×

সারাদেশ

মাদারীপুরের মিজানুরের বাড়িতে শোকের মাতম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২০, ০৮:৫১ পিএম

মাদারীপুরের মিজানুরের বাড়িতে শোকের মাতম
মোর বাবারেতো আর জীবিক পামুনা তাই লাশটা একটু দেখতে চাই। মোর বাবায় জানি কত কষ্ট পাইয়া মইর‌্যা গেছে। আমাওে বাবাওে তোমরা আইনা দাও। এ ভাবেই বিলাপ করছিল মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) লেবাননে বোমা বিস্ফোরনে মারা যাওয়া মিজানুর রহমানের বাবা জাহাঙ্গীর খান। তিনি বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। একমাত্র কর্মক্ষম ছেলের মৃত্যুর খবরে মিজানুরের অসুস্থ্য মা এখন বাকরুদ্ধ। শুধু কাঁদছে আর কাঁছে। কেই পারেনি তাদের কান্না থামাতে। শোকাহত পরিবারে গগন বিদারী আত্মচিৎকারে পুরো এলাকা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ছে। দেশের বাড়িতে মিজানুরের মারা যাওয়ার খবর আসলে পুরো পরিবারসহ গ্রামের মানুষ শোকের ছায়া নেমে আসে। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের কাজীকান্দি গ্রামের লেবাননে নিহত মিজানুর রহমান খান (২৫) এর বাড়িতে বইছে শোকের মাতম। পরিবারের ভরনপোশনের একমাত্র বড় সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবারসহ গ্রামের মানুষ এখন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। সরেজমিন নিহত মিজানুরের বাড়ি গিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লেবাননের বৈরুত শহরে যায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের কাজীকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে মিজানুর রহমান খান। সেখানে একটি হোটেলে চাকুরী করতো মিজান। মঙ্গলবার লেবাননে বোমা বিস্ফোরনে মারা যায় মিজানুর। দেশের বাড়িতে মিজানুরের মারা যাওয়ার খবর আসলে পুরো পরিবারসহ গ্রামের মানুষ শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। ঢাকায় একটি কারখানায় মিজানুরের মা চাকুরী করে কিছু টাকা জমায়। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে এবং দুই লাখ টাকা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মোট ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে মিজানুর লেবাননে যায়। পরিবারের সদস্যদের একটু সুখের আশায় লেবননে পাঠানো হয় মিজানুরকে। ভাই-বোনের মধ্যে মিজানুর সবার বড়। মিজানুররা তিন ভাই ও এক বোন। তার স্ত্রী ও তিন বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ঢাকায় কারখানায় কাজ করা অবস্থায় মিজানুরের মায়ের দুই হাতের ৬টি আগুল পুড়ে যায়। তিনি এখন অসুস্থ্য অবস্থায় গ্রামের বাড়িতেই থাকছেন। বাবা কৃষি কাজ করে কোন মতে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছে। বাকরুদ্ধ কন্ঠে মিজানুরের বাবা জাহাঙ্গীর খান বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আমার সাথে শেষ কথা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের মিজান বোমা বিস্ফোরনে মারা গেছে। আমি আমার সন্তানের লাশ দ্রুত দেশে ফেরত চাই। কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম মৃধা বলেন, মিজানুরের মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। ওর পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতাসহ যত ধরনের সহযোগিতা লাগবে আমি তা করবো। লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্যেও আমি সর্বাত্মা চেষ্টা করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App