×

জাতীয়

হামলাকারীদের শাস্তি দেখে যেতে চান মাহবুবা পারভীন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২০, ১০:০৫ এএম

হামলাকারীদের শাস্তি দেখে যেতে চান মাহবুবা পারভীন

মাহবুবা পারভীন

আজ সেই ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় নৃশংস গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে শরীরে ১ হাজার ৭৯৮টি স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছেন সাভারের মাহবুবা পারভীন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের সেই জনসভায় ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলাবিষয়ক সহসম্পাদক মাহবুবা পারভীন ছিলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানের পাশেই। ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানের পাশে যে ৩ জন মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন তাদেরই একজন সাভারের মাহবুবা পারভীন। মাহবুবা পারভীনকে মৃত ভেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিল। ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আশিষ কুমার মজুমদার সেখানে লাশ শনাক্ত করতে গেলে মাহবুবা পারভীনকে জীবিত দেখতে পান। ৭২ ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসে।

দেশে তার চিকিৎসা ভালো না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে কলকাতায় পিয়ারলেস হাসপাতালে পাঠান। সেই হাসপাতাল থেকে তাকে জানানো হয়েছিল শরীরে ১ হাজার ৮০০ স্পিন্টার রয়েছে। এর মধ্যে মাথার ২টি স্প্লিন্টার তাকে অনবরত যন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যেই তিনি পাগলের মতো হয়ে যান। এরই মাঝে তার পা থেকে ২টি স্প্লিন্টার অপারেশন করে বের করা হয়।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার কোনো খোঁজখবর নেন না। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেহের মধ্যে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে আর্থিক ও মানসিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন পারভীন। ২১ আগস্ট এলেই এর ভয়াবহ স্মৃতি মনে পড়লে এখনো আঁতকে ওঠেন, কান্নায় চোখ-মুখ ভিজে যায় তার। ওই দৃশ্য মনে করলে ভয়ে তার দেহ অবশ হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে তিনি আর স্মৃতিচারণ করতে চান না।

তিনি আরো বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতেই এই হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। তাদের কারণেই আজ আমাকে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছিলাম, আমাকে যারা পঙ্গু বানিয়ে হুইল চেয়ারে বসিয়েছে, আল্লাহ একদিন তাদেরও হুইল চেয়ারে বসাবে। সেই দিনও দেখেছি হুইল চেয়ারে করেই খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাসায় যেতে হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা জেলা (উত্তর) আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মাহবুবা পারভীন মৃত্যুর আগে এ জঘন্য হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখে যেতে চান।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সাভারের নেতাকর্মীদের বাড়ি-গাড়ির অভাব না থাকলেও আহত মাহবুবা পারভীনকে অন্যের সহায়তায় রিকশা কিংবা বাসে যাতায়াত করতে হয়। এ বিষয়ে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, ওই হামলায় যারা পঙ্গুত্ববরণ করেন তাদের মধ্যে সাভারের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রী মাহবুবা পারভীনও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করেই চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানসহ আমরা সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগ সব সময় মাহবুবা পারভীনের খোঁজখবর রাখছি। উল্লেখ্য, তার স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট (অব.) এম এ মাসুদ ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর স্ট্রোক করে মারা যান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি মাসে চিকিৎসা খরচের জন্য ১০ হাজার টাকা দিচ্ছেন এবং এককালীন ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন। এ থেকে যে টাকাটা আসে তা দিয়ে চলে তার সংসার খরচ। তাছাড়া বসবাস করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ১৪০০ স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App