×

জাতীয়

নিরুদ্বেগ শরণার্থী জীবন!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০, ০৯:১৬ এএম

নিজ দেশ মিয়ানমারে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। আশ্রয় নেয় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে। দেখতে দেখতে কেটে গেল ৩ বছর। এই ৩ বছরে জল অনেক ঘোলা হলেও এ নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই সাধারণ রোহিঙ্গাদের। শরণার্থী শিবিরে ভালোই আছেন তারা। এখানে ‘স্বাধীনতা না থাকলেও নিরাপত্তা আছে’। সচ্ছলতা হয়তো নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই তো আছে। খাবারের অভাব নেই। আছে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবাও।

পাশে আছে দেশি-বিদেশি শতাধিক বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। টেকনাফ ও উখিয়ার আশ্রয় শিবিরগুলোতে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে ১৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গার দিন কাটছে অনেকটা নির্ভাবনায়-নিরুদ্বেগে। তাদের নিজ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিকভাবে নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও এখানকার রোহিঙ্গারা এ নিয়ে কিছু ভাবছেই না। নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে তারা জুড়ে দিয়েছে অনেকগুলো শর্ত। যা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পেলে তারা দেশে ফিরবে না বলে অনড়। তবে কিছু রোহিঙ্গা নিজভূমে ফিরতে চাইলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ‘আল-ইয়াকিন’ নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ। তারা রোহিঙ্গাদের নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে রোহিঙ্গারা আশ্রয় শিবিরে ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে আগের মতোই। অবৈধ পন্থায় মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখানকার শিবিরের রোহিঙ্গাদের রয়েছে নিয়মিত যোগাযোগ। মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়মিত আসছে অর্থ। পরিচয় গোপন করে পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে এমনকি বিদেশে পাড়ি জমানোর আগে আটক হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা।

কয়েক যুগ আগ থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এ দেশে এলেও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে দলে দলে রোহিঙ্গারা আসতে থাকে। সবমিলিয়ে যা এখন প্রায় ১৫ লাখের বেশি। যা উখিয়া-টেকনাফের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে নানা উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান নয়। এমনকি রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানোর প্রক্রিয়াও ঝুলে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফের নয়াপাড়া, লেদা এবং উখিয়ার কুতুপালংয়ে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরে এমএসএফ হল্যান্ড, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, কারিতাস, ব্র্যাক, ইউনিসেফ, হোপ ফাউন্ডেশন কক্সবাজার, মুক্তি কক্সবাজার, পালস বাংলাদেশ, অ্যাকশন কনট্রেলা ফেম (এসিএফ), শেড, ভার্ক, এনজিও ফোরাম, হ্যান্ডিক্যাফ, আরটিএম, টাই, মেডিসিন সেনস ফ্রনটিয়ার (এমএসএফ), ইউএনএইচসিআর, আইএমওসহ শতাধিক এনজিও কাজ করছে। এরা শিশু স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্যানিটেশন, নিউট্রেশন, ম্যান্টাল হেলথ, মাইগ্রেশন, খাদ্য, বাসস্থান নিয়ে কাজ করে থাকে। প্রতিবন্ধীদের নিয়েও কাজ করছে অনেকে। এরা মূলত মাথাপিছু সাহায্য-সহযোগিতাও দিয়ে থাকে। এদের ভরসায় ওপার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বড় অংশটি এখনো রয়েছে নির্ভাবনায়। এসব এনজিও কর্মকর্তাদের বড় কর্তারা রাতে কক্সবাজারে নামি হোটেলে অবস্থান করেন। তাদের সব কার্যক্রমের পেছনে রয়েছে বড় ধরনের প্রচারণা।

নয়াপাড়া, লেদা, কুতুপালং, বালুখালী আশ্রয় শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে আসার পরও রোহিঙ্গা পরিবারের জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণে এনজিওর নেয়া কোনো পদক্ষেপ কাজে আসছে না। নারী ও পুরুষরা এ ব্যাপারে উদাসীন। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যাপারে তাদের আগ্রহ নেই বললেই চলে। মূলত ঘরে বসে খাবার, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সমস্যা নিরসনের নিশ্চয়তা থাকায় রোহিঙ্গারা আয়েশে সময় কাটাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেকের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে গেছে ক্যাম্পের বাইরে। স্বর্ণসহ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে অনেকের।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট একদিনেই বাংলাদেশে প্রবেশ করে ১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। বর্তমানে ইউএনএইচসিআরের দেয়া তথ্যমতে, ৯ লাখ ১৯ হাজার রোহিঙ্গা ৩৫টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে ৭ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর। এতে শিশু রয়েছে ৬০ ভাগ। ক্যাম্প-১ পূর্ব কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩৭ হাজার ৯৪৫ জন, ক্যাম্প-১ পশ্চিম কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩৮ হাজার ৫ জন, ক্যাম্প-২ পূর্ব কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৫ হাজার ৬৫৯ জন, ক্যাম্প-২ পশ্চিম কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৩ হাজার ৫৮৭ জন, ক্যাম্প-৩ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩৫ হাজার ৫৯৯ জন, ক্যাম্প-৪ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৯ হাজার ৮৫৪ জন, ক্যাম্প-৪ সম্প্রসারিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৬ হাজার ৬৯১ জন, ক্যাম্প-৫ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৪ হাজার ৪৩৭ জন, ক্যাম্প-৬ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২২ হাজার ৭২৬ জন, ক্যাম্প-৭ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩৬ হাজার ৬৫২ জন, ক্যাম্প-৮ পূর্ব কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৯ হাজার ২৪৪ জন, ক্যাম্প-৮ পশ্চিম কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৩০ হাজার ৬৮৩ জন, ক্যাম্প-৯ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩২ হাজার ৮৪৬ জন, ক্যাম্প-১০ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৯ হাজার ৭৭১ জন, ক্যাম্প ১১- কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৯ হাজার ৬৬৮ জন, ক্যাম্প-১২ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৫ হাজার ৬৬২ জন, ক্যাম্প-১৩ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৪১ হাজার ৬১০ জন, ক্যাম্প-১৪ হাকিমপাড়া ৩১ হাজার ৯৩০ জন, ক্যাম্প-১৫ জামতলি ৪৯ হাজার ৫৯৩ জন, ক্যাম্প-১৬ ময়না ঘোনা ২০ হাজার ৮৫৯ জন, ক্যাম্প-১৭ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৬ হাজার ৩৪৪ জন, ক্যাম্প-১৮ কুতুবপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৭ হাজার ২৩ জন, ক্যাম্প-১৯ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২২ হাজার ৯৬৭ জন, ক্যাম্প-২০ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৬ হাজার ৭৭৭ জন, ক্যাম্প-২০ সম্প্রসারিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৭ হাজার ৭৩২ জন, ক্যাম্প-২১ চাকমারকুল ১৬ হাজার ৪৬৮ জন, ক্যাম্প-২২ উনচিপ্রাং ২১ হাজার ২০৬ জন, ক্যাম্প-২৩ শামলাপুর ১০ হাজার ৪৯৪ জন, ক্যাম্প-২৪এ ২৬ হাজার ০২৬ জন, ক্যাম্প-২৫ এ ২৫ হাজার ৭, ৪০৩ জন, ক্যাম্প-২৬ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৪০ হাজার ৪৪০ জন, ক্যাম্প-২৭ কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৪ হাজার ৯২১ জন, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৬ হাজার ৭১৩ জন, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সম্প্রসারিত নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২২ হাজার ৬৪০ জন। তবে স্থানীয়দের মতে কক্সবাজারে এখন রোহিঙ্গা প্রায় ২০ লাখ।

কক্সবাজারের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে আয়েশা বেগম গত ৩ বছর ধরে বসবাস করছেন। ১০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৮ ফুট প্রস্থের একটি ঘরে বসবাস করে তার ৫ সদস্যের পরিবার। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের খবর শুনলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাদের একটিই ভাষ্য, আমরা যাব না, আমাদের মেরে ফেলতে চাইলে মেরে ফেল। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে আমাদের কিছুই নেই। আমরা কেন যাব? এমন প্রশ্ন প্রায় সব রোহিঙ্গারই।

স্থানীয় লোকজন জানান, রোহিঙ্গাদের মাঝে ভাষাগত ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অধিকাংশ রোহিঙ্গাই এখন অনর্গল বাংলাদেশের ভাষা বলতে পারেন। তারা কি রোহিঙ্গা, নাকি বাংলাদেশের নাগরিক তা এখন বোঝা কঠিন। তাদের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বেড়েছে অসমাজিক কার্যকলাপ। কুতুপালং লম্বাশিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা আয়েশা সিদ্দিকা আক্ষেপ করে বললেন, রোহিঙ্গা বসতি তাদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি বলেন, এখন সব জায়গায় বাড়িঘর হয়ে গেছে। আমরা আগে যেখানে ক্ষেত খামার করে খেতাম, ওসব জায়গায় রোহিঙ্গাদের ঘর উঠছে। আমরা গরু-ছাগলও পালতে পারছি না। ক্ষেত-খামারও করতে পারছি না অনেক দিন। রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের জীবনযাপন এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা হোক।

এদিকে মায়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিষ্ঠুরতা থেকে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে যেসব রোহিঙ্গা টেকনাফ-উখিয়ায় এসেছে তাদের প্রায় সবাই হতদরিদ্র। এপারে আগে থেকেই আসা স্বজন ও পড়শিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাঁচার আশায় তারা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে দলবেঁধে আসেন। বিশেষ করে এপারের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত চারটি শরণার্থী শিবিরে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে যেসব এনজিও কাজ করছে তাদের ওপর ভরসা করেই আছে রোহিঙ্গারা। এপারে আসার পর পুরুষদের অনেকেই যেমন দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত; তেমনিভাবে মহিলারাও নানা কাজের চেষ্টা করছে। সব মিলিয়ে তারা অনেকটা ভালোই আছে। শুধু স্থানীয় লোক দেখলেই যত হা-হুতাশ।

অন্যদিকে টেকনাফের লেদায় অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে রয়েছে তিনটি মিনি সিনেমা হল। এলইডি টিভিতে ডিভিডি প্লেয়ারে ওইসব হলে প্রতিদিন তিন শিফটে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি সিনেমা চালানো হয়। স্থানীয় মো. আব্বাস, নুরুল ইসলাম ও ইয়াসিন এসব সিনেমা হলের মালিক। প্রতি শিফটে প্রতিজনকে ৫ টাকা টিকিট কেটে এসব হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে হয়। যার সিংহভাগ দর্শক রোহিঙ্গা শিশু। বাবা-মাই কাজের ব্যস্ততার কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় তাদের কোমলমতি শিশুদের সিনেমা হলে দিয়ে থাকে। অথচ এখন তাদের স্কুলে যাওয়ার বয়স। এনজিওগুলোর যেন এসব দেখভাল করার ফুসরত নেই।

অন্য একটি সূত্র মতে, রোহিঙ্গা সলিডারিটিস অর্গানাইজেশন (আরএসও) ছাড়াও রোহিঙ্গাদের উল্লেখযোগ্য সহায়তা দেয়া হয় সৌদি আরবভিত্তিক এনজিও রাবেতা আল আলম ইসলামির মাধ্যমে। ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার থেকে আসা ৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য এই সৌদি এনজিও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। সেই সময় কক্সবাজারের রামু উপজেলার ধোয়া পালং এলাকায় সরকারি ১০ একর জমি নিয়ে ওই এনজিও স্থাপন করে একটি হাসপাতাল। এই হাসপাতালের আড়ালে রোহিঙ্গাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণের অভিযোগ উঠলে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে এনজিওটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে রোহিঙ্গাদের সেবার নামে সীমান্ত এলাকায় আসে ইসলামি আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা (আইআইআরও), ইসলামি রিলিফ ওয়ার্ল্ডওয়াইড (আইআরডাব্লিউ), আল হারামাইন, ইত্তেহাদুল মুসলেমিন, ওয়ামি, মুসলিম এইডসহ আরো অনেক এনজিও। এর মধ্যে অনেক এনজিওর বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ উঠলে রোহিঙ্গা শিবিরে তাদের কার্যক্রমের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপরও এনজিওর আড়ালে প্রকাশ্যে ও গোপনে ‘রোহিঙ্গা সেবকদের’ তৎপরতা থেমে নেই।

হল্যান্ড, পাকিস্তান, সুদান, সৌদি আরব, চীন, আফগানিস্তান, তুরস্ক, কানাডা, জাপান ও মালয়েশিয়া থেকে নানা নামের এনজিও প্রতিনিধিদল সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে আসে। ক্যাম্পের ভেতরে তারা রোহিঙ্গা নেতাদের (মাঝি) সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি সাইদুল আজিম বলেন, এখানে তারা ভালো আছেন। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে। নিজ দেশে ফেরার ব্যাপারে তাদের কোনো চাপ নেই, তবে তারা দেশে ফিরতে চান। ইউনুস মাঝি জানান, তারা বাইরে কাজ করতে চান। সাহায্য নিয়ে আর চলতে চান না। নবী মাঝি বলেন, অনেকেই গোপনে ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে কাজ করছে। অনেকে অপরাধে জড়াচ্ছে। এখানে থেকে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ না থাকায় তারা দেশে ফিরতে চান। আবদুল জলিল, আবদুল্লাহ, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইদ্রিস, জোসেন জহর, হারুন, সেলিম, মজিবুল্লাহ, মুনসুর, কবির, জায়েদুল হকসহ বেশ কয়েকজন মাঝির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ক্যাম্পের ভেতরে কোনো সমস্যা না থাকলেও গাদাগাদি অবস্থা। জনসংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। নিজ দেশে ফেরাতে কোনো চাপ বা তাগিদ নেই তাদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App