×

মুক্তচিন্তা

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২০, ০৬:২৯ পিএম

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটতে হবে

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে যার নাম সর্বাধিক উচ্চারিত হয় তার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সাল থেকেই রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় বঙ্গবন্ধুর। তারপর সময়ের পরিক্রমায় তিনি কাজ করেছেন এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো নেতাদের সঙ্গে। শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু কিংবা বিশ্ববন্ধুর পথটা একদিনে তৈরি হয়নি। যেখানেই অন্যায় দেখেছেন, দুর্বলের প্রতি সবলের নির্যাতন দেখেছেন সেখানেই প্রতিবাদ করেছেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রায় সময় তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। তিনি তার ৫৪ বছরের জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাগারে ছিলেন, যা তার মোট জীবনের এক-চতুর্থাংশ। বঙ্গবন্ধু স্কুলের ছাত্রাবস্থায় ১৯৩৮ সালে সর্বপ্রথম কারাগারে যান। ওই সময় তিনি ৭ দিন কারাভোগ করেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীরা অন্যায়ভাবে তাকে জেলে বন্দি করে রেখে তার পরিবার, দেশের মানুষ থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এই দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায়, প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে তার নাম পৌঁছে গিয়েছে। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) বাংলা বিভাগ ‘Greatest Bengalis of All Times’ শীর্ষক এক জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে শ্রেষ্ঠ বাঙালিদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান প্রথম নির্ধারিত হয়। এই পরিসংখ্যান দিয়ে তার জীবন, আদর্শ, ব্যক্তিত্বকে মাপা যায় না। তিনি পরিসংখ্যানেরও ওপরে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয় নিজ পরিবারের সঙ্গে। সেই হামলায় বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টে ভোর শেষে সকাল এসেছিল, সূর্যের আলো পৃথিবীর বুক ছুঁয়েছিল কিন্তু বাংলার সাধারণ মানুষের মনে যে অন্ধকার নেমেছিল তা আর আলোকিত করতে পারেনি। এখনো এত বছর পর বাঙালি অনুতাপে ভুগে জাতির পিতার মৃত্যুর। তারপর বহু সরকার এসেছে, বহু সরকার গিয়েছে কিন্তু কাক্সিক্ষত উন্নয়নের স্বাদ সাধারণ জনগণ পায়নি। প্রত্যেকেই নিজের পকেট দেখে গিয়েছে শুধু! সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান যে আদর্শে বিশ্বাস করতেন সে আদর্শে বিশ্বাসী বহু নেতা-নেত্রী আছেন, অনেক উদীয়মান নেতাও আছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিফলন দেখা যায় না তাদের মধ্যে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে রকম নীতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিয়েছিলেন সে রকম নীতি কাউকেই নিতে দেখা যায় না। উল্টো বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির গায়ে কালিমা লেপন করা হয়! বরগুনায় দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘এখনো কিছুসংখ্যক লোক, এত রক্ত যাওয়ার পরেও যে সম্পদ আমি ভিক্ষা করে আনি, বাংলার গরিবকে দিয়ে পাঠাই, তার থেকে কিছু অংশ চুরি করে খায়। এদের জিহ্বা যে কত বড়, সে কথা কল্পনা করতে আমি শিহরিয়া ওঠি। এই চোরের দল বাংলার মাটিতে খতম না হলে কিছুই করা যাবে না। আমি যা আনব এই চোরের দল খাইয়া শেষ করে দেবে। এই চোরের দলকে বাংলার মাটিতে শেষ করতে হবে।’ তার এই বক্তব্য প্রমাণ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার নীতির কথা। তিনি আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, ‘দেশ শাসন করতে হলে নিঃস্বার্থ কর্মীর প্রয়োজন। হাওয়া-কথায় চলে না। সেদিন ছাত্ররা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তাদের বলেছিলাম, আত্মসমালোচনা করো। মনে রেখো, আত্মসমালোচনা করতে না পারলে নিজকে চিনতে পারবা না। তারপর আত্মসংযম করো, আর আত্মশুদ্ধি করো। তাহলেই দেশের মঙ্গল করতে পারবা।’ আমাদের নিজেদের আত্মসমালোচনা মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা সবাই যদি তার আদর্শের চর্চা করি তাহলে বর্তমানে প্রকটিত হওয়া সমস্যাগুলো শিগগিরই কাটিয়ে উঠতে পারব।

ইকবাল হাসান শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

[email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App