×

আন্তর্জাতিক

মালির প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী আটকের পর পদত্যাগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২০, ১২:৪৬ পিএম

মালির প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী আটকের পর পদত্যাগ

মালিতে সেনা বিদ্রোহ/ছবি: ইন্টারনেট

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক বাহিনীর একাংশের বিদ্রোহের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার আটকের পর এক টেলিভিশন ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা। ভাষণে তিনি সরকার ও পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অংশ যদি নিজেদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সরকারের ইতি টানতে চায়, তাহলে কী আমার সামনে পদত্যাগ ছাড়া আর কোনও বিকল্প আছে? আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনো রকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না।’

ওই টেলিভিশন ভাষণের আগে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা এবং প্রধানমন্ত্রী বোউবোউ সিসেকে আটক করে বিদ্রোহী সেনারা। আটকের পর তাদের রাজধানী বামাকোর একটি সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।

মালির এই অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশ এবং দেশটির সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স।

মালির সেনাদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ এবং জিহাদিদের সঙ্গে অব্যাহত লড়াই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। সেই সঙ্গে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের ওপরও অনেকে সন্তুষ্ট নয়।

২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো বিজয়ী হন কেইতা। কিন্তু দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় তার ওপর অনেকের ক্ষোভ তৈরি হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বেশ কয়েকবার বড় ধরণের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রক্ষণশীল মুসলিম ইমাম মাহমুদ ডিকোর নেতৃত্বাধীন নতুন একটি জোট দেশে সংস্কারের দাবি তুলেছে। কেইতা তাকে যৌথ সরকার গঠনসহ নানা প্রস্তাব দিলেও মাহমুদ ডিকো তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বিদ্রোহ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

মালির কাটি সামরিক ঘাটির ডেপুটি কমান্ডার কর্নেল মারিক ডিয়াউ এবং জেনারেল সাদিও কামারা এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বামাকো থেকে বিবিসি আফ্রিকান সার্ভিসের সাংবাদিক আবদাউল বা।

বামাকো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের এই সামরিক ঘাঁটির দখল নেওয়ার পরই বিদ্রোহী সেনারা রাজধানীতে পৌঁছায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কেইতার পদত্যাগের দাবিতে জমায়েত হওয়া লোকজন সেনাসদস্যদের স্বাগত জানায়।

মঙ্গলবার দুপুরের পর তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে থাকা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী- দুই জনকেই গ্রেফতার করে।

প্রেসিডেন্টের ছেলে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীকেও আটক করা হয়েছে। তবে এই বিদ্রোহে দেশটির কত সৈনিক অংশ নিয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া

বিদ্রোহের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ১৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ইকোনমিক কম্যুনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস ঘোষণা করেছে যে, তারা মালির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে, সব ধরণের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করবে এবং জোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে আপাতত মালি বাইরে থাকবে।

দেশটির সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার আলোচনায় বসবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

মালির সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। সেনাদের ব্যারাকে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্যারিস। সূত্র: বিবিসি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App