×

সারাদেশ

সিংগাইরে খাল দখল করে স্থাপনা, আটকা বন্যার পানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২০, ০৬:৫১ পিএম

সিংগাইরে খাল দখল করে স্থাপনা, আটকা বন্যার পানি

খাল বন্ধ করে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা

সিংগাইরে খাল দখল করে স্থাপনা, আটকা বন্যার পানি

ব্রিজের মুখেই গড়ে তোলা হয়েছে বাড়ি

সিংগাইরে খাল দখল করে স্থাপনা, আটকা বন্যার পানি
সিংগাইরে খাল দখল করে স্থাপনা, আটকা বন্যার পানি
রাজধানীর অতি সন্নিকটে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় পানি প্রবাহের খাল-বিল ও নালার ওপরে পার্শ্বসড়ক, বাঁধ, বসতবাড়িসহ অপরিকল্পিত স্থাপনায় বন্যার পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জেলার ৬টি উপজেলায় অনেক আগেই বন্যার পানিতে প্লাবিত হলেও এসব বাধার কারণে সিংগাইর উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে অনেক পরে। সরেজমিন দেখা গেছে, ধলেশ্বরী নদীর বায়রা ইউনিয়নের নয়াবাড়ি থেকে মানিকগঞ্জ-সিংগাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে পানি প্রবাহের প্রধান খালটি উপজেলার পূর্ব সীমান্তে ধল্লা এলাকার ওই নদীর আরেক প্রান্তে মিশেছে। গত ২০০৪ সালের পর বিগত বছরগুলোতে বর্ষা মওসুমে এ এলাকায় পানি না হওয়ায় খালটির বিভিন্ন স্থানে ভরাট করে একাধিক পার্শ্ব রাস্তা ও অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। খালটির বলধারা ইউনিয়নের খোলাপাড়া এএবি ব্রিকস খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে। তার পূর্বপাশে খোলাপাড়া বাজার রোডের প্রবেশ মুখে আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করে ওই এলাকার ইটভাটা মালিকেরা। একই খালের জয়মন্টপ ইউনিয়নের পূর্বভাকুম এলাকায় সিংগাইর গ্রীন অটো ব্রিকস বাঁধ দিয়ে রাস্তা নিমার্ণ করেন। এর এক কিলোমিটার পূর্বে জায়গীর বাজার থেকে খালটির শাখা আঠালিয়া বিলের পানি প্রবাহ বন্ধ করে ব্রিটানিয়া প্যাকেজিং লিমিটেড ফ্যাক্টরি নির্মাণ করেছেন। পাশাপাশি মূল খালটির বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু অংশ দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে পানি উপচে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি এখন প্লাবিত। খালটির পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সম্প্রতি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা খোলাপাড়া বাজার সড়কের প্রবেশ মুখের বাঁধটি ভেক্যু দিয়ে অপসারণ করেন। অপরদিকে, উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ওপর কালভার্ট কিংবা ব্রীজের প্রবেশ মুখ ভরাট করে মিল-কারখানা, বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় ওইসব স্থানেও পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলার বাস্তা-মানিকনগর সড়কের সুদক্ষিরা এলাকায় সুইসটেক্স প্যাকেজিং অ্যান্ড এক্সসোসোরিজ লিমিটেড বক্সকালভার্টের পশ্চিম পাশ বন্ধ করে ফ্যাক্টরী নির্মাণ করায় এটি অকেজো হয়ে পড়েছে। তার দক্ষিণে চন্দনপুর গ্রামে চামড়া ব্যবসায়ী হারান লালচন্দ্র মনিঋষি ব্রীজের মুখ বন্ধ করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছেন। জামির্তা বাজারের পূর্ব পাশে কালভার্টের একপাশের অধিকাংশ দখল করে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর এলাকার কাংশা রোডে ব্রীজ অকেজো করে বিশাল আকারের শপিংমল নির্মাণ করা হয়েছে। সিংগাইর-চারিগ্রাম সড়কের দাশেরহাটি এলাকায় ব্রীজের পূর্বপাশে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চারিগ্রাম নূরালী গঙ্গার শাখা খালটির বেশীর ভাগ স্থান দখল করে বাড়িঘর ও ইটভাটা নির্মাণ করায় এটি এখন অস্থিত্ব সংকটে। সিংগাইর-সাহরাইল সড়কের লক্ষীপুরে আউরা ব্রীজ পুরোটাই মাটি ফেলে বন্ধ করে দিয়েছে জনৈক প্রবাসী আবু বক্কর। এছাড়া সায়েস্তা ইউনিয়নের বিশাল এলাকায় পানি প্রবেশ ও বের হওয়ার একমাত্র খাল তেঁতুলতলা থেকে আনন্দবাজার পর্যন্ত বেশীর ভাগ অংশই ভরাট করে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে এসব দখলদারিত্বের পাশাপাশি ছোটখাটো খাল ও নালা বন্ধ করে সরকারি প্রকল্পে নির্মিত হয়েছে একাধিক রাস্তা। যা বন্যা পরবর্তী সময়ে পানি নিষ্কাশনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে এবং বিশাল এলাকার ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রুবাইয়াত জামান বলেন, আমরা অনেককেই বিভিন্ন সময়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য জানিয়েছি। পাশাপাশি ইউএনও এবং এসিল্যান্ড মহোদয়কে দিয়ে অভিযান পরিচালনাও করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা বলেন, সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App