বৈরুতে খাদ্য সংকটের শঙ্কা, গৃহহীন তিন লাখ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২০, ০৯:১৯ এএম
লেবাননের রাজধানী বৈরুত লণ্ডভণ্ড করে দেয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় চার বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ১৩৭ ছাড়িয়েছে। আহত পাঁচ হাজারের বেশি। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় প্রায় তিন লাখ মানুষ। শহরটির অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এখনো। শহরটির গভর্নর মারওয়ান আবুদ জানান, বৈরুত শহরের অর্ধেকটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে বিস্ফোরণে লেবাননের মজুদ খাদ্যশস্যের ৮৫ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি মূলত আমদানি করা খাদ্যশস্যের ওপর নির্ভরশীল। এখনকার মজুত দিয়ে দেশটি বড় জোর আর এক মাস চলতে পারবে। এদিকে লেবাননে খাদ্যসামগ্রী, প্রাথমিক চিকিৎসাসামগ্রী ও মেডিকেল টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে লেবাননকে যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ।
বিস্ফোরণের কারণ এখনো নিশ্চিত না হলেও বন্দরে বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত রাখাই এজন্য দায়ী বলে মনে করছেন অনেকে। ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছে সেদেশের সরকার। তবে স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যম বলছে, বিস্ফোরণের আগে ঘটনাস্থলের ওপর ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। কেউ কেউ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ হতে দেখেছেন বলেও দাবি করেছেন। তবে দেশটির কর্মকর্তারা কোনো ধরনের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, মানুষজন যে আগুনের ফুলকি দেখেছে তা
ঝালাইকারের কাজের সময় সৃষ্টি হয়েছিল। মার্কিন চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস জানান, বৈরুতে হামলার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন এখনো নিশ্চিত নয়। তারা এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করছেন।
লেবানন সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরের গুদামে কয়েক বছর ধরে পড়ে থাকা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের কারণেই বিস্ফোরণ হয়েছে। ছয় বছর আগে জব্দ করা বিস্ফোরক এতদিন বন্দরের গুদামে কেন পড়ে ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশটির কাস্টমস প্রধান বাদ্রি দাহের বলেন, তার সংস্থা গুদাম থেকে ওই রাসায়নিক পদার্থগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য তাগাদা দিলেও ‘কাজ হয়নি’। গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পর যে কমলা রংয়ের ধোঁয়ার মেঘ বৈরুতজুড়ে ছড়িয়ে যায়, সেটি নাইট্রেটের কারণে ঘটে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। বিস্ফোরণের কারণে বাতাসে বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে বলেও ধারণা তাদের। বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণে তিন দিনের শোক পালন করছে লেবানন। জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে দুই সপ্তাহের জন্য।
এদিকে নেদারল্যান্ডসের জাতিসংঘ সমর্থিত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাফিক হারিরির হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলার রায় ঘোষণা স্থগিত করেছে। আজ শুক্রবার এ রায় দেয়ার কথা ছিল।