×

জাতীয়

চলতি বছরেও চালু হচ্ছে না মেট্টোরেল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২০, ০৯:৩৯ এএম

চলতি বছরেও চালু  হচ্ছে না মেট্টোরেল
একটানা ২ মাসের বেশি সময় নির্মাণকাজ বন্ধ থাকার পরে আবার শুরু হলেও প্রকল্পের বিদেশি কর্মীরা এখনো ঢাকায় ফেরেনি। রেলের লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়নি
গত জুন মাসেই মেট্টোরেলের প্রথম অংশের কাজ শেষে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরুর টার্গেট ছিল। সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক এই মেগা প্রকল্পের কাজের গতি দেখে সবার ধারণা ছিলÑ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মেট্টোরেল চলতে শুরু করবে। কিন্তু মেট্রোরেলের সার্বিক কাজের ছন্দপতন ঘটিয়েছে করোনা ভাইরাস। একটানা ২ মাসের বেশি সময় নির্মাণকাজ বন্ধ থাকার পরে আবার শুরু হলেও প্রকল্পের বিদেশি কর্মীরা এখনো ঢাকায় ফেরেনি। রেলের লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়নি। এখনো জাপানে রেলের সব কোচ তৈরি হয়নি। ২টি কোচ তৈরির পর বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত শিপমেন্ট হয়নি। প্রথম অংশের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ বাকি সাড়ে ৪ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে কাজে গতি না ফেরায় চলতি বছরে মেট্টোরেলের যাত্রা শুরুর সম্ভাবনা কম। উপরন্তু, শুরুতে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও এখন কোয়ারেন্টাইন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক জানান, পরিকল্পনা মতোই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বেশ পিছিয়ে গেছি। এ কারণেই জুন মাসে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম অংশে রেল চলাচল শুরু করা যায়নি। ২ মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর উভয় অংশেই কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু জনবল স্বল্পতার কারণে কাজে আগের মতো গতি ফেরেনি। বিমান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা এখনো ঢাকায় এসে পৌঁছেনি। আসেনি রেলের কোচ। তবে আমরা চলতি বছরের মধ্যে প্রথম অংশের রেল চলাচল শুরু করার চেষ্টা করছি। তিনি আরো জানান, এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করতে হচ্ছে। প্রকল্পের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ছুটিতে যাওয়া কর্মীদের ফিরে আসার পর কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। সূত্র জানায়, করোনার কারণে গত মার্চে প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় স্থায়ী রেললাইন বসানোর প্রস্তুতি চলছিল। ২ মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আবার উভয় অংশে কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রকল্পে জনবল সংকট চলছে। এ কারণে এখনো পূর্ণ গতিতে কাজ শুরু হয়নি। এই প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে জাপানি নাগরিকরা রয়েছেন। ১২ জন জাপানি নাগরিক দেশে চলে যান। বিমান যোগাযোগ শুরু না হওয়ায় তারা এখনো ফিরতে পারেননি। রেলের জন্য ২টি কোচ ইতোমধ্যেই জাপানের কোম্পানিতে তৈরি হয়েছে। এই ২টি কোচ পৌঁছার পর পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নৌ-যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কোচ ২টি আনা সম্ভব হচ্ছে না। কবে নাগাদ আনা যাবে তা এখনো নিশ্চিত নই। কিছু ইতালি ও ভারতীয় প্রকৌশলীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তারা মেট্টোরেলের স্টেশনের ভায়াডাক্ট ও ফেব্রিকেশনের কাজ করছেন। অন্যান্য বিভিন্ন সেকশনের কাজ এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম অংশের ১১ কিলোমিটার পিলারের উপর রাস্তা তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই অংশের ৭২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের কাজও শুরু হয়েছে। পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, করোনার কারণে আগের পরিকল্পনা বদলে বিকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। জুলাই মাসের মধ্যেই কাজের গতি ফেরানোর চেষ্টা চলছে। সব কাজ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে। প্রকল্পের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এখন যারা কাজে যোগ দিচ্ছেন তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ৭০ নম্বর পিলার এলাকায় ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। যারাই ছুটিতে যাবেন তারা কাজে ফিরে এলে এই ফিল্ড হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কাজে যোগ দিতে পারবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App