×

সাময়িকী

গরুর জন্য ফুলের মালা নিয়ে আসতাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২০, ০৩:৫১ পিএম

গরুর জন্য ফুলের মালা নিয়ে আসতাম

ফেরদৌস আহমেদ।

এ বছর কুরবানি নিয়ে একটু ভাবা যেতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করছি, কুরবানি এই ঈদ আমরা যদি অন্যভাবে দিতাম বা অন্য কিছু করতাম! তাহলে ভালো হতো। কুরবানির টাকাটা যদি গরিব-দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দিতে পারতাম, তাহলে অনেক বেশি সুন্দর হতো বিষয়টা। করোনার মহামারির এই দুর্যোগে গাদাগাদি করে গরুর হাটে যাওয়া এবং গরু কিনে এনে বাড়ির মধ্যে এতগুলো কসাই ঢুকিয়ে দেয়ার বিষয়টা ব্যক্তিগতভাবে আমার একদম পছন্দ হচ্ছে না। অনেকের হয়তো ধর্মীয় অনুভ‚তিতে লাগতে পারে বিষয়টা। আমি কারো ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করতে চাই না। কারণ প্রত্যেকেই ধর্ম চর্চা করবে। এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। কিন্তু এতে করে হবে কী, আপনি আমি হয়তো নিরাপদ দূরত্বে থাকব। অজান্তে আমিই হয়তো অন্যের মাধ্যমে বাড়িতে ভাইরাসটা নিয়ে আসতে পারি। এই বিষয়টা আমাদের বোঝা উচিত। এই ঈদে অনেকে ঢাকা থেকে বাইরে যাচ্ছে, বাইরে থেকে ঢাকা আসছে তাদের বোঝা উচিত করোনা নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আমরা যদি নিজেদের একটু নিয়ন্ত্রণ করি তাহলে তাড়াতাড়িই করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসত। তাই সবার কাছে অনুরোধ দেশের কথা ভেবে যতটা সম্ভব কুরবানিটা সীমিত আকারে করলে মঙ্গল হবে। অনেকের মধ্যে দেখা যায় ৭-৮টা গরু কিনে শো-অফ করার প্রবণতা। বিশাল বড় বড় গরু কিনে নিয়ে আসে। যতটুকু সম্ভব এই ঈদে বাহুল্য বর্জন করতে পারলে সবার মঙ্গল হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঢাকার বাইরে যেতেই হবে এই মানসিকতাটা যেন আমরা তুলে রাখি অন্তত এই ঈদের জন্য। জানি, সবাই আত্মীয় পরিজন নিয়ে ঈদ করতে চায়। কিন্তু এই ঈদে আমরা সচেতনভাবে সেটা পরিত্যাগ করতে পারি। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আগামীতে ভালো ফল পাব। এই মুহূর্তে যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে আনন্দটা ঘরে বসেই করা উচিত। সেই সময় আমার ছেলেবেলার ঈদের উচ্ছ্বাস ছিল অন্যরকম। বিশেষ করে কুরবানির ঈদে। পরিবারের সবাই মিলে দলবেঁধে হাটে যেতাম। গরু কিনে আনার পর কম্পিটিশন হতো। আমি ক্যান্টনমেন্টে ধামাল কোট নামে যে জায়গায় বেড়ে উঠেছি সেটা ছিল পাড়ার মতো। যেখানে সবাই সবাইকে চিনত। তখন কার গরু কত সুন্দর দেখতে এ নিয়েও টান টান উত্তেজনা বিরাজ করত। কার গরু কতটা সুন্দর করে সাজানো যায়, এজন্য ফুলের মালা নিয়ে আসতাম। সেই আনন্দ উচ্ছ্বাসগুলো অন্য ধরনের ছিল। তখন তো পাওয়ার আনন্দ ছিল। এখন দেয়ার আনন্দটাই বেশি। আমার মেয়েদের বোঝাতে চেষ্টা করি আমাদের সেই ঈদের সংস্কৃতিটা। ওরা যেন আমাদের ছোটবেলার সংস্কৃতিটা ভুলে না যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App