×

সাহিত্য

‘জয়বাংলা’র বজ্রকণ্ঠ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২০, ০৯:৪৬ এএম

‘আমরা বন্দী থাকব না তোমাদের পকেটে পকেটে, আমরা বেরিয়ে পড়ব, আমরা ছড়িয়ে পড়ব শহরে, গঞ্জে, গ্রামে- দিগন্ত থেকে দিগন্তে। আমরা বার বার জ্বলি, নিতান্ত অবহেলায়....কিন্তু তোমরা তো জানো না, কবে আমরা জ্বলে উঠব- সবাই- শেষবারের মতো!’ কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘দেশলাই কাঠি’ কবিতার মতোই বাঙালিরা নিতান্ত অবহেলায় জ্বলছিল পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই। ১৯৪৮, ’৫২, ‘৫৪, ’৬২, ’৬৬, ’৬৯ এ জ্বলেছে বারুদের মতোই। দীর্ঘ ও প্রলম্বিত সংগ্রামে কখনও মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার করার সংগ্রামে, কখনও ছাত্রদের বিজ্ঞানভিত্তিক, সার্বজনিন শিক্ষার জন্য সংগ্রাম, কখনও বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার তথা স্বায়ত্বশাসন আদায়ের জন্য সংগ্রাম। কখনও বা সামরিক শাসন বিরোধী সংগ্রাম, কখনও অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের সংগ্রামে। এসব রক্তঝরা বেগবান আন্দোলন প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল এক মহাজাগরণের, দীর্ঘ দিনের রক্তাক্ত সিঁড়ি পেরিয়ে সবাই একসঙ্গে জ্বলে ওঠেছিল একাত্তরে।

সেই ৫০ বছর আগের কথা। ১৯৭০-এ ঐতিহাসিক নির্বাচনে বাংলার মানুষের ভোটে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনার আড়ালে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহার কারণে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে ৬ মার্চ পর্যন্ত ঘোষিত হরতাল, অসহযোগ আন্দোলন চলে। ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পল্টনের জনসমাবেশে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৬ মার্চের মধ্যে যদি সরকার তার অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ৭ মার্চ সকাল থেকেই চারদিক থেকে মানুষের ঢল নামে রেসকোর্স ময়দানে। ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা’ ‘তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ,’ স্লোগানে মুখরিত হয় রেসকোর্স ময়দান। পরাধীনতার দীর্ঘ প্রহর শেষে পুরো জাতি তখন স্বাধীনতার জন্য অধীর অপেক্ষায়। শুধু প্রয়োজন একটি ঘোষণার, একটি আহ্বানের। অবশেষে এলো সেই ঘোষণা। অগ্নিঝরা একাত্তরের এদিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নামক মহতী কাব্যের স্রষ্টা কবি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্জ্রগম্ভীর কণ্ঠ থেকে ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মুক্তিপাগল জনতার মহাসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ওই ভাষণ থেকেই মূলত স্বাধীনতার অঙ্কুরোদগম ঘটে। নিজের দেশের হাজার বছরের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়ার অবশ্যম্ভাবী পরিণতির দিকে এগোতে থাকে বাঙালি।

দেখতে দেখতে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের বয়স ৫০- এ ঠেকেছে। সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। বিকৃতির নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রের আবহে বদলে ফেলার চেষ্টা হয়েছে স্বাধীনতার অনেক ইতিহাস। কিন্তু বদলানো যায়নি শুধু ১৯ মিনিটের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণটি। বিশ্বের অনেক মনীষী বা নেতার অমর কিছু ভাষণ আছে। বিশ্বের মধ্যে এই একটি মাত্র ভাষণ যা যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেজে চলেছে- কিন্তু ভাষণটির আবেদন আজও এতটুকু কমেনি। বরং যখনই প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ঐতিহাসিক ভাষণটি শ্রবণ করেন, তখনই তাদের মানসপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতার গৌরবগাথা আন্দোলন-সংগ্রামের মুহূর্তগুলো, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের আদর্শে।

স্বাধীনতার জন্য সারাদেশ থেকে ছুটে আসা পিপাসার্ত মানুষের ঢলে একাত্তরে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের চতুর্দিকে জনবিস্ফোরণ ঘটে। বিকেল ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই মানুষের ভিড়ে তিলধারণের ক্ষমতা হারায় সেদিনের রেসকোর্স। রাজধানী ঢাকার চতুর্দিকে ভারি অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সামরিক জান্তা রক্তচক্ষু নিয়ে প্রহরায়। আকাশে উড়ছে হানাদারদের জঙ্গি বিমান। মুক্তিপাগল বাঙালির সেদিকে ন্যূনতম ভ্রুক্ষেপ নেই। সবার শুধু অপেক্ষা তাদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু কখন আসবেন।

বেলা ঠিক সোয়া ৩টায় সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি আর মুজিব কোট পরিহিত বঙ্গবন্ধু যখন মঞ্চে ওঠেন তখন বাংলার বীর জনতা বজ্র নির্ঘোষে করতালি ও স্লোগানের মধ্যে তাকে অভিনন্দন জানান। এরপর সৃষ্টি হয় বাঙালির অমর কাব্য। বঙ্গবন্ধুর এই তেজোদীপ্ত ঘোষণাই ছিলো আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শত নিপীড়ন উপেক্ষা করে বীর বাঙালি অস্ত্র ধারণের পূর্বে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে এদিনই স্বাধীনতার ডাক দেয়া হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু ১৯ মিনিট তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ও ঐতিহাসিক ভাষণ শুরু করেন এভাবে, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সকলে জানেন এবং বুঝেন, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি, কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ অধিকার চায়।’

স্বাধীন পাকিস্তানের জন্মদাতাদের একজন শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসে বাংলার ইতিহাস শুধুই শোষণ-বঞ্চনার। বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির ন্যায্য হিস্যার ক্ষোভ ঝরে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে, ‘কী পেলাম আমরা? আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে- তার বুকের ওপরে হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু- আমরা বাঙালীরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি তখনই তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।’

একটু থেমে আবার বজ্রকণ্ঠে বললেন, ‘তাকে আমি বলেছিলাম, জেনারেল ইয়াহিয়াা খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কিভাবে আমার গরীবের ওপরে, আমার বাংলার মানুষের বুকের ওপর গুলি করা হয়েছে। কী করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে, কী করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তিনি বললেন, আমি নাকি স্বীকার করেছি যে, ১০ই তারিখে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স হবে। আমি তো অনেক আগেই বলে দিয়েছি, কিসের রাউন্ড টেবিল, কার সঙ্গে বসবো? যারা আমার মানুষের বুকের রক্ত নিয়েছে, তাদের সঙ্গে বসবো? হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘণ্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন, সমস্ত দোষ তিনি আমার ওপরে দিয়েছেন, বাংলার মানুষের ওপরে দিয়েছেন। ভায়েরা আমার, ২৫ তারিখে এসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি, ওই শহীদের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে আরটিসিতে মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারেনা। এসেম্বলি কল করেছেন, আমার দাবী মানতে হবে। ...তারপর বিবেচনা করে দেখবো, আমরা এসেম্বলিতে বসতে পারবো কি পারবো না। আমি, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই।’

এরপর পূর্ববর্তী কয়েকদিনের ঘটনাবলী, শাসক শ্রেণীর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়া এবং মুক্তির আকাঙ্খায় বাংলাদেশিদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সেদিন উত্তাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলার মুক্তিকামী জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এরপর যদি একটি গুলি চলে, এরপর যদি আমার একটা লোককেও হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।.... আমি যদি তোমাদের হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা সব বন্ধ করে দেবে।.... সৈন্যরা তোমরা ব্যারাকে থাক তোমাদের কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু আর তোমরা গুলি করার চেষ্টা কর না। সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না।....আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

প্রাণের মুজিবের স্বাধীনতার ডাকে রক্ত টগবগিয়ে ওঠে মুক্তিপাগল বাঙালির। মুহূর্তেই উদ্বেল হয়ে ওঠে জনতার সমুদ্র। মুহুর্মুহু স্লোগানে কেঁপে ওঠে বাংলার আকাশ। নড়ে ওঠে হাতের ঝাণ্ডায় গর্বিত লাল-সবুজ পতাকা, পতাকার ভেতরে সোনালী রঙে আঁকা বাংলাদেশের মানচিত্র। সেদিন বেতারে সরাসরি বঙ্গবন্ধু মুজিবের ঐতিহাসিক এই ভাষণটি প্রচারের কথা থাকলেও তা করতে দেননি পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা। কিন্তু মুখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ে শেখ মুজিবের নির্দেশ, ‘আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, আদালত, ফৌজদারি আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে, সে জন্য যে সব অন্য জিনিসগুলো আছে, সেগুলোর হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিক্সা, গরুর গাড়ি, রেল চলবে। .... সেক্রেটারিয়েট ও সুপ্রীমকোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমি-গবর্নমেন্ট দপ্তর, ওয়াপদা- কোন কিছুই চলবে না। ...আমরা তাদের ভাতে মারব, আমরা তাদের পানিতে মারব...আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

বঙ্গবন্ধুর অমোঘ মন্ত্রে দীক্ষিত-প্রাণিত হয়ে কঠিন সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে দেশকে হানাদারমুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল গোটা জাতি। শুধু অদম্য মনোবলকে সম্বল করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে নিরস্ত্র বাঙালী মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তানের আধুনিক সমরসজ্জিত, প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। মৃত্যুপণ লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুঃসাহসে দীপ্ত মুক্তিকামী বাঙালি একাত্তরে মাত্র নয় মাসে প্রবল পরাক্রমশালী পাক হানাদারদের পরাস্ত-পর্যুদস্ত করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ, দুঃসাহসিকতা আর চার লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙালি অর্জন করে নিজস্ব মানচিত্র, লাল-সবুজের পতাকা।

তিনি বক্তৃতা শুরু করেছিলেন বাঙালিদের একান্ত ও নিজস্ব উচ্চারণ ‘ভাইয়েরা আমার’ বলে। একেবারে আড়ম্বরহীন ও বাহুল্যতা ছাড়া লাখো জনতার সামনে এমন অন্তরঙ্গ ও বাংলার জনগণকে তুমি সম্বোধন করে বক্তৃতা করা একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব ছিলো। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশিষ্ট সাহিত্যিক আহমদ ছফার বিশ্লেষণটি যেন আপামর জনগণের কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি। আহমেদ ছফা বঙ্গবন্ধুকে বলতেন, ‘বাংলার ভীম, মধ্যযুগের বাংলার লোকায়ত নেতা যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীন রাজ্যপাট, নির্মাণ করেছিলেন মাটির দুর্গ, ভিতরগড়ে যে দুর্গ প্রাচীর এখনও দেখতে পাওয়া যায়, মাটির হলেও পাথরের মতো শক্ত। বাংলার ইতিহাসের এমন অনন্য নির্মাণ-কীর্তি ৭ মার্চের ভাষণ যেনবা মাটি দিয়ে গড়া, তবে পাথরের মতো শক্ত।’ তিনি তার ভাষণে বাঙালিকে একান্ত আপন তুমি সম্মোধন করে বললেন, ‘মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।’

পঁচাত্তরের পনের আগস্ট সপরিবারে রক্ত দিয়ে দেশমাতৃকার ঋণ শোধ করে গেলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App