×

অর্থনীতি

পোশাক রপ্তানি ছাড়িয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৭ এএম

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের ৩০ দিনে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লকডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থা পর্যায়ক্রমে তুলে নিতে শুরু করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থবিরতা কাটতে শুরু করলেও তার গতি এখনো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। রপ্তানিনির্ভর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর মধ্যে সচল হয়েছে বেশির ভাগ। রপ্তানিতে বড় উল্লম্ফন হলেও তা বাতিল-স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের পুনর্বহালের কারণেই বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এপ্রিলে ব্যাপকহারে রপ্তানি কমে গেলেও পরের মাসে বড় উল্লম্ফন হয়, জুন ও জুলাইয়েও যা অব্যাহত ছিল। আগস্টে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোশাক খাত।

বিজিএমইএর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের ৩০ দিনে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরের আগস্টের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের আগস্টে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ২২৩ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার ডলারের।

আমেরিকা ও ইউরোপে বাংলাদেশের বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য প্রায় প্রতিটি দেশেই এখন কোভিড-১৯-এর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও অঘোষিত লকডাউন গত ২৬ মার্চ শুরু হয়ে গতকাল থেকে তা তুলে নেয়া হয়েছে। একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ার কারণে দেশের রপ্তানি কার্যক্রম বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি ধারাবাহিকভাবেই কমে যায়।

গত মার্চে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমে যায় প্রায় ২৭ শতাংশ। এপ্রিলে কমে প্রায় ৮৫ শতাংশ। আর মে মাসে কমে প্রায় ৬৩ শতাংশ। কমার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেও জুনে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির হার আগের তুলনায় কম ১৯ শতাংশ। জুনে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের। আর জুলাইয়ে পোশাক রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ৩২৪ কোটি ডলারের।

এক অর্থবছর বিবেচনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পোশাক পণ্যের মোট রপ্তানি ছিল ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৭৭০ কোটি ১৭ লাখ ডলারের। এ হিসেবে এক অর্থবছরে ৬৪৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার বা প্রায় ১৯ শতাংশ কম হয়েছে পোশাক রপ্তানি।

চীনের উহানে কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় গত ডিসেম্বরের শেষে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে তা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রেক্ষাপটে জানুয়ারি থেকেই দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নিম্নমুখিতা বজায় রয়েছে। করোনার প্রভাবে দেশের তৈরি পোশাক খাত প্রথমে কাঁচামালের সরবরাহ সংকটে পড়ে। চীনে নভেল করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের কারণে দেশটি থেকে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হয়।

দেশে তৈরি পোশাক খাতের ওভেন পণ্যের আনুমানিক ৬০ শতাংশ কাপড় আমদানি হয় চীন থেকে। আর নিট পণ্যের কাঁচামাল আমদানি হয় ১৫-২০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে ধীরগতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু রপ্তানি গন্তব্যগুলোয় এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় চাহিদার সংকট তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করতে থাকে একের পর এক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান।

এ ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, মাসভিত্তিক রপ্তানির চেয়ে ছয় মাসের গড় বিবেচনায় নিলে পোশাক রপ্তানি পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র দেখা যেত। পণ্যভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বৃদ্ধির দিক থেকে কটন ট্রাউজারের অংশ সবচেয়ে বেশি।

ম্যান মেড ফাইবার ক্যাটাগরির পণ্যের রপ্তানিও বাড়তে শুরু করেছে। উইমেনস-গার্লস কটন ট্রাউজারের উল্লেখযোগ্য রপ্তানি বেড়ে মোট রপ্তানিতে পণ্যগুলোর অংশগ্রহণও বাড়িয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App