×

বিনোদন

‘বাইপোলার ডিজ-অর্ডারে’ ভুগছিলেন সুশান্ত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫৯ এএম

‘বাইপোলার ডিজ-অর্ডারে’ ভুগছিলেন সুশান্ত। সঙ্গে ছিল অসম্ভব দুশ্চিন্তা-অনিদ্রাসহ একগুচ্ছ মানসিক অসুখ। সুশান্তের চিকিৎসা করতেন এমন দুজন চিকিৎসক এ তথ্য জানিয়েছেন। সুশান্তকাণ্ডে একের পর এক এসব তথ্য উঠে আসছে। এর আগে মুম্বাই পুলিশকে দেয়া ভাষ্যে সুশান্তের দুই চিকিৎসকই জানিয়েছিলেন, সুশান্ত নাকি ওষুধ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এক চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী, সুশান্তের মনে হতো তার এই সমস্যার সমাধান কোনো দিনই হবে না। আর সে জন্য সবচেয়ে বেশি ঝামেলা পোয়াতে হবে তার পরিবারকে।

ওই চিকিৎসক জানান, গত বছর নভেম্বরে সুশান্ত তাকে বলেছিলেন, আর নাকি বেঁচে থাকার ইচ্ছাই নেই তার। যতবার সুশান্ত তার কাছে এসেছিলেন ততবারই নাকি সঙ্গে থাকতেন রিয়া। অপর চিকিৎসকের ভাষ্য থেকে জানা যায়, ২০ বছর বয়স থেকে নানা মানসিক সমস্যার শিকার ছিলেন সুশান্ত। তার কথায়, সুশান্ত তার রোগ সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকলেও নিয়মিত ওষুধ নিচ্ছিলেন না। চার-পাঁচ দিন না ঘুমানো, অনেক পরিমাণ টাকা খরচ, তাড়াতাড়ি কথা বলার প্রবণতাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন সুশান্ত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইপোলার ডিজঅর্ডার আবেগজনিত একটি মানসিক রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবেগের দুই ধরনের পর্যায় থাকে। একটি হচ্ছে ম্যানিয়া বা হাইপোম্যানিয়া। এ পর্যায়ে ব্যক্তি অস্বাভাবিক ফুর্তিবোধ করেন বা বিরক্ত থাকেন, কথা বলেন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বা কথায় স্থির থাকতে পারেন না। অতিরিক্ত খরচ বা দান-খয়রাত করেন। নিজেকে অনেক টাকার মালিক বা ক্ষমতাধর মনে করেন। কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে, যদিও সুষ্ঠুভাবে কোনো কাজ করতে পারেন না। ঘুমের প্রয়োজন তাদের কাছে কমে যায়। অনেকের যৌন আগ্রহ বাড়ে। আক্রান্তরা নিজেদের রোগী বলে মানতে চান না। তাদের আচরণের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে অন্যদের চোখে। বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আবেগের অন্য পর্যায়টি বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন। অনেকের ক্ষেত্রে শুধু ম্যানিয়া পর্যায়টিই দৃশ্যমান হয়, বিষণ্ণতার পর্যায়টি বোঝা না-ও যেতে পারে। কারো ক্ষেত্রে সারাজীবনে হয়তো দু-একবার ম্যানিয়া পর্যায়টি দেখা দিতে পারে, কারো ক্ষেত্রে কয়েক বছর পরপর বা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এটি হতে পারে। অজ্ঞতার কারণে অনেকে একে জিন-পরীর আসর মনে করে ঝাড়ফুঁকসহ নানা অপচিকিৎসার দ্বারস্থ হন। তবে এ রোগের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আবেগের অবস্থাটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। রোগ তীব্র হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হতে পারে। মনে রাখতে হবে, ওষুধে রোগের উপসর্গ কমে গেলেও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন বন্ধ করা যাবে না। ওষুধ ছেড়ে দিলে রোগটি আবার দ্রুত ফিরে আসতে পারে।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App