×

জাতীয়

উন্নয়ন প্রকল্পে ১-২ শতাংশ হারে কমিশন: টিআইবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২০, ০৫:১০ পিএম

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮৬ শতাংশ সংসদীয় আসনে ঠিকাদার থেকে সরাসরি দলীয় তহবিলে (এককালীন) অথবা সংসদ সদস্যের একাংশ কর্তৃক ব্যক্তিগতভাবে সহকারীর মাধ্যমে নির্দিষ্টহারে (১%-২%) কমিশন নেয়া হয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ‘সংসদীয় আসনভিত্তিক থোক বরাদ্দ : অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৯ সালের মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ও ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বুধবার (১২ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় টিআইবি। টিআইবির মতে, সংসদ সদস্যের জন্য বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে আইন প্রণয়ন, উন্নয়ন কাজে তাদের মতামত ও পরামর্শ দেয়ার এখতিয়ার দেয়া থাকলেও এলাকার উন্নয়ন কাজে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও শুদ্ধাচার চর্চায় প্রতিবন্ধকতা তৈরিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। এ গবেষণায় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিআবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজেটি। টিমের সদস্যরা হলেন- মো. খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, জাফর সাদেক চৌধুরী, মো. আলী হোসেন, মো. গোলাম মোস্তফা, ইশরাত জাহান সাথী, সালমা ইয়ারাব। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৬ শতাংশ আসনে সরাসরি দলীয় তহবিলে (এককালীন) অথবা সংসদ সদস্যের একাংশ কর্তৃক ব্যক্তিগতভাবে সহকারীর মাধ্যমে নির্দিষ্টহারে (১%-২%) ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। সংসদ সদস্যের একাংশের জন্য স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতা চর্চা, নির্বাচনে ভোট নিশ্চিত করার চেষ্টা ও অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কার্যকর তদারকি, প্রকল্পের সার্বিক মূল্যায়ন এবং সংসদ সদস্যের সততা ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট আচরণবিধির অনুপস্থিতি অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে আরও উৎসাহিত করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের স্কিমসমূহের কাজে অন্যান্য প্রকল্পের মতোই বাস্তবায়নকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে নির্দিষ্ট শতকরা হারে কমিশন বাণিজ্য, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের চাঁদাবাজি বিদ্যমান। এই আর্থিক লেনদেনের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধার সমঝোতা সম্পর্ক কাজ করে, যেখানে ঠিকাদার অর্থের বিনিময়ে তার কাজের খুঁত লুকিয়ে লাভবান হন এবং বাস্তবায়নকারি ও তদারকি কর্তৃপক্ষ নিয়ম-বহির্ভূত আর্থিক-বাণিজ্য চালিয়ে যান। এক্ষেত্রে ঠিকাদাররা হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে আগে থেকেই নির্দিষ্ট হার অনুযায়ী নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ দিয়ে দেন। এটা নিয়ম হিসেবে তারা মেনে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, না হলে ঠিকাদারি করে তারা টিকে থাকতে পারবেন না। টিআইবি বলছে, কিছু কিছু এলাকায় সংসদ সদস্য স্বপ্রণোদিত হয়ে এলাকায় থাকাকালীন স্কিম বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে অথবা ফোন করে খোঁজখবর নেন। স্কিম বাস্তবায়নকালীন কাজ সম্পর্কিত অভিযোগ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো কোনো সংসদ সদস্য নিজে এসে কাজ বন্ধ করে দেন এবং কাজের মান ভালো করার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেন। তবে সংসদ সদস্যরা কাজ চলাকালীন মাঠে গিয়ে সব স্কিমের পর্যবেক্ষণ করতে না পারলেও কাজের শুরুতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা শেষে উদ্বোধন করতে আসেন। আবার কোনো কোনো সদস্য স্কিম বাস্তবায়নের অগ্রগতি তদারকির তুলনায় এর থেকে তার লভ্যাংশ প্রাপ্তির প্রতি বেশি আগ্রহী হন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App