×

সাময়িকী

প্রাণের স্পন্দন ফিরছে খেলার মাঠে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২০, ০৪:৩৮ পিএম

প্রাণের স্পন্দন ফিরছে খেলার মাঠে

রকিবুল হাসান

করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবীকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। সেটা অর্থনৈতিক হোক, রাজনৈতিক হোক, হোক মানুষের জনজীবন। এই মহামারি সারা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে। এই ভাইরাস ক্রীড়াঙ্গনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপের অনেক ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়নি। যদিও অনেকে শুরু করেছে এখন গ্যালারি শূন্য স্টেডিয়ামে। আর ক্রিকেট অঙ্গন যেটা। যেখানে আমি বিলং করি। ক্রিকেট অঙ্গনে কিন্তু একে একে অনেক কিছু পিছিয়ে গেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেছে। বাংলাদেশের ৪টি সফর নষ্ট হয়েছে। এটা আমাদের ওপর অনেক বড় একটা প্রভাব ফেলেছে। যেমনটি ফেলেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সব দেশের ওপরই। তবে ধীরে ধীরে আবার ক্রিকেট কিন্তু ফিরছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট সিরিজ দিয়ে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু হয়ে গেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন ইংল্যান্ডে খেলছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানও কিন্তু ওখানে চলে গেছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাস্তবতা আমাদের দেশের বাস্তবতা এক না। কারণ আমাদের এখানে এত ঘনবসতি। এত লোকসংখ্যা। এত ছোট দেশ। ইংল্যান্ডে সাজানো গোছানো সব কিছুই। আর্থিকভাবে তারা অনেক শক্ত। টেকনিক্যাল দিক দিয়ে তারা অনেক শক্তিশালী এবং আমাদের থেকে এগিয়ে। ফলে তারা মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে সাহস দেখিয়েছে। যেটা আমাদের মতো দেশকেও সাহস জোগাচ্ছে। এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে। লাইফ মাস্ট গো অন। যে কোনো বাধাই আসুক এগিয়ে যেতে হবে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নিয়ে দরবার হচ্ছে এখন। শ্রীলঙ্কা চাচ্ছে আমরা যাই। আগামী সেপ্টেম্বরে এটা হতে পারে। বাংলাদেশ যেতে পারে ওখানে। কিন্তু তার আগে বাংলাদেশ টিমের প্রস্তুতির একটা ব্যাপার আছে। আমরা সেখানে সাধারণ ম্যাচ খেলতে যাবো না। এগুলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ। ওখানে প্রস্তুতি নিয়েই যেতে হবে। সেদিকে ক্রিকেট বোর্ড দৃষ্টি রেখেছে। প্লেয়ারদের তারা সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করছে। তবে দেশের ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটকে ফের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর নির্ভর করে রুটি রুজির ব্যবস্থা করছে প্রায় ১ হাজার ক্রিকেটার। এমনকি বয়সভিত্তিক দলগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রতি। কারণ নয়তো তাদের পারফরমেন্সে তা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য ঢাকার বাইরে যেসব জায়গায় যেমন দিনাজপুর, রাজশাহী, খুলনা এবং সাভারে বিকেএসপিতে করোনার প্রকোপ কম সেখানে তাদের নিয়ে ম্যাচ আয়োজন করতে পারে বিসিবি। যেসব অঞ্চলে করোনার প্রকোপ কম সেখানে খেলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্রিমিয়ার লিগ শুরুর ব্যবস্থা করতে হবে। বিসিবিকে এখনই রোড ম্যাপ করে এগুতে হবে। প্ল্যান এক, প্ল্যান দুই, প্ল্যান তিন। এভাবে বেশ কিছু পরিকল্পনা করা যেতে পারে। কারণ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাতে ১৫ দিন কিংবা ২০ দিনের নোটিসে ক্রিকেট মাঠে ফেরানো যায়। অক্টোবরে পরিস্থিত স্বাভাবিক হলে মাঠে দর্শক ফেরানোর উদ্যোগ নিতে পারে বিসিবি। মাঠে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার হলে ৫ হাজার দর্শক প্রবেশের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এদিকে করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে মূলত মার্চ মাসে। আর এর ফলে মার্চ থেকেই একে একে স্থগিতের ঘোষণা আসে ক্রীড়াপ্রতিযোগিতাগুলো। এ বছরের মার্চই তেমনই স্থগিতের ঘোষণা আসে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন ইউরোর। এ বছরের ১১ জুন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত ইউরোপের ১২টি দেশে ছেলেদের ইউরো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে ২০২১ সালের জুন মাসে নিয়ে যাওয়া হয়। ফুটবলের মধ্যে আরেকটি বড় আয়োজন হিসেবে করোনার কবলে পড়েছে কনকাকাফ নেশন্স লিগ। এই করোনার কারণে বাধ্য হয়ে স্থগিত করে দিতে হয়েছে প্রতিযোগিতাটির সেমিফাইনাল, তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচ ও ফাইনাল। এ বছরে বিশ্ব আয়োজনের মধ্যে অন্যতম আরেকটি বড় আয়োজন ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৮ অক্টোবর থেকে ১৬ দলের অংশগ্রহণে বিশ্বকাপটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই করোনার কারণে এই বিশ্বকাপটি ২ বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালে ভারতের মাটিতে আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে একই বছর দুটি বিশ্বকাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়। আর তাই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপটি ২০২২ সালে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিযোগিতাগুলো মার্চ মাসেই স্থগিত হওয়ার ঘোষণা আসলেও বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি এই জুলাই মাস পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অপেক্ষা করেছে। যদিও অস্ট্রেলিয়া ইচ্ছে করলে বিশ্বকাপটি দর্শকবিহীন মাঠে আয়োজন করতে পারতো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App