×

বিনোদন

করোনাকালে স্বেচ্ছাসেবার পাশাপাশি লেখালেখি করেছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:২৩ পিএম

করোনাকালে স্বেচ্ছাসেবার পাশাপাশি লেখালেখি করেছি

মোমেনা চৌধুরী

মোমেনা চৌধুরী। আরণ্যক নাট্যদলের সদস্য ও অভিনয়শিল্পী। থিয়েটারের পাশাপাশি অভিনয় করেন টেলিভিশন নাটকে। তার অভিনীত মঞ্চনাটক ‘লাল জমিন’ ইতোমধ্যে সারাদেশে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সম্প্রতি করোনার প্রকোপ কাটিয়ে সব কিছু যখন নতুন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু করেছে তখনই ‘লাল জমিন’ ঢাকার মঞ্চে প্রথম মঞ্চায়িত হয়। সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ও অভিনয় সংক্রান্ত বিষয়-আশয় নিয়ে অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কথা হয় ভোরের কাগজের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাকিল মাহমুদ।

দীর্ঘ সময় পরে থিয়েটার হল খুলতে শুরু করেছে। তার ধারাবাহিকতায় প্রথম মঞ্চায়িত হলো লাল জমিন; অনুভ‚তি কেমন ছিল?

প্রথমত, হলটা যখন পেলাম তখন থেকেই এক অন্য রকম আনন্দ কাজ করছিল। এবং প্রথম শোর যে রকম অনুভ‚তি যে রকম অনুভব হচ্ছিল। এসব ছাড়া শঙ্কাও ছিল; দর্শক কেমন হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারব কিনা! তবে এ ক্ষেত্রে হল কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সাহায্য করেছে। এমনকি যে পরিমাণ দর্শক এসেছে তাতে শেষটায় আনন্দটাই বেশি হয়েছে।

করোনার ফলে থিয়েটারে যে সংকট দেখা দিয়েছে তা কতটা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আপনি মনে করেন?

সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ইনশাল্লাহ পারব। ইতোমধ্যে মহিলা সমিতিতে এ মাসের তিনটি শুক্রবারের হল বরাদ্দ হয়ে গেছে। লাল জমিন সাহস করে শুরু করেছে। এখন যারা শুরু করবে তারাও সাহস সঞ্চয় করেই শুরু করবে। তাছাড়া এরই মধ্যে অনেকে রিহার্সালও শুরু করেছে। সব মিলিয়ে এ সংকট খুব বেশি দিন থাকবে বলে মনে হয় না। অচিরেই তা কাটিয়ে উঠে থিয়েটার স্বাভাবিক যাত্রা শুরু করবে।

লাল জমিন বলতে গেলে দেশের প্রত্যেকটি জেলাতেই শো করেছে। গ্রামীণ পরিবেশে শো করার অনুভূতি কেমন ছিল? দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কেমন পেয়েছেন?

আমরা ইতোমধ্যে ৫৮টি জেলায় লাল জমিনের মঞ্চায়ন করেছি। গণভবনে শো করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছে পাটগ্রামে শো করতে গিয়ে সেখানকার মানুষেরও একই প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এই নাটকটি দেখার পর মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন অনুভ‚তি হয় তেমনই এ প্রজন্মের কাছে পুরো মুক্তিযুদ্ধের চিত্র অঙ্কিত হয়। অনেক তরুণ প্রজন্ম এই নাটকটি দেখার পর আমার কাছে এসে বলেছে, মনে হলো মুক্তিযুদ্ধ দেখলাম। এই যে দর্শকের কাছে লাল জমিন যেভাবে পৌঁছেছে এবং তারা যেভাবে নাটকটি দেখছে তা দেখে-শুনে অভিনেত্রী হিসেবে ভীষণ অনুপ্রাণিত হই।

লাল জমিন পরবর্তীতে কবে নাগাদ মঞ্চায়িত হবে?

এ মাসের শেষের দিকে একটি শো করার চেষ্টা করছি। আপাতত মহিলা সমিতিতে হল খালি নেই। তারপরও চেষ্টা করব মাসের শেষে একটি শো করার। তাছাড়াও সর্বশেষ ডিআইজি হাবিবুর রহমানের অনুপ্রেরণায় ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন বিভাগের পুলিশ লাইন্সে কাজ করা শুরু করেছিলাম। সে অনুযায়ী ঢাকা বিভাগ এবং বরিশাল বিভাগ শেষ। করোনার কারণে আপাতত সে কাজগুলো বন্ধ ছিল। এ মাসের শেষে হয়তো দেশের অন্যান্য বিভাগের পুলিশ লাইন্সে আবার শো করব।

দীর্ঘ ঘরবন্দি সময়ে কি করেছেন?

আমি লকডাউনের সময় মাত্র চারদিন ঘরে ছিলাম। বাকি সময়টা আমি কোয়ান্টামের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছি।

স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কি ধরনের কাজ করেছেন?

করোনাকালীন যারা মারা গেছেন তাদের দাফন কাজে যারা নিয়োজিত ছিলেন তাদের সহযোগিতা করেছি, আর্থিক অনুদান সংগ্রহের কাজ করেছি। এছাড়া দাফনকার্য করতে গিয়ে যত দুর্ঘটনা, কষ্টকর ঘটনা ঘটেছে সেগুলো নিয়ে কোয়ান্টাম ওয়েবের জন্য ১৮টি অডিও করেছি।

স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি আর কি কাজ করেছেন?

করোনার শুরুর দিকে একটি ছোট পারফর্ম করে আমার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করি। বহুদিন ধরে লেখালেখির একটি সুপ্ত ইচ্ছে ছিল। তাই করোনাকালে লেখালেখিটা শুরু করেছি। তার মধ্যে ৫টি গল্প লিখেছি।

এমনিতে আরণ্যক নাট্যদলে নাট্যকার বা নির্দেশক হিসেবে কাজ করার কোনো ইচ্ছে আছে?

আরণ্যকে নাট্যকার বা নির্দেশক হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। আর নির্দেশক হওয়াটা খুব কঠিন কাজ, লেখালেখিটাও কঠিন। তবে যেহেতু শুরু করেছি, কিছু একটা হয়তো হবে। সে ক্ষেত্রে আমার যে রেপার্টরি রয়েছে ‘শূন্যন রেপার্টরি’ সেখানে সুযোগ পেলে নাট্যকার হিসেবে কাজ করব।

টেলিভিশনে এই মুহূর্তে কোনো কাজ করছেন?

এই মুহূর্তে দুটো ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। একটি কায়সার আহমেদের গোলমাল এবং তৌকীর আহমেদের রূপালী জ্যোৎস্না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App