জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পৌরসভায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী ও সেবাবঞ্চিত নাগরিকরা। রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপরে পৌর ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বিক্ষোভ শেষে মেয়র, পৌর সচিব ও হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন ভাস্কর্য ভাঙচুর ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক দু’টি মামলায় ১৫ মে থেকে পলাতক রয়েছেন। এতে কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের বেতন-ভাতা মাসের পর মাস বকেয়া পড়ে আছে। কাউন্সিলরদের সম্মানী প্রায় ১৭-১৮ মাস ধরে বন্ধ। এতে পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ হয়ে পড়েছে। মেয়র পলাতক থাকায় কর্তৃপক্ষ কাউকে মেয়রের দায়িত্ব না দেয়ায় পৌর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা বেতন না পেয়ে রবিবার পৌরসভা ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে মেয়র, সচিব ও হিসাবরক্ষকের কক্ষে তালা দেয়।

পরিচ্ছন্নকর্মী খোকন, সাজন, সুমনসহ আরো অনেকেই বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। আমাদের কাজ অন্য কেউ তো করবে না, তাহলে আমাদের বেতন কেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের সবারই তিন মাসের বেতন বকেয়া। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত তারা কোনো কাজে হাত দেবে না। পৌরসভার তালাও খুলে দেবে না ।

৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সালমা বেগম বলেন, সাতদিন ধরে ঘুরছি, মেয়র না থাকায় একটা নাগরিক সনদ নিতে পারছি না।

[caption id="attachment_240981" align="aligncenter" width="700"]
মেয়র, পৌর সচিব ও হিসাব রক্ষকের কক্ষে ঝুলছে তালা। ছবি: প্রতিনিধি[/caption]

বলারদিয়ার গ্রামের পারভীন বেগম বলেন, ছেলের চাকরির জন্য জন্ম সনদ নিতে কয়েকদিন আসলাম। কিন্তু মেয়রের স্বাক্ষরের অভাবে এখনো তা নিতে পারিনি। জানি না, আমার বেকার ছেলের ভাগ্যে কী আছে।

ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম অভিযোগ করে বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন। এর জন্য ১৫ দিন যাবত পৌরসভায় আসছি। মেয়র নেই, সব কাজ বন্ধ তাই নিতে পারছি না।

এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী বলেন, মেয়র মামলার কারণে পলাতক রয়েছে। তাই তিনি পৌর কার্যালয়ে আসেন না। কর্তৃপক্ষ কাগজপত্রে স্বাক্ষর দেয়ার মতো কাউকে মেয়রের দায়িত্ব দেয়নি। নাগরিক সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন পৌর জনগণ। অপরদিকে পরিচ্ছন্নকর্মীরা বেতনের দাবিতে পৌরসভা কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেয়ায় পৌরসভায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।