×

জাতীয়

গণপরিবহন স্বাভাবিক হলে করোনা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২০, ০৯:২৭ এএম

গণপরিবহন স্বাভাবিক হলে করোনা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

ফাইল ছবি

গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হলে সারাদেশে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। বিধিনিষেধের পরেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলে স্বাস্থ্যবিধি বলতে আর কিছুই থাকবে না। তখন দেশ দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে। দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। আগামী মাস থেকে গণপরিবহন চলাচলে সরকারের নমনীয় অবস্থানের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এসব আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন।

সড়ক ও গণপরিবহন নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের নেতারাও একই আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করতে সরকারকে আরো কিছুদিন সময় নেয়া উচিত। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে এখনো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে কি কি করতে হবে সেই বিষয়ে আমরা গত ৬ মাস ধরে কথা বলে আসছি। আমাদের কথা কেউ শুনছে না। ঝুঁকি কমাতে বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থায় স^াস্থ্যবিধি মানার কথা বলে আসছি। সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে গণপরিবহন চলাচল আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেলে সংক্রমণের হার বাড়বে। অবশ্যই মানুষের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে পড়বে। সরকার সবকিছু খুলে দিয়েছে। গণপরিবহনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার অপেক্ষায়। বিজ্ঞান ও রাজনীতি একসঙ্গে চলে না। বিজ্ঞান অনুযায়ী সবাই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলেই সংক্রমণ কমবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের এক ধরনের ঢিলেঢালা ভাব এখনো আছে। জুন-জুলাই মাসের পরিসংখ্যান দেখে এটা স্পষ্ট যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার একই ধরনের। পরিসংখ্যান দেখে

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে- এটা বলা যাবে না। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে গণপরিবহন। এখন যে হারে করোনার সংক্রমণ হচ্ছে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হলে তা আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে। সারাদেশে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে বাংলাদেশ।

করোনার সংক্রমণ কতখানি বিস্তার ঘটতে পারে- এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, অবস্থা যে খারাপ হবে সেই আশঙ্কা করছি। কিন্তু বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো জরিপ না থাকায় অনুমাননির্ভর হয়ে পরিস্থিতির ভয়াবহতার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। সারাদেশে জরিপ করা হলে আক্রান্তের সংখ্যা ও দেশের করোনা পরিস্থিতির একটা চিত্র উঠে আসবে। যে হারে করোনা টেস্টের প্রয়োজন সেই হারে টেস্ট হচ্ছে না। গণপরিবহন স্বাভাবিকভাবে চলার জন্য উন্মুুক্ত করে দেয়া হলে করোনার সংক্রমণ বাড়বেই। গণপরিবহনে এখনো কঠোরতার প্রয়োজন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এপ্রিল ও মে মাসে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সংক্রমণের হার অনেক কম ছিল। কিন্তু গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়ার পর সংক্রমণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন আবার গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হলে সবার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়লে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে। এই অবস্থায় গণপরিবহন চলাচল আরো কিছুদিন স্বাস্থ্যবিধির আওতায় রাখা প্রয়োজন। এদিকে গণপরিবহন নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের নেতারাও এই মুহূর্তে গণপরিবহন চালাচল স্বাভাবিক না করার পরামর্শ দিয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়কে চলাচলরত গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। দেশব্যাপী করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই মুহূর্তে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। গণপরিবহন চলাচল এখনই স্বাভাবিক না করে আরো কিছুদিন সময় নেয়া উচিত। একই সঙ্গে গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়াও কমানো উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App