গ্রেপ্তারের পর এক পোশাকেই ফিরতে হলো রায়হানকে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২০, ০৫:৫২ পিএম
মালয়েশিয়া সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা বলায় গ্রেপ্তার হওয়া রায়হান কবির জানিয়েছেন, একটি পোশাক পরেই ছিলেন গ্রেপ্তার হওয়া থেকে দেশে ফেরা পর্যন্ত। কিছুই আনতে পারেননি সেখান থেকে। বিমানবন্দরে আসার পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাকে নতুন জামা পরতে দেন। তবে গ্রেপ্তার করে শারীরিক নির্যাতন না করলেও চরম মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে জানান রায়হান কবির।
শনিবার (২২ আগস্ট) ভোরে বাসায় এসে পৌঁছান তিনি। ছোট থেকেই প্রতিবাদী রায়হান দেশে ফেরায় তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আর রায়হান সেখানে তার তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনার পাশাপাশি তার ফেরত আনার ব্যাপারে সহযোগিতা করায় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এরআগে রাত ১টায় মালয়েশিয়ান এয়ালাইন্সের একটি বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। এ সময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মকর্তা শরিফুল হাসান খান ও রায়হানের বাবা মো. শাহ আলম বিমানবন্দরে তাকে রিসিভ করেন। পরে ইমিগ্রেশনসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বাসায় ফিরেন তিনি।
রারায়হান কবির জনান, দেশটিতে অবস্থানরত অবৈধ শ্রমিকদের অভয় দিয়ে করোনা পরীক্ষা করার ঘোষণা দেয় সরকার। পরবর্তী সময়ে সেই শ্রমিকদের গ্রেফতার করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখাসহ নানা নিপীড়ন চালায়। সেই ব্যাপারটি তুলে ধরে তার প্রতিবাদ করার কারণেই সরকারের রোষানলে পড়তে হয় আমাকে।
গত ৩ জুলাই ‘লকড আপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। ওই প্রতিবেদনে লকডাউন চলাকালে সে দেশের সরকারের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি নিপীড়নমূলক আচরণ ফুটে ওঠে। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলেন রায়হান। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর রায়হানকে মোস্ট ওয়ান্টেড ঘোষণা করে গত ২৪ জুলাই গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। রায়হানকে গ্রেফতার নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। এদিকে, গ্রেফতারের পর দুই দফায় ২৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে রায়হানের বিরুদ্ধে কোনও চার্জ গঠন করতে পারেনি দেশটির পুলিশ। পরে পাঁচ বছরের জন্য দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ২১ আগস্ট রাতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে।