×

সারাদেশ

ভিজিএফের চাল বিতরণে নয় ছয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২০, ১১:২৩ এএম

ভিজিএফের চাল বিতরণে নয় ছয়

ছবি: প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় হতদরিদ্র ও দুস্থ মানুষের মধ্যে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ওজনে কম দেয়া, স্বজনপ্রীতি ও সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে মাষ্টাররোলে নিজস্ব লোকজনের টিপ ও স্বাক্ষর নিয়ে চাল উত্তোলন দেখিয়ে গরিবের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফের চাল আত্মসাত করা হয়। এছাড়া অনেকটা প্রকাশ্যেই টাকার বিনিময়েও কার্ড ও চাল বিক্রি করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ জুলাই) বেলা দশটা থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র দেখা যায়। সুবিধাভোগী নারী-পুরুষ তালিকায় নাম থাকলেও চাল পাননি। পরে ইউপি সদস্য মোখছেদ আলীর নেতৃত্বে বিক্ষোভেও নামেন তারা। এ সময় ভিজিএফের চাল নিয়ে নয় ছয় ও আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একই ব্যক্তি পাঁচ থেকে ছয়টি কার্ড দিয়ে চাল নিচ্ছে। আবার এসব চাল সেখানেই পাইকারদের নিকট প্রকাশ্যেই বিক্রি করছে। এছাড়া ওজনে কম দিতে বালতির মাধ্যমে চাল দেয়া হচ্ছে। যারা চাল নিচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পছন্দের ও নিজস্ব লোক। আর তারাই চাল বিতরণের মাষ্টাররোলে একের পর টিপ সহি ও স্বাক্ষর দিচ্ছেন। অথচ তালিকায় তাদের নামই নেই। এভাবে গরিবের জন্য বরাদ্দ চাল উত্তোলন দেখিয়ে আত্মসাত করা হয়।

যার সত্যতা স্বীকার করলেন ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোখছেদ আলী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা কোন চাল পাচ্ছেন না। অপরিচিত লোকজন কার্ড নিয়ে এসে চাল নিয়ে যাচ্ছেন। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তার ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত ১১০জন দরিদ্র মানুষের কাউকেই চাল দেয়া হয়নি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষার পর চাল না পেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তারা।

শাহ আলম, সালমা বেগম, সুফিয়া বেগমসহ একাধিক ভুক্তভোগী আক্ষেপ করে বলেন, মহামারি করোনা দুর্যোগের কারণে তারা এমনিতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় ঈদকে ঘিরে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া ১০কেজি করে চাল পাবো।এজন্য সারাদিন ধরে বসে আছি। কিন্ত কই চাল। যারা পাচ্ছেন তারা একাই একাধিক কার্ড জমা দিয়ে বস্তা ভরে চাল নিয়ে যাচ্ছেন।

শাহবন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল আমিন মন্ডল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি কোন অনিয়মের মধ্যে নেই। কার্ড ও চাল বিতরণ করছেন মেম্বার ও সচিবরা। তাই এসব বিষয়ে তারাই ভালো জবাব দিতে পারবেন।

শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোছা. শামছুন্নাহার শিউলী বলেন, চাল বিতরণ নিয়ে অভিযোগ শোনার পর ট্যাগ অফিসার সমবায় কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি অসুস্থ। তাই যেতে পারেননি। তবে তার অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঠানো হয়েছিল। তারা গিয়ে ছোট-খাটো সমস্যা সমাধান করে দিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।

শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী সেখ এ প্রসঙ্গে জানান, চাল বিতরণে অনিয়ম ও বঞ্চিতদের বিক্ষোভের খবর পেয়েই এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. জামশেদ আলাম রানা বলেন, ওই ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণে কিছু সমস্যা আছে। গুরুত্বের সঙ্গে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App