×

সারাদেশ

রৌমারীতে তিন বোনকে খাওয়ানো হলো থুথু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২০, ০৪:৪১ পিএম

রৌমারীতে তিন বোনকে খাওয়ানো হলো থুথু

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম

রৌমারীতে তিন বোনকে খাওয়ানো হলো থুথু

প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির মামলায় নির্যাতনের শিকার হলেন মা-মেয়ে। এ ঘটনার রেশ না কাটতে কাটতেই এবার রৌমারীতে তিন বোন খাওয়ানো হয়েছে থুথু। একই পরিবারের তিন বোনকে থুথু খাওয়ানোর ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ হলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৫ আগস্ট) কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ছাটকড়াই বাড়ি গ্রামে। আর এ অমানবিক কাজটি করেন সাইফুল ইসলাম। তিনি দাঁতভাঙা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

নির্যাতিত ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিচারের নামে তিন বোনকে প্রকাশ্যে জোড় করে থুথু খাওয়ানোর ঘটনায় গ্রামের প্রভাবশালীদের ভয়ে-লজ্জায় তারা বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন। তিন বোনের মধ্যে বড় বোন বিবাহিত। মেজো বোনের বয়স ১৬ বছর ও ছোট বোনের বয়স ১২ বছর।

নির্যাতিত ওই পরিবারের অভিযোগ ১৪ আগস্ট সন্ধার দিকে পাড়ের চর গ্রামের খোকা ও রাকিব নামের দুই ছেলে ছাটকড়াই বাড়ি গ্রামে খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সেই সুবাধে ছেলে দুটি নির্যাতিত অসহায় ওই দিনমজুরের বাড়িতে আসেন।

[caption id="attachment_238895" align="aligncenter" width="700"] অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম[/caption]

এ সময় একটি কুচক্রিমহল দুই ছেলেকে আটক করে। পরে অবৈধ কাজে ওই বাড়িতে এসেছে এই অপবাদ দিয়ে ছেলে দুটির পরিবারের কাছে ১৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ভোর রাতে ছেলে দুটির অভিভাবক টাকা নিয়ে আসলে নির্যাতিত ওই পরিবারকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ১৩ হাজার টাকা ইনতাজল, জহরুল হক, মনিরুজ্জামান, মোকছেদ আলী, আজাহার আলী, নজির মাস্টার,শাহজাহান, দাঁতভাঙা ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বন্টন করে নেয়। এতেও ক্ষান্ত হয়নি ওই মাতাব্বরগণ। পরের দিন ১৫ আগস্ট সকাল ১০টায় জহরুল ইসলামের বাড়ির আঙিনায় বৈঠক বসে।

ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, দাঁতভাঙা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, মাতাব্বর আজাহার আলী , মোকছেদ আলীর নেতৃতে উক্ত সালিশে গ্রামবাসীর সামনে প্রকাশ্যে অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে ওই ৩ বোনকে জোর করে থুথু খেতে বাধ্য করায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছাড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

নির্যাতিত ওই তিন বোনের ছোট বোন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমার আব্বার কিছু দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। আমার মাকেও থুথু খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়। আমিও কোনোভাবে থুথু খাচ্ছিলাম না। তখন ইনতাজুলের ছেলে গোলজার আমার মাথা ঠেসে ধরে জোর করে থুথু খেতে বাধ্য করে। আমরা লজ্জায় অপমানে, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি । আমরা এই অপমানের বিচার চাই।

দাঁতভাঙা ইউ পি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, যদিও আমি সালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। থুথু খাওনোর ব্যাপারে গ্রাম্য মাতাব্বরদের বাঁধা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি।

রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ আবু মো. দিলওয়ার হাসান ইনাম জানান, এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) হয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত আাইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App