×

মুক্তচিন্তা

প্রতারণা বন্ধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২০, ১০:১৫ পিএম

আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতির ব্যবসা। মানি লন্ডারিং, অর্থ আত্মসাৎসহ নানামুখী প্রতারণার অভিযোগে নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলো তারপরও থেমে নেই। অবৈধভাবে বিক্রি করছে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য। এমনকি অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। খোদ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জমজমাট হয়ে উঠছে অবৈধ এমএলএম প্রতারণা। সর্বশেষ রাজধানীর বাড্ডায় গ্লোবাল গেইন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি ভুয়া এমএলএম কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে গত ১৩ আগস্ট ৮ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। প্রতিষ্ঠানটি ১৩ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডেসটিনি গ্রুপের অনিয়ম-দুর্নীতি ও প্রতারণার ফাঁদ ধরা পড়ার পর সরকার বিষয়টি প্রথম আমলে নেয় ২০১২ সালে। ডেসটিনি, যুবক, ইউনিপেটুসহ শতাধিক কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবসার নামে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে এমএলএম ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। এতে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া বহুধাপ বিপণন কার্যক্রম চালানো যাবে না; যেসব প্রতিষ্ঠানের এ কার্যক্রম রয়েছে, আইনটি পাসের পর ৯০ দিনের মধ্যে তাদের লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ এ কার্যক্রম চালালে তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা হবে। এ আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা করা যায় না। সরকারের অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আইন পাসের পরও নতুন নতুন নামে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করছে অনেকে। এতে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। গতকালের ভোরের কাগজের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০২ সালে ডেসটিনিসহ দেশে এমএলএম কোম্পানি ছিল ১৬টি। ২০০৬ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪টিতে। বর্তমানে দেশে ২ শতাধিক এমএলএম কোম্পানি কাজ করছে। কোম্পানিগুলো প্রতারণার ধরন পাল্টে ই-কমার্স, ই-বিজনেস ও ডিরেক্ট টেলিমার্কেটিং, ক্যাশলেস সোসাইটি প্রভৃতি নামে বিভিন্ন ‘এমএলএম কোম্পানি’ গড়ে উঠেছে। কোনো কোনো কোম্পানি ফুড সাপ্লিমেন্ট, প্রসাধনসামগ্রী ও হারবাল ওষুধ বিপণনের নামে এমএলএম কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব পণ্যের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো সাধারণ মানুষ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিগুলো যে ব্যবসার নামে সাধারণ মানুষ তথা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আগেও হাতিয়ে নিয়েছে, সেই খবর আর নতুন নয়। প্রতারণার অভিযোগে সরকার এমএলএম বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেছিল। আশা করা হয়েছিল এ পদক্ষেপে কাজ হবে। মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করার অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ হবে। এগুলো দেখার দায়িত্ব যাদের তাদের ভ‚মিকা কী? প্রশাসনের নীরবতা প্রতারিত হচ্ছে বিশেষভাবে নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। আমরা চাই, প্রতারণা বন্ধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করবে সরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App