×

সাহিত্য

সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২০, ০৯:০৪ পিএম

সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রম

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রম

ছবি: ভোরের কাগজ।

মুজিববর্ষে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রমকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে উল্লেখ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, মুজিববর্ষ ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত গ্রন্থগুলোকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষে যে পাঠ কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে একটি নতুন, সৃজনশীল ও প্রশংসনীয় কর্মসূচি।

রবিবার (৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সভাকক্ষে ‘মুজিববর্ষ ও জাতীয় শোকদিবস ২০২০’ উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত চার মাসব্যাপী পাঠ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি গবেষক মফিদুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস ও অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর।

অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা তিনটি গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এর ওপর ‘পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই’ শিরোনামে ঢাকা মহানগরের ১০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের প্রধানদের হাতে বই তুলে দেয়া হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ১০টি বেসরকারি গ্রন্থাগারের সহযোগিতায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৫০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এটি শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ পাঠ কার্যক্রমকে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ৮০০টি গ্রন্থাগারের সহযোগিতায় সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, নতুন টাকার গন্ধ যেমন আমাদের আকর্ষণ করে, তেমনি নতুন বইয়ের গন্ধও আমাদের আকর্ষণ করে। এটি আমাদের জ্ঞান উদ্দীপ্ত আলোকিত পথের সন্ধান দেয় এবং মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে।

[caption id="attachment_236418" align="aligncenter" width="700"] ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

আয়োজনটা আকারে ছোট তাৎপর্যে বিশাল এমন মন্তব্য করে মফিদুল হক বলেন, বাংলাদেশে পাঠাগারের ঐতিহ্য একশ বছরেরও পুরনো। অনেক পাঠাগারই আছে শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য ধারণ করছে। আর সেই ঐতিহ্য বিংশ শতাব্দি পার হয়ে একবিংশ শতাব্দিতে এসেও সমাজ থেকে মরে যায়নি, মুছে যায়নি। কারণ সমাজে যে মানুষরা রয়েছে তারা মনে করেন, সমাজের মানুষদের নিয়ে আমাদের চলতে হবে, বেড়ে উঠতে হবে। এরকম একটা শক্তি যে সমাজের সে শক্তির উদ্বোধক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার জীবনব্যাপী যে সাধনা সেটার ব্যাপ্তি এবং গভীরতা এখনও আমরা বুঝে উঠতে পারিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে তিনটি গ্রন্থ নিয়ে পাঠাগার আন্দোলন শুরু হচ্ছে জাতির জনকের প্রতি যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে চাই সেখানে এরচে বড় এবং সার্থক কোনো কর্মসূচি আর হতে পারে না।

সাইফুল আলম বলেন, এই মাস শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করার মাস। এই মাসে রাষ্ট্রের পৃষ্টপোষকতায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে একটি রাজনৈতিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার অপপ্রয়াস নেয়া হয়েছিল। সেরকম একটি মাসে, জাতির পিতার তিনটি বই পড়ার উদ্যোগ অত্যন্ত সুদূর প্রসারী এবং সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, ছোটবেলায় স্কুলে পাড়ায় মহল্লায় দেয়াল পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজিন আমরা যেভাবে পেয়েছি আজকের কিশোর কিশোরীরা সেভাবে পায় কিনা জানি না। তারা টিভি মোবাইল কম্পিউটারের মধ্যে আত্মস্থ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, পরিবার এবং রাজনৈতিক শক্তির একটা বড় দায়িত্ব আছে। রাজনৈতিক শক্তি যেমন অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি তাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো মানবিক ভিত্তিগুলো প্রসারিত করার ক্ষেত্রটা তৈরি করে দেয়া।

গত ১৫ বছরে দেশ যেভাবে এগিয়ে গেছে এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানবিক মূল্যবোধের জায়গাটা আরো বলিষ্ট করা দরকার। এক্ষেত্রে পাঠাগার আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে নতুনভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই। যে বই মানুষের মনের দরজা খুলে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মিনার মনসুর বলেন, জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে আমরা ‘পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই’ শিরোনামে চার মাসব্যাপী ধারাবাহিক একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি নিয়েছি। লক্ষ্য হলো, গৃহবন্দি পাঠক -বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পাঠ্যবই বহির্ভূত সৃজনশীল ও মননশীল বই পৌঁছে দেয়া।

তিনি বলেন, এতকাল পাঠক পাঠাগারে এসেছে, এখন পাঠাগারই পাঠকের কাছে যাবে। করোনার কারণে যারা পাঠাগারে আসতে পারছেন না, সেইসব তরুণ পাঠকের কাছে স্বউদ্যোগে বই পৌঁছে দেবে আমাদের বেসরকারি পাঠাগারগুলো। শুধু তাই নয়, নানাভাবে তাদের উদ্বুদ্ধ করবে বই পাঠে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App