×

জাতীয়

ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ‘খালেদার মুক্তি’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০২:৪৪ এএম

সংবাদ বিশ্লেষণ শ্যামল দত্ত

আরো ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার এই সাজা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। আইন মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে আরো ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিতের পক্ষে মতামত দিয়েছে। শর্ত হচ্ছে- তাকে দেশে থাকতে হবে এবং বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। শামীম ইস্কান্দারের আবেদনে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি প্রার্থনা করা হয়েছিল। সেই অনুমতি মেলেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন শামীম ইস্কান্দারের করা আবেদন ও আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাবেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার ১ উপধারা অনুযায়ী এই সাজা স্থগিতের আবেদন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই আরো ৬ মাস অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবার মুক্ত জীবন ভোগ করবেন বেগম খালেদা জিয়া। ধারণা করা যায়,  প্রধানমন্ত্রী এর আগে অনুমোদন দিয়েছেন, ফলে এবারো অনুমোদন দেবেন। এমনকি এটাও ধারণা করা যায়, যদি শর্ত মেনে চলেন তাহলে সাজাপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়া আগামী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পরেও আবেদন করলে এই সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ ইতোমধ্যে দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বেগম জিয়ার আগামী মুক্ত জীবন নির্ভর করছে সরকারের কাছে করা আবেদন এবং যেসব শর্ত দেয়া হচ্ছে তা মেনে চলা ও এ বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক অনুমোদনের ওপর। যদিও বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩৪টি মামলা বিচারাধীন আছে। সেগুলোর ভবিষ্যৎ এখনো অজানা।

আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রবাহে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার জেলে যেতে হতে পারে দুটি কারণে। এই কারণ দুটি হচ্ছে- ১. যদি তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাজা স্থগিত করার জন্য আর কোনো আবেদন করা না হয় (সেটা প্রায় অসম্ভব), অন্যদিকে সরকার যদি পরিবারের করা আবেদনে ইতিবাচক অনুমোদন না দেয়। (এটাও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হবে না বলেই মনে হচ্ছে)। ৭৫ বছর বয়সি রাজনীতিবিদ, নানা রোগে আক্রান্ত, ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী একসময়ের আপসহীন নেত্রীর ইমেজ খুইয়ে কারাগার থেকে মুক্ত খালেদা জিয়াকে আগামীতে এই অনুকম্পা গ্রহণকারী রাজনৈতিক লিগ্যাসিই বহন করতে হবে, এটা সহজেই অনুমেয়। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের জ্বল জ্বলে চেহারার ওপর কয়েক পোচ কালি লাগিয়ে দিয়ে সাজা স্থগিতের জন্য পরিবারের করা আবেদনেই মুক্তি পেলেন খালেদা জিয়া। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া যে দলকে তিনি নিজে তিন-তিনবার ক্ষমতায় এনেছেন তার নিজের কারিশমায়, যে দলের নেতাদের মেয়াদের পর মেয়াদে মন্ত্রী বানিয়েছেন, বসিয়েছেন দলের শীর্ষ পদে, তাদের সীমাহীন ব্যর্থতার কারণে তাদের অগোচরেই সম্পন্ন হওয়া এক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেতে হলো বেগম খালেদা জিয়াকে। নেতৃত্বের ওপর আস্থাহীনতায় পরিবারকেই দায়িত্ব নিতে হলো এই কাজে। যে নেতারা বলেছিলেন অচিরেই জেলের তালা ভেঙে মুক্ত করবেন খালেদা জিয়াকে, তারা তা পারেননি। যারা বলেছিলেন, প্রয়োজনে লাখ লাখ নেতাকর্মী জেলে যাবেন- নেতাকর্মীরা তা করেননি। ধারণা করা যায়, তাকে মুক্ত করতে দলীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণেই দলের পরিবর্তে পরিবারের উদ্যোগকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকবেন, না সরকারের কাছে আবেদন করে মুক্ত থাকবেন- এই চরম সিদ্ধান্তটি নিতে হয়েছে নিজেকেই। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় দল তার সহযোগী শক্তি হয়নি। যে কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তির সংবাদ গণমাধ্যমে আসার পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমি এইমাত্র মিডিয়ায় ম্যাডামের মুক্তির খবর শুনলাম। শুনে উত্তরার বাসা থেকে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছি।’

যদিও তুলনীয় নয়, তবুও উল্লেখ করতে চাই। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আগরতলা ষড়যন্ত্র নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাজা যখন প্রায় চূড়ান্ত, তখন মাঠের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য গোলটেবিল বৈঠক করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেই প্যারোলে মুক্তি নেননি। বঙ্গবন্ধুকে বেগম মুজিবের পরামর্শ ছিল- প্যারোলে মুক্তি নিলে তোমার সারা জীবনের রাজনৈতিক অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে। গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনের তুঙ্গে এই প্যারোল হতো আত্মঘাতী। বেগম মুজিবের পরামর্শ আর কঠোর আন্দোলনই মুক্ত করেছিল বঙ্গবন্ধুকে। মাঠ এবং দলের ওপর আস্থা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাই হয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার নিয়ামক শক্তি। বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য কোনোটাই তার পক্ষে ছিল না। তার দল বিএনপি এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

অন্যদিকে নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও (ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা ও নির্বাচনে অংশ নেয়া) রাজনীতির মাঠকে তারা নিজেদের অনুকূলে আনতে ব্যর্থ হয়। ফলে এই দুই পদক্ষেপের বাইরে তৃতীয় কোনো উদ্যোগের কথা ভাবতে হয়েছে তাকে। আর সেটি হচ্ছে সরকারের কাছে অনুকম্পা প্রার্থনা। একথা স্বীকার করতে হবে, পরিবারের করা এই আবেদনে বেগম খালেদা জিয়ার অনুমোদন ছিল এবং এটাও বাস্তবতা- এই আবেদনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিভেদ, সংঘাত, বৈরিতার কণ্টকাকীর্ণ বেড়াজালের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে তাই বেগম খালেদা জিয়ার এই মুক্তি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলা যায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এখন বাংলাদেশের পরবর্তী রাজনৈতিক স্রোত ৩টি দিকে মোড় নিতে পারে, আশ্চর্যজনকভাবে এই ৩টি সিদ্ধান্তই নিতে হবে বিএনপিকেই। এই সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে- ১. স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে যেভাবে চলছে, রাজনীতিকে সেভাবেই চালাতে পারে বিএনপি, ২. বিএনপি অতীতের ভুল-ভ্রান্তি স্বীকার করে একটি নতুন ধারার ইতিবাচক রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করতে পারে, ৩. অথবা হঠকারিতার পথে গিয়ে আবারো মৌলবাদী শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে পুরনো ধ্বংসাত্মক ও নেতিবাচক রাজনীতিকে অবলম্বন করতে পারে। এ কথা মনে রাখতে হবে, যে মাসটি আমরা মাত্র কয়েক দিন আগে পেরোলাম, সেই আগস্ট মাসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দুটি গভীর ক্ষত তৈরি করেছে- তার দায়দায়িত্ব থেকে বেরোতে হলে উদ্যোগটি বিএনপিকেই নিতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট- এই দুটি দিনের বর্বরতম ঘটনার লিগ্যাসি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে না পারলে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির পুনরায় ফিরে আসার সম্ভাবনা সীমিত হয়ে যায়।

একথা অনস্বীকার্য যে, ১৫ আগস্ট পরবর্তী রাজনীতির মূল বেনেফিশিয়ারি এবং ২১ আগস্টের ঘটনায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী দল বিএনপি। এই দুটি বিষয়ে বিএনপির অবস্থান যদি স্পষ্ট না হয়, তাহলে রাজনীতি যে খাদের ভিতরে আছে, সেই খাদের ভিতরেই থাকবে। ফলে বিএনপির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এরপরের রাজনীতিকে তারা কীভাবে টেনে নিয়ে যাবে।

অনেক রাজনৈতিক ভাষ্যকার গত ২১ আগস্ট গণমাধ্যমে লিখেছেন, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে বিএনপি ২১ আগস্টের মতো নির্মম ঘটনা ঘটিয়ে। সে সময় ক্ষমতাসীন সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে পঁচাত্তরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর বেঁচে যাওয়া কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাসহ প্রথম সারির সব নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে এই হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু অনেকের মতে, বিএনপির এই নির্মমতা সত্ত্বেও কফিনের সেই শেষ পেরেকটি খুলে এখনো আবার সেই সহযোগিতার রাজনীতির সূচনা করা সম্ভব। আর এই ইতিবাচক সম্ভাবনার দ্বার নতুন করে উন্মুক্ত করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে, তাকে মুক্ত করে দিয়ে যে বার্তাটি তিনি বিএনপিকে দিলেন, তার সঠিক অর্থ অনুধাবনের ওপর নির্ভর করবে বিএনপির আগামী রাজনীতি।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ৩ বার আটক হয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু তাকে জেলে যেতে হয়নি সে সময়। ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে এবং ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর ৩ বার আটক হলেও বেগম খালেদা জিয়া গৃহবন্দি ছিলেন তার ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে নিজস্ব বাসভবন ৬ নম্বর মইনুল রোডের বাড়িতে। এমনকি ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ওয়ান ইলেভেনের সরকার গ্রেপ্তার করলেও ১ বছর ৭ দিন সংসদ ভবনের পাশে স্থাপিত সাবজেলে থাকতে হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়াকে। সে সময় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদকের দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আজ সাজা ভোগ করতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছর সাজা দেয়া হয় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রথম সরাসরি কারা জীবনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন বেগম জিয়া। প্রায় ১ বছর ২ মাস এই নির্জন কারাগারে থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজে আনা হয় তাকে। সেখান থেকে তার পরিবারের করা সাজা স্থগিতের আবেদন ও সরকারের অনুমোদনের পর গত ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান বেগম খালেদা জিয়া।

এ প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের একটি উক্তি উল্লেখ করতে চাই। নব্বইয়ের গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জেলে নেয়ার পর রাখা হয়েছিল এই এক নম্বর নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারটিতে। ১৯৯১ সালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয় পার্টির এক প্রতিবাদ সভায় জাতীয় পার্টির নেতা ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘আমার নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে আপনি জেলে দিয়েছেন। এরশাদ একদিন মুক্ত হবেন। তবে ওই এক নম্বর নাজিমুদ্দিন রোডের বাড়িটি খালি থাকবে না। আপনাকেও আমরা ওই একই বাড়িতে এনে রাখব।’ ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে, ওই একই কারাগারেই থাকতে হলো বেগম খালেদা জিয়াকে। আর শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন হচ্ছেন এখন জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা, দলের ভাইস চেয়ারম্যান।

খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে টকশোতে বিএনপির এক নেতার বক্তব্য উল্লেখ করতে চাই প্রাসঙ্গিক বলেই। বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত জামিন দেয়নি চিকিৎসার জন্য। আদালত উপলব্ধি করেনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রয়োজন। অন্যদিকে সরকার মুক্তি দিয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করানোর আবেদনে। ফলে বোঝা যায়, সরকারের হাত বিচার বিভাগের চাইতেও শক্তিশালী।’

সাংবিধানিক কাঠামোতে কার ক্ষমতা কত- সেটা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। বিচার বিভাগকে সংবিধান শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা যেমন দিয়েছে, তেমনি সংবিধান আবার সরকারকে সাজা স্থগিত করার ক্ষমতাও দিয়েছে। এছাড়া বিচার হয় আইনি বিবেচনায়। বিচার বিভাগের এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে সরকার চাইলে রাজনীতি ও আইন- দুটোকে এক টেবিলে রেখে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পাওয়া বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ হতে পারে কিন্তু এই সুবিধাটি নিয়ে বিএনপি আগামীতে কীভাবে এগুবে- সেটা একান্তই নির্ভর করছে বিএনপি নেতৃত্বের দূরদর্শিতার ওপর।

লেখাটি শেষ করব উপমহাদেশের এক রাজনৈতিক নেতার সাক্ষাৎকারের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সে দেশের অজণ টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে- দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত মুসলিম লীগ নেতা নওয়াজ শরিফকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার অনুমতি দেয়া। লন্ডনে গিয়ে তিনি চিকিৎসা না করে রাজনীতি করছেন।’ এখানে এই উদ্ধৃতিটি নেহাতই এমনি উল্লেখ করলাম। উপরের লেখার সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র খুঁজতে না যাওয়াই ভালো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App