করোনা মহামারি সংক্রমনের মধ্যে আগামীকাল রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) আবারো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে বসতে চলেছে একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশন। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরাম সংকট কাটাতে মাত্র ৭০-৭২ জন এমপির উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর ১ টা পর্যন্ত মাত্র ২ থেকে আড়াই ঘন্টা চলবে এ অধিবেশন। মাত্র ৫ কার্যদিবসের এ অধিবেশনে ১১টি বিল পাশের জন্য জমা পড়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখায় সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে সংসদের কার্যসময় ৫ দিনে মাত্র ১২-১৩ ঘন্টা হতে পারে বলে মনে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নিয়ম রক্ষার এ সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব ওর্ডার, প্রশ্নোত্তোর পর্ব, ৭১ বিধি এসব থাকার সম্ভাবনা কম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারির মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বসা এ সংসদে ১১ টি বিল উঠবে এবং এর মধ্যে বেশ কয়েকটি পাশ হয়ে যাবে । আর মূলত বিল পাশের জন্য সংসদের বেশীরভাগ সময় ব্যয় করা হবে। ১২-১৩ ঘন্টার আলোচনার অধিকাংশ জুড়েই থাকবে বিল সংক্রান্ত আলোচনা।

এ সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির মাত্র ৫-৭ জন এমপি এবং বিএনপির ২-৩ জন এমপি উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়া বয়ষ্ক বা অসুস্থ কোন এমপি-মন্ত্রীকে সংসদ অধিবেশনে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে চিফ হুইপের দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। অধিবেশনে বিল উত্থাপনের জন্য সংশ্লি ষ্ট মন্ত্রী থাকতে পারেন বা তার পরিবর্তে অন্য কোন মন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিল উত্থাপণ করতে পারেন বলে জানা গেছে। আর প্রতিটি বিলের আলোচনান্তে পাশের সময় যতেষ্ঠ কম হবে বলে মনে করছেন সংসদ সংশ্লিষ্টরা। যদিও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানিয়েছেন, করোনা মহামারির মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে সংসদ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। তবে সংসদীয় সব রীতি মেনেই অধিবেশন চলবে এবং বিল পাশ করা হবে।

তবে জাতীয় পার্টির বর্ষিয়ান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম বলেছেন, করোনার সময় অনেকেই সংসদে উপস্থিত থাকতে পারেন না। কিন্তু যথারীতি আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করে সরকারী দল। সেখানে বিরোধীদলের কোন সংশোধনী বা অভিযোগ গ্রহণ করা হয় না। সংসদ একপেশে হয়ে গেছে। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইন পাশ হয়ে যাচ্ছে যথাযথ সংশোধনী বা আলোচনা ছাড়াই। সরকার বিল পাশের ক্ষেত্রে সংসদের বিরোধী দলকে মর্যাদা দিচ্ছে না।

আসছে নবম অধিবেশনে যেসব বিল পাশের জন্য আইন শাখায় জমা হয়েছে সেগুলো হলো- কাস্টমস বিল-২০১৯, বাংলাদেশ প্রকৌশল গবেষনা কেন্দ্র বিল-২০২০, সামুদ্রিক মৎস শিকার বিল-২০২০, গাজিপুর উন্নয়ন কতৃপক্ষ বিল-২০২০, আকাশ পথে পরিবহন (মাল্টিল কনভেনশন) বিল-২০২০, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় বিল-২০২০, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০২০, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধনী) বিল-২০২০, বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ম্যানেজমেন্ট বিল-২০২০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০২০ এবং মৎস ও মৎসজাত পণ্য পরিদর্শন ও মানদণ্ড বিল-২০২০।

কাল শুৃরু হওয়া সংসদের নবম অধিবেশন এ ১১টি বিল উঠবে এবং বেশ কয়েকটি পাশ করা হবে বলে সংসদ সচিবালংয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে একাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশন চলে মাত্র ৮ কার্য দিবস। এ বাজেটে মাত্র ১৮ জন এমপি ৫ ঘন্টা ১৮ মিনিট আলোচনায় অর্থবিল সহ বাজেট পাশ হয়, আবার স্বল্পদিনের এ অধিবেশন ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিল ও প্রায় এক ডর্জন বিলের রিপোর্ট উত্থাপিত হয়।