×

সারাদেশ

ঈশ্বরদী নৌবন্দরের দিয়ে রূপপুরে যাবে ভারী যন্ত্রপাতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২০, ১২:৫৪ পিএম

ঈশ্বরদী নৌবন্দরের দিয়ে রূপপুরে যাবে ভারী যন্ত্রপাতি

ছবি: প্রতিনিধি

রাশিয়া হতে আগত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম গ্রহণে ঈশ্বরদীর পদ্মা নদীতে নবনির্মিত বন্দর চালু হয়েছে। পরমাণু কেন্দ্র নির্মাণ ও এটি চালুর করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ও জ্বালানি তেল এই নৌবন্দরের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে পৌঁছাবে।

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এস জি লাসতোচকিন জানান, চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে এই বন্দর দিয়েই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অংশ যেমন, ভিভিইআর-১২০০ চুল্লিপাত্র, চারটি স্টিম জেনারেটর ও বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতি উঠানো-নামানোর জন্য পোলার ক্রেন সরবরাহ করা হবে।

রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন-রসাটম সূত্র জানান, বাংলাদেশের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যন্ত্র-সরঞ্জামবাহী কার্গো সমুদ্রপথে সেন্ট পিটার্সবার্গ ও নভোরোসিয়েস্ক থেকে বাংলাদেশের মংলা বন্দরে পৌঁছাবে। সেখান থেকে জাহাজে করে নদী পথে পদ্মার নব নির্মিত নৌবন্দরে নেয়া হবে। নৌবন্দর থেকে নেয়া হবে পরমাণু কেন্দ্র র্নিমাণস্থলে।

রূপপুর পারমানবিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, পদ্মা নদীর এই বন্দর তৈরিতে সময় লেগেছে দেড় বছর। এর আয়তন ১৫০/৩৫০ মিটার। বছরের বিভিন্ন মৌসুমে নদীতে পানির গভীরতায় ১০ মিটারের পার্থক্য ধরে বন্দরটি তৈরি হয়েছে। এমনকি শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীতে সর্বোচ্চ পরিমাণে পানি নিচে নেমে গেলেও বন্দরঘাটে সর্বনিম্ন সাড়ে তিন মিটার পানির গভীরতা থাকবে। এই গভীরতায় বছরের সবসময় সেখানে কাজ চলবে। বর্ষা মৌসুমে বন্দরে বড় আকারের জাহাজও ভেড়ানো যাবে। বর্তমানে বন্দরটিতে দুটি ক্রেন রয়েছে যেগুলো ৬৩ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। ৩০৮ টন ধারণ ক্ষমতার আরও দুটি ভারী ক্রেন যুক্ত করা হবে বন্দরটিতে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে রাশিয়ার সহায়তায়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রোসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন। পারমাণবিক কেন্দ্রের নকশা, পরিকল্পনা, নির্মাণ এবং পরিচালনা থেকে শুরু করে ইউরেনিয়াম মাইনিং, তারপর সেটাকে রূপান্তরিত করে আরও উন্নত করা, পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ করা, ব্যবহৃত জ্বালানি রাখা ও পরিবহন করা, এবং সর্বোপরি নিরাপদ উপায়ে পারমাণবিক বর্জ্যের নিষ্পত্তির মতো কাজগুলো করছে রাশিযার রাষ্ট্রিয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম।

১৯৬১ সালে পদ্মা নদীর তীরে রূপপুরে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা প্রকল্পের রূপ দিতে অর্ধশতক পার হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ প্রকল্পে গতি আসে, চুক্তি হয় রাশিয়ার সঙ্গে।

২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি গবেষণার জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার একটি চুক্তি হয়। ওই বছরই অক্টোবরে রূপপুরে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সেফটি ফাস্ট’কে গুরুত্ব দিয়ে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে রূপপুরের বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় জ্বালানি সরিয়ে নিতেও ইতোমধ্যে রাশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App