×

সারাদেশ

বেড়াতে যাওয়ার সময় অপবাদের শিকার হন মা-মেয়ে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২০, ০৯:৩০ এএম

বেড়াতে যাওয়ার সময় অপবাদের শিকার হন মা-মেয়ে

মা-মেয়ে কে নির্যাতন।

ছোট মেয়ে বেবি আক্তারের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় গরুচুরির অপবাদের শিকার হন মা পারভীন বেগম ও তার ছেলেমেয়েরা। ঘটনার দিন চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট হায়দারনাশীতে ছোট মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। ওইদিন তাদের বহনকারী সিএনজি গাড়িটি চকরিয়ার হারবাং লালব্রিজ এলাকায় বিকল হয়ে যায়। এসময় গাড়িটি মেরামত করতে গিয়ে গরুচুরির অপবাদের শিকার হতে হয়েছে মা-মেয়েকে।

এদিকে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামসহ তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নির্যাতনের শিকার পারভীন বেগম (৪০) বাদী হয়ে কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকার কমিশনের এক কর্মকর্তাকে নিয়ে চকরিয়া থানায় মামলাটি করেন। এজাহারে আরো ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে। মামলার এজাহারে শ্লীলতাহানি, নির্যাতন, মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি আমিনুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে সোমবার আটক করা হয়। মঙ্গলবার নির্যাতিত পারভীন বেগমের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। মা-মেয়ের পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ইলিয়াছ আরিফ বলেন, গরু চুরির অপবাদে দায়েরকৃত মামলা থেকে মা-মেয়েসহ তিন জন জামিনলাভ করে। মঙ্গলবার জামিনে মুক্ত পারভীন বেগম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য ওসি সাহেবকে অনুরোধ করেছি। যাতে মা-মেয়ে সুষ্ঠু বিচার পায়।

চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নির্যাতিত পারভীন বেগম জানায়, তার দুই ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। দুই বছর পূর্বে তার স্বামী আবুল কালাম মারা যায়। এরপর থেকে সংসারের হাল ধরেন তিনি। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া পৌরসভার আদিলপুর হলেও বর্তমানে বসবাস করেন পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকার শহীদের ভাড়া বাসায়। ঘটনার দিন সকালে দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট হায়দারনাশী নামক স্থানে ছোট মেয়ে বেবি আক্তারের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলাম।

পটিয়া থেকে মাইক্রোবাসে করে এসে সাতকানিয়া কেরানিহাট স্টেশনে নামিয়ে দেয়। পরে আমরা একটি সিএনজি নিয়ে চকরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হই। দুপুর ১টার দিকে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং লালব্রিজে পৌঁছলে সিএনজি গাড়িটি খারাপ হয়ে যায়। সেখানে চালক গাড়িটি মেরামত করার সময় দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে ৬ জন যুবক চোর চোর বলে ধাওয়া করে। ওই সময় প্রাণের ভয়ে চালক সিএনজি গাড়িটি জোরে চালিয়ে যেতে থাকে। ওই ৬ যুবক আমাদের পেছনে ধাওয়া করলে একপর্যায়ে চালক সিএনজি গাড়িটি হারবাং পহরচাঁদা স্থানে ঢুকিয়ে দেন চালক। ওইখানে চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলেও হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার ওই ৬ যুবককে রশি দিয়ে বেঁধে অমানুষিকভাবে মারধর ও নির্যাতন করে। পরে তারা প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় ঘুরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন। ইউনিয়ন পরিষদে আসার পর ইউপি চেয়ারম্যান ফের আমাদের বেধড়ক পেটায়। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App