×

সারাদেশ

চেয়ারম্যানের ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মেম্বাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২০, ০৮:০৪ পিএম

চেয়ারম্যানের ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মেম্বাররা

সাধারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি সরকার স্বপন

চেয়ারম্যানের ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মেম্বাররা

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের অভিযোগ

চেয়ারম্যানের ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মেম্বাররা

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন মামলা

চেয়ারম্যানের ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মেম্বাররা

সাধারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি সরকার স্বপন

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের বিতর্কিত চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি সরকার স্বপনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎতের ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মেম্বাররা। নিরূপায় হয়ে প্রতিকার চেয়ে চার ইউপি সদস্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগের অনুলিপি ঢাকার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, নরসিংদীর স্থানীয় সরকার বিভাগ উপ-পরিচালক ও শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

গেল ১২ আগস্টে জমা দেয়া অভিযোগে মেম্বাররা উল্লেখ করেন, মাছিহুল গনি সরকার স্বপন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এলাকার নিরীহ অসহায় মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন কার্ড দেন। এ ছাড়া ইউপি পরিষদের সীমানা প্রচীর নির্মাণ প্রকল্পের নামে নানা অপকৌশলে অর্থ আত্মসাত করেন। বিভিন্ন সালিশ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে অন্যায়ভাবে বিচার কাজ শেষ করেন।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, মাছিহুল গনি সরকার স্বপনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে গেল চার বছর ধরে ইউপির কোনো সদস্যকে সম্মানিভাতা দেননি। মেম্বারদের স্বাক্ষর কিংবা রেজুলেশন ছাড়াই বিভিন্ন প্রকল্পের নামে- বেনামে অর্থ উত্তোলন করে চলেছেন।

বিএডিসির সেচ প্রকল্প থেকে বরাদ্দ নিয়ে এলজিএসপি ও এলআইসি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শেষ করে বিএডিসি সেচ প্রকল্পের টাকা ও ইউপির রাজস্ব ট্যাক্স থেকে আদায় করা অর্থ পরিষদের হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন।

[caption id="attachment_239714" align="aligncenter" width="700"] চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের অভিযোগ[/caption]

অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যানের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে কেউ কথা বললে তাকে মারধরের হুমকি দেন। প্রতিটি মেম্বারের সঙ্গেই তিনি দুর্ব্যবহার ও খারাপ আচরণ করেন। তাছাড়া তার নারী ঘটিত কেলেঙ্কারির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ই্উনিয়নবাসী লজ্জিত আর ক্ষুব্ধ। এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করে বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গত ২৫ আগস্ট সরেজমিনে ইউনিয়নের একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বললে প্রতিবেদককে তারা জানান, সরকারের ত্রাণসহ বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেয়ার নাম করে চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি সরকার এক মেম্বারের মাধ্যমে গরীব অসহায় মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। যারা মেম্বারকে টাকা দিতে অস্বীকার করে মাসের পর মাস তাদের কাজ বন্ধ থাকে।

নাজনীন সুলতানা নামের এক মহিলা মেম্বার অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি স্বপন একজন নারী লোভী। বিভিন্নভাবে তাকে নির্যাতনের চেষ্টা করেছেন। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদেই তার শ্লীলতাহানি করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পিপিআই।

নাজনীন সুলতানা আরো অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। চেয়ারম্যানের ভাই একজন সন্ত্রাসী হওয়ায় তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঘটনার প্রতিকারের জন্য তিনি পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

[caption id="attachment_239715" align="aligncenter" width="700"] চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন মামলা[/caption]

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সাধারচর ইউপি চেয়ারম্যান মাছিহুল গনি সরকার স্বপন বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মহিলা মেম্বারের মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। মামলায় যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে সেদিন আমি ভিজিএফের মালামাল বিতরণ করেছি। আমার কাছে প্রমাণ আছে। আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে মাছিহুল গণি বলেন, সেটা তো দুই বছর আগের। আমাকে প্যাঁচে ফেলেছে।

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা বিষয়ে নরসিংদী পিবিআই পরির্দশক মোস্তফা বলেন, আদালতের আর্দেশে ঘটনা তদন্তের দায়িত্বভার পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

লিখিত অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাউসার আজিজ বলেন, লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তদন্তের পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App