাছ থেকে সরে আসা। ওদিকে সেইন্ট লুসিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার দেশের পক্ষে চীন ও তাইওয়ানের মাঝখানে পেন্ডুলাম হয়ে ঝুলে থাকা সম্ভব নয়। একই অবস্থা ছিল গাম্বিয়া ও লাইবেরিয়ার। নিকারাগুয়াও এখন সে ফাঁদে।

শেষ পর্যন্ত টমি রেমেনগেসাও পালাওর জন্য ভিন্ন পথ ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার প্রায় অর্ধেক পৃথিবী ঘুরে পালাও এসেছেন। এর আগে কোনো পেন্টাগন প্রধান এখানে আসেননি। পালাও এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই এই সফর কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। পালাওকে হুমড়ি খেয়ে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার রুখতে হবে।

এদিকে প্রতিবেশী দেশের লাদাখ সীমান্তে রণবাদ্য বেজেই চলেছে, ভারত দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার যত হুঁশিয়ারিই দিক না কেন নিজেদের দাঁত ভেঙে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ভারতই দেবে বলে এমনকি ভারতের বিরোধীদলীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন। ১৯৬২-এর চীনা আঘাতের ঘা এখনো শুকোয়নি বলে তাদের ধারণা- কিন্তু চীনের এই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার কী পরিণতি হতে পারে তাও অনুমান করা যাচ্ছে না। এতদিন চুপচাপ থেকে ঘুমন্ত দানব জেগে উঠলে কী করতে পারে তা বলা সত্যিই মুশকিল। তবে চীন ইতোমধ্যে খোলা ফ্রন্টগুলো বন্ধ না করেই এত বেশি সংখ্যক ফ্রন্ট খুলছে যে তা হয়তো সামলে উঠতে পারবে না, জগাখিঁচুড়ি পাকিয়ে নিজের অবস্থা নাজুক করে তুলবে, এমনো মনে করা হচ্ছে। তবে যে বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার করোনা ভাইরাসের সূচনা চীনে হলেও উহান লকডাউন সিনড্রোম চীন কাটিয়ে উঠে নিজ দেশের অর্থনীতিই অনেকটা গতিময় করে তুলেছে। সে তুলনায় চীনের বৈরী দেশগুলোর অধিকাংশ এখনো ধুঁকছে। কতদিনে পূর্ণ আর্থিক পুনরুদ্ধার ঘটবে তাও অজ্ঞাত। সামরিকভাবে ভারত কিংবা চীনের নিকটবর্তী বা অদূরবর্তী বৈরী দেশ দেশটিকে শায়েস্তা করে খোঁয়াড়ে ঢুকিয়ে দিয়ে আসবে বলে যাদের প্রত্যাশা, তাদের হাপিত্যেশই করতে হবে। অধিকন্তু চীনের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ চাপ অর্থনৈতিক পঙ্গুত্বের দিকেও ঠেলে দিতে পারে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরোতে যদি চীনের কাছ থেকেই অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনতে হয় সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক পরিহাস। সে ক্ষেত্রে বিকল্প দুটি- চীন আমার ভাই বলে নতুন করে গলাগলি শুরু করা অথবা অর্থনীতিতে চীননির্ভরতা শূন্যে নামিয়ে নিয়ে আসা। আমি ভিন্ন একটি রচনায় বলেছি আমেরিকাকে নিয়ে চীনকে মার খাওয়ানোর কথা যারা ভাবছেন তা হওয়ার নয়। কারণ আমেরিকার কংগ্রেসম্যানদের অনেকেই চীনের সঙ্গে কোনো না কোনো আর্থিক সম্পর্কে জড়িয়ে আছেন। তারা চীন থেকে লাভবান হতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন, সুতরাং অন্য কোনো দেশ চাইলেও তারা নিজ দেশকে বড়জোর হুঙ্কার দিতে দেবেন কিন্তু যুদ্ধে জড়াতে দেবেন না।

মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের সফরের সময় তার হাতে যে গোপনীয় রাষ্ট্রীয় চিঠিটি ধরিয়ে দেয়া হয়েছে তা আর গোপন নেই। পালাও এখন একান্তভাবে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে এসে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করুক এবং চীনের ক্রমবর্ধমান অশুভ প্রভাব থেকে তাদের দেশ ও অর্থনীতিকে রক্ষা করুক।

চিঠিতে বলা হয়েছে- আসুন, যৌথভাবে দুই দেশের ব্যবহার্য স্থাপনা নির্মাণ করুন। যখন প্রয়োজন এখানে এসে পালাওর স্বার্থ বিনষ্টকর কিছু না করে বৈরী শক্তি দমন করুন। স্থাপনার মধ্যে সামরিক উড্ডয়ন ক্ষেত্রও রয়েছে। এই কর্মযজ্ঞ শুরু হলে এমনিতেই পালাওর অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারিত হবে, চীনের বৈরিতায় যতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে অধিকতর লাভজনক অবস্থানে চলে যেতে পারবে। পালাও যে সমুদ্রসীমার বৈধ অধিকারী তার আয়তন স্পেনের চেয়ে কম নয়। বিপুল সবুজ সমুদ্রসম্পদ অনুত্তোলিত অবস্থায় রয়েছে। ওয়াশিংটনের সম্মতি পেলে পেন্টাগনের এই ঘাঁটিটি হয়ে উঠবে প্রশান্ত মহাসাগরের ভেতর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ফলে পালাও নির্বিবাদে সমুদ্রসম্পদের পুরোটাই অর্থনীতিতে যোগ করতে পারবে।

এটা খাল কেটে কুমির ডেকে আনা হবে কিনা এ প্রশ্নে বুদ্ধিজীবীরা দুশ্চিন্তাগ্রস্তই থাকবেন, ক্ষমতাসীনরা এভাবে পালাওতে অর্থযোগ ঘটাতে পারলে টিকে যাবে। তবে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা হয়তো ঘুচবে না। চীনের নীরব ও কৌশলগত অবরোধের আগে পর্যটকের ভিড় পালাওর বাজারে অর্থ সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়, মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়, অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় বাইরে চলে যায়, করোনা ভাইরাস বরং তাদের জন্য আশীর্বাদই হয়েছে। মার্কিন বিনিয়োগ ও মার্কিন বহরের আনাগোনা বেড়ে গেলে বাজারের একই অবস্থা হবে, ভুগতে থাকবে সাধারণ মানুষকে।

চীনের ‘পালাও-নীতি’ থেকে এটা স্পষ্ট : প্রথমত, হুঙ্কার দিয়ে চীন যুদ্ধে নামবে না, চীনের যুদ্ধটা হবে মূলত অর্থনৈতিক অসহযোগিতার। এভাবেই হাঁটুতে নামিয়ে আনবে।

দ্বিতীয়ত, তাইওয়ান কার্ডটি সঠিকভাবে খেলতে না পারলে বাংলাদেশের মতো দেশকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে।

তৃতীয়ত, একবার চীনের বৈরিতা অর্জন করে ফেলতে পারলে সে দেশের সহায়তায় এসে অন্য কোনো দেশও চীন-বৈরী হিসেবে চিহ্নিত হতে চাইবে না।

চতুর্থত, চীন ও ভারতের দ্ব›দ্ব মেটাতে বাংলাদেশের ভূমিকা অবান্তর। স্মরণ রাখতে হবে রোহিঙ্গা সংকটে কেউই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়নি। বিশেষণ দিয়ে বন্ধুত্বকে ভারাক্রান্ত কিংবা চিহ্নিত করা বাগাড়ম্বর মাত্র। ও পথে না হাঁটাই মঙ্গলজনক।

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App