×

সারাদেশ

প্রতিবন্ধী কিশোরের ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৮ যুবক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২০, ০৫:৩০ পিএম

প্রতিবন্ধী কিশোরের ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৮ যুবক

গ্রেপ্তার ৮ যুবক। ছবি: প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাণ্যিজিক কেন্দ্র বাদাঘাটে শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোর (দেখতে শিশুদের মতো) শরিফকে নিয়ে টিকটকসহ বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ভিডিও টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ৮ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার ৫নং বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের শেখ আ. রহমানের ছেলে আলম শেখ (২৩), আনোয়ার হাসেন রুমানের ছেলে তারেক (২২), নাজিম উদ্দিনের ছেলে দীপু (২২), বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি (১৭), ৪নং বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মৃত আ. গফুরের ছেলে মোজাম্মেল হক (২২), হাবিবুর রহমান সংগ্রামের ছেলে সাগর (২১), দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পাগলপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে মনির মিয়া (১৯)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুলাইয়ের শেষের দিকে উপজেলার বাণ্যিজিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের সততা স্টোরের মোজাম্মেল হকের ফেসবুক আইডি থেকে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিশোর শরিফের ছবি ও একটি ভিডিও আপলোড করা হয়।

ওই ভিডিওতে শরিফ জানায়, বাদাঘাটের কয়েক যুবক তাকে জোরপূর্বক মদ খাইয়ে বিভিন্ন রকমের টিকটক ভিডিও তৈরি করে তা ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে। শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোর শরিফকে দিয়ে দিয়ে এমন ভিডিও তৈরি করে বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করায় জেলা সদরসহ গোটা উপজেলায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

বিষয়টি সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পিপিএমের নজরে আসলে তার দিক নির্দেশনায় তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান ও বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মাহমুদুল হাসান বিষয়টি গোপনে তদন্ত শুরু করেন।

রবিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে শরিফের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ভিডিও ভাইরালের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে উপজেলার ৫নং বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের শেখ আ. রহমানের ছেলে আলম শেখ (২৩), আনোয়ার হাসেন রুমানের ছেলে তারেক (২২), নাজিম উদ্দিনের ছেলে দীপু (২২), বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি (১৭), ৪নং বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মৃত আ. গফুরের ছেলে মোজাম্মেল হক (২২), হাবিবুর রহমান সংগ্রামের ছেলে সাগর (২১), দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পাগলপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে মনির মিয়া (১৯) আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

ওই রাতে আটকদের এবং ভিকটিম শরিফকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে আটকদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। রবিবার রাতে ভিকটিমের বড় ভাই শামীমের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

শরিফ মিয়া (১৩) উপজেলার ৫নং বাদাঘাট ইউনিয়নের ঢালারপাড় (লাউড়েরগড়) গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। ৯ ভাই বোনের মধ্যে শরিফ সাত নম্বর।

শরিফের মা জানিয়েছেন, জন্মের সময়ই শরিফ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা ছোট ছিল। স্থানীয় ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে অনেক টাকা পয়সা খরচ করেও শরিফকে স্বাভাবিক করা যায়নি। ছোটবেলা থেকেই সে বাড়ির বাইরে থাকে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাড়ি নেয়া যায় না।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শরিফের বড় ভাই শামীম বাদী হয়ে আটক ৮ জন এবং আরো দুইজন পলাতককে আসামি করে মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, ভিকটিমের বড় ভাই শামীম বাদী হয়ে আটক ৮ জন ও পলাতক আরো দুই জনসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটকদের সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App