×

সাহিত্য

বাঁচতে হলে সবকিছু সহজভাবে নিতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২০, ০৯:৪১ এএম

বাঁচতে হলে সবকিছু সহজভাবে নিতে হবে

খুরশীদ আলম

বিশেষ সাক্ষাৎকার খুরশীদ আলম সংগীতশিল্পী

খুরশীদ আলম। অনেক কালজয়ী গানের শিল্পী। সংগীত জীবনে পথ চলা চার দশকের। ৪০০’র অধিক গান করেছেন তিনি। ‘পাখির নীড়ের মতো দুটি চোখ তোমার’ ‘চুরি করেছো আমার মনটা’ ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘মাগো মা ওগো মা’, ‘নাচ আমার ময়না’, ‘ওই প্রেমের দরজা খুলো না’ এমন বহু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন শিল্পী খুরশীদ আলম। খ্যাতিমান এই শিল্পী ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রে প্রথম ‘আগন্তুক’ ছবিতে প্লেব্যাক করেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। দীর্ঘ সংগীতময় জীবনে নানা পুরস্কারের পাশাপাশি তিনি পেয়েছেন একুশে পদক।

বরেণ্য এই শিল্পীর করোনাকাল কেমন কাটছে ভোরের কাগজের এমন প্রশ্নে চিরসবুজ খুরশীদ আলম বলেন, পাঁচ মাস ধরেই স্বেচ্ছাবন্দি আছি। এর মধ্যে সবচে বেদনার হচ্ছে আনিসুজ্জামান স্যার থেকে শুরু করে কাল (রবিবার) মারা গেলেন আলাউদ্দিন আলী। আমরা যেন শূন্য হয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটা চ্যানেলে কিছু প্রোগ্রাম করেছি।  প্রতিদিন গান শুনি। পাঁচটা খবরের কাগজ পড়ি। টেলিভিশন দেখি। এভাবেই দিন চলে যাচ্ছে।

করোনার এই সময়টাতে চেনা পৃথিবী কতটা বদলে গেছে জানতে চাইলে এই শিল্পী বলেন, আমার চেনা পৃথিবী পুরোটাই বদলে গেছে। পুরো সিস্টেমটাই যেন অচেনা লাগছে। এ মুহূর্তে সবচেয়ে প্রিয় ও কাছের মানুষটি মারা গেলেও কাছে যেতে পারবো না। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছি। যেমন আজাদ রহমানের জন্ম না হলে আমি খুরশীদ আলমের জন্ম হতো না। আমি এটা ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি। আজাদ রহমান মারা গেলে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ওই পর্যন্তই। তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানাতে যাওয়া হয়নি। মনে হচ্ছে আমরা ধীরে ধীরে সামাজিকতা বিমুখ হয়ে পড়ছি। এমনকি এখন মায়ের মৃত্যুতে ছেলে দূরে চলে যাচ্ছে। ছেলে মারা গেলে মা কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। একটা নিষ্ঠুর পরিস্থিতির শিকার আমরা।

কঠিন সত্য হচ্ছে- এই পৃথিবীতে বাঁচতে হলে সব কিছুকে সহজভাবে নিতে হবে। অমুকের দশটা গাড়ি আছে, আমার কেন হলো না। এই চিন্তা করলে ভালো থাকা যাবে না। শরীর ‘ডিটোরেট’ করবে। সুস্থ থাকা যাবে না। ভালো থাকাটা সম্পূর্ণ নিজের কাছেই। যেমন আমি মনে করি, হাঁটলে শরীর ভালো থাকে। তাই হাঁটি। সবসময় ভালো থাকার চেষ্টাটা আমার থাকে।

করোনার কারণে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা জানতে চাইলে গুণী এই শিল্পী বলেন, আমি গবেষক নই, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা সঠিকভাবে বলতে পারব না। তবে আমাদের সংগীতের লোকজনের ঘুরে দাঁড়ানো খুবই দুরূহ ব্যাপার। সবচে কষ্ট লাগছে যন্ত্রশিল্পী ও টেকনিশিয়ানদের জন্য। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়াও কঠিন। তবে সবাই যেন এই কঠিন দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠে, এই প্রত্যাশাই করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App