×

সারাদেশ

মেঘনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কাদিরপণ্ডিতেরহাট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৫৯ পিএম

মেঘনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কাদিরপণ্ডিতেরহাট

নদীগর্ভে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছবি: প্রতিনিধি

মেঘনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কাদিরপণ্ডিতেরহাট

ছবি: প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহট ইউনিয়নের কাদিরপন্ডিতেরহাট এলাকায় মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতায় মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ জনপদ। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল ডাকঘর, মসজিদ ও কাদিরপণ্ডিতেরহাট বাজার। ভাঙন প্রতিরোধে এখনই উদ্যোগ নেয়া না হলে চলতি মৌসুমেই এগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থায়ী বাঁধ না হলেও ভাঙনের তীব্রতা কমাতে আপদকালীন বরাদ্দের আওতায় জিও ব্যাগের বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ২০১৬ সালে ভাঙনের মুখে পড়ে কাদিরপন্ডিতেরহাট বাজারটি প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে চরজগবন্ধু এলাকায় স্থানান্তরিত হয়। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে যাচ্ছে।

মাত্র চার বছরের ব্যবধানে মেঘনা নদীর ভাঙন এখন বাজারের ৩০০ মিটারের মধ্যে চলে এসেছে। বাজারের পাশেই রয়েছে চরজগবন্ধু এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবু তাহের কমিউনিটি ক্লিনিক ও চরজগবন্ধু ডিজিটাল ডাকঘরসহ চারটি মসজিদ। ভাঙনের তীব্রতায় সেইসব প্রতিষ্ঠানগুলোও রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।

অলি বেপারী, মো. দুলাল ও মো. ইব্রাহীমসহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মেঘনার ভাঙন বাড়ির কাছাকাছি চলে আসায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। নিজেদের বসতভিটাসহ এলাকাটিকে রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তারা।

[caption id="attachment_240293" align="aligncenter" width="700"] ছবি: প্রতিনিধি[/caption]

কাদিরপণ্ডিতেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, এক সময় কাদিরপণ্ডিতেরহাট বাজার উপজেলার মধ্যে অন্যতম একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল। চার বছর আগে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিসহ ওই বাজারের কয়েক শত দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে তারা বর্তমান জায়গায় বাজারটি স্থানান্তর করেন। কিন্তু এখন পুনরায় বাজারটি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ায় তিনিসহ অপর ব্যবসায়ীরা খুবই আতঙ্কে রয়েছেন।

সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের জানান, গত ছয় মাসের মেঘনার ভাঙনে কাদিরপণ্ডিতেরহাট বাজার সংলগ্ন এলাকার অর্ধশত বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন শতাধিক পরিবার। ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাজারসহ পুরো এলাকাটি এখন হুমকির মুখে। যে কারণে এলাকাটি রক্ষায় এ মুহূর্তে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব না হলেও ভাঙনের তীব্রতা কমাতে আপদকালীন বরাদ্দের আওতায় জিও ব্যাগের বাঁধ নির্মাণের দাবি করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ জানান, মেঘনার ভাঙনের তীব্রতা ঠেকাতে আপদকালীন বরাদ্দের আওতায় কমলনগর উপজেলার লুধুয়া ফলকন এলাকায় জিও টিউব ব্যাগে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কাদিরপণ্ডিতের হাট এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে একইভাবে বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে সেখানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব.) আবদুল মান্নান জানান, মেঘনার ভাঙন রোধে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের নতুন ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App