×

মুক্তচিন্তা

আইনের চোখে অনলাইন ব্যবসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১৪ পিএম

আইনের চোখে অনলাইন ব্যবসা
অনলাইন ব্যবসা আমাদের দেশে প্রচলিত সাধারণ ব্যবসার মতো নয়। অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যমে আছে, তাতে বিক্রেতারা পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে এবং সেটা দেখে একজন ক্রেতা কিনে। কিন্তু আমাদের দেশের সাধারণ ব্যবসার ক্ষেত্রে একজন ক্রেতা বাজারে গিয়ে নিজের পছন্দ ও চাহিদামতো পণ্য দেখে দরদাম করে কিনতে পারে। অনলাইনের ব্যবসায় এমন সুযোগ-সুবিধা থাকে না যার ফলে ক্রেতাদের কেবল বিজ্ঞাপনের ওপর বিশ্বাস করেই কিনতে হয়। এখানে ক্রেতার কাছে পণ্যের মান যাচাইয়ের তেমন সুযোগ নেই। সরল বিশ্বাসী ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার সুযোগ থাকে। তাছাড়া অনেকে প্রি-পেইড করে সঠিক সময় পণ্য পান না আবার অনেকে পণ্যই পান না। অনলাইন ব্যবসাতে যেমন ভালো দিক আছে তেমনি মন্দ দিক আছে। এই ভালোমন্দ মিলিয়ে বর্তমানে অনলাইন ব্যবসা দেশে একটি জনপ্রিয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ছোট পরিসরে অনেক উদ্যোক্তা এসেছে। বাংলাদেশে যে কোনো ব্যবসা করতে হলে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসায়ী সংক্রান্ত বিষয় বহিভর্‚ত হয় না। অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আলাদা নীতিমালা করা হয়নি কিন্তু যেহেতু এটাও একটি ব্যবসা সুতরাং ট্রেড লাইসেন্স করা উচিত। এছাড়া এখানে ব্যবসায়ীরা প্রচুর আয় করে থাকেন সুতরাং ব্যবসায়িক সংক্রান্ত আয়করের বিষয় এখানে জড়িত। তবে ওই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ সরকারের অধীন বিষয় সুতরাং সরকারি বিধিমালা ও সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। ভোক্তা অধিকার আইনে ৩৭ ধারা থেকে ৫৬ ধারায় পণ্য বিক্রি ও ক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিধিবিধান করা হয়েছে। পণ্যের বিস্তারিত তথ্য ও তথ্যের সঙ্গে পণ্য সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে অন্যথায় এটা প্রতারণা হিসেবে গণ্য হবে। সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী মূল্য থাকতে হবে এবং তা প্রদর্শন করতে হবে। ভেজাল পণ্য নিষিদ্ধ এবং কোনো পণ্যে ভেজাল মিশানো যাবে না। অবৈধ পণ্য বাজারজাতকরণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপন ও প্রতিশ্রুতি, যথাযথ ও প্রতিশ্রুতভাবে সেবা প্রদান না করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বেআইনি প্রথা অবলম্বন করে ব্যবসা করলে তাতেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা যাবে। ওই নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড করলে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আইনি ব্যবস্থা নেবে এবং আইন অনুযায়ী বিভিন্ন অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে বর্ণিত শাস্তি দেবে। সাধারণত ভোক্তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাংলাদেশের সরকারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি দ্বারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকেন। এই আইনের খুব মজার একটি বিষয় হলো এর ৭৬ ধারা যেখানে অভিযোগকারী ভোক্তাকে মোট জরিমানার ২৫ শতাংশ দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রত্যেকের জীবনের লক্ষ্য ও প্রয়োজন প্রতিষ্ঠিত হওয়া। উদ্যোক্তা হওয়া খুব সহজ বিষয় নয়। একজন উদ্যোক্তা প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত হওয়া মোটেও কাম্য নয়। বর্তমান যুগে অনলাইন ব্যবসা একদিকে যেমন লাভজনক অন্যদিকে আকর্ষণীয়। একজন ক্রেতা সরল বিশ্বাসে পছন্দনীয় পণ্য অনলাইন থেকে ক্রয় করে যদি প্রতারণার শিকার হয় তবে এটা যেমন ক্রেতার জন্য কষ্টকর তেমন সব বিক্রেতার জন্য অশনি সংকেত। একজন বিক্রেতার ভুলের দায়ভার সব বিক্রেতার ওপর পড়ে। শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App