×

আন্তর্জাতিক

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সংযোগ বাড়ানোর তাগিদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২০, ০৮:১০ পিএম

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সংযোগ বাড়ানোর তাগিদ

বাংলাদেশ ভারত ওয়েবিনার

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাছাড়া সমৃদ্ধ অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য সড়ক, রেল, জল ও বিমানপথে ঘটাতে হবে রূপান্তর।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) ভারতের হাইকমিশন ও ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি যৌথভাবে আয়োজিত ‘সমৃদ্ধ অগ্রগতি ও উন্নয়েনের জন্য সংযোগ’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সড়ক, রেলপথ এবং জলপথে সংযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে উদীয়মান ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেয়ার লক্ষ্যে এ ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়।

ওয়েবিনারে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের আওতাভুক্ত ট্র্যাভেল ব্রিজ বা করোনা করিডোর; চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি প্রদান করে নতুন উপকূলীয় শিপিং চুক্তি; বাইল্যাটেরাল ভ্যালু চেইন ইনিশিয়েটিভের (বিভিসিআই) অধীনে দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত বাণিজ্য; চলমান যোগাযোগ প্রকল্প যেমন কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন এবং আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ এবং আরও বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়।

ওয়েবিনারে দুই দেশের মধ্যকার দৃঢ় সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাবের উল্লেখযোগ্য কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন অন্যতম বক্তা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিশ্বে এমন অন্য আর দুটি দেশ নেই, যারা আমাদের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ বন্ধনে আবদ্ধ। কোভিড-১৯ সংকট কমিয়ে আনা এবং সহায়তার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে উভয় দেশের যোগ্য নেতৃত্বের মূল্যবান ভাবনাই আমাদের বর্তমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিফলন।

রেল ও জলপথের মাধ্যমে কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে উদ্ভূত উদ্ভাবনী বাণিজ্য সরবরাহ ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, স্থলবন্দরে যখন বাণিজ্য চলাচল বন্ধ ছিল তখন পেট্রাপোল-বেনাপোল, রাধিকাপুর-বিরল, গেদে-দর্শনা এবং রহনপুর-সিংহাবাদ এই চারটি রেল যোগাযোগের মাধ্যমে বৃহত্তর কার্গো চলাচল বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ ট্রেড (অভ্যন্তরীণ নৌপথ বাণিজ্য) ও ট্রানজিট (পিআইডাব্লটিটি) প্রোটোকলের দ্বিতীয় সংযোজনী দ্বারা চালু হওয়া জল সংযোগটি সোনামুড়া-দাউদকান্দি ও রাজশাহী-গোদাগীর-ধুলিয়ানের মধ্যে আরিচা পর্যন্ত বর্ধিত অতিরিক্ত সংযোগ এবং পোর্টের আরও পাঁচটি অতিরিক্ত পোর্টস অব কল অন্তর্ভূক্ত রয়েছে, যা দু’দেশের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। যার ফলে, গার্ডেন রিচ কলকাতা থেকে একটি চালান পানগাঁও পৌঁছেছিল মাত্র ৭ দিনেই।

দুই দেশের মধ্যকার যোগাযোগ উন্নয়নের লক্ষ্যে চলমান প্রকল্পসমূহের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার এবং ওয়েবিনারের অন্যতম বক্তা রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেন, আমরা অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি নির্ধারণ এবং আসিয়ানের উদ্যোগকে শক্তিশালী করার জন্য সবসময় বাংলাদেশের দিকেই ঘুরে তাকিয়েছি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সুবিধার্থে আমাদের সীমান্তগুলোতে যাতে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা বের করে আনা যায় সে লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন শাখাসহ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা যেমন এফবিসিসিআই, আইএমসিসিআই, সিসিসিআইয়ের মতো সংগঠনগুলোর সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

ওয়েবিনারের সভাপতি ও ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, দু’দুটি বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া একটি মহাদেশ তার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সীমানা উন্মুক্ত করে দিয়ে দক্ষ যোগাযোগ স্থাপন করেছে, যা ঐ দেশগুলোকে সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করেছে। ভারত ও বাংলাদেশের মতো দেশ, যাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে এমন দেশের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধুত্ব হওয়া সে তুলনায় অনেক বেশ সহজ হওয়া উচিত।

ওয়েবিনারে অংশ নেয়া বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য আমরা মন্ত্রিসভা পর্যায়ে বেশ কয়েকটি নতুন রুটের অনুমতি নিয়েছি, এমনকি যা আমরা নেপাল, মায়ানমার, চীন এবং প্রতিবেশী অন্যান্য অঞ্চলেও প্রসারিত করছি। তবে ভারত সবচেয়ে বড় বন্ধু হয়ে আমাদের পাশে ছিল এবং আমাদের সহযোগিতামূলক একতাই পূর্বের বাণিজ্যকে আসিয়ানের মতো শক্তিশালী করতে পারে।

ওয়েবিনারের আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবীর; চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (বিআইডব্লুটিএ) সদস্য (ফাইন্যান্স) নুরুল আলম প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App