×

জাতীয়

ঈদে জঙ্গি হামলার শঙ্কা, পুলিশের সতর্কতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২০, ১২:১০ পিএম

ঈদে জঙ্গি হামলার শঙ্কা, পুলিশের সতর্কতা

প্রতীকী ছবি।

পবিত্র ঈদুল আযহায় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে দেশব্যাপী কড়া সতর্কতা নিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ বিষয়ে দেশের সকল ইউনিটে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

সদর দফতরের এআইজি (অপারেশনস-১) সাইদ তারিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই চিঠিটিতে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনায় জানা গেছে, তথাকথিত আইএস আসন্ন ঈদুল আযহা সামনে রেখে কথিত “বেঙ্গল উলায়াত” ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমেই “বেঙ্গল উলায়াত” ঘোষণা করা হয়। এই অবস্থায় আইএস’র দেশীয় অনুসারী নব্য জেএমবির সদস্যরা হামলা পরিচালনাসহ যেকোনো জঙ্গি হামলা বা বোমা হামলার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটনসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে পারে। তাই, পুলিশের সকল ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে করে যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। সকল ইউনিট প্রধানগন যেন এসব নির্দেশনা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন।

জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থান নিতে ১৯ জুলাই পুলিশের সারা দেশের ইউনিটপ্রধানদের সতর্ক থাকতে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। চিঠিতে বলা হয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ৮টা বা সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে হামলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পুলিশ সদস্য, পুলিশের স্থাপনা ও যানবাহন, বিমানবন্দর, দূতাবাস, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মিয়ানমার বা এসব দেশের স্থাপনা ও ব্যক্তি এবং শিয়া ও আহমদিয়া মসজিদ, মাজারকেন্দ্রিক মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডাকে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলাকারীর সম্ভাব্য বয়স হবে ১৫ থেকে ৩০ বছর। হাতে তৈরি সময় কিংবা দূরনিয়ন্ত্রিত গ্রেনেড, বোমা, ক্ষুদ্রাস্ত্র কিংবা ছুরি-চাপাতি দিয়ে হামলা হতে পারে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা পুলিশের পোশাক পরে তাদের স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারে। তাই পোশাক পরা থাকলেও পুলিশ সদস্যদের পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে। এই চিঠি পাঠানোর পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার রাত নয়টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে পুলিশের একটি চেকপোস্টের পাশে ‘বোমা বিস্ফোরণের’ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলায় একে হাতে তৈরি বোমা বা আইইডি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থেকে চার ইঞ্চি ব্যাসের জিআই পাইপের কনটেইনার, সার্কিটের অংশ, লালা ও নীল রঙের তারের অংশ লোহার বিয়ারিং বল এবং ৯ ভল্টের ব্যাটারির অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এই বোমার সঙ্গে গত বছর ঢাকায় পুলিশের ওপর হওয়া হামলায় ব্যবহৃত বোমার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সে সময় হওয়া পাঁচটি বোমা হামলার চারটিই ছিল দূরনিয়ন্ত্রিত। পল্টনের বোমাটিও দূরনিয়ন্ত্রিত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরদিন শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে গ্রেনেডসদৃশ আরেকটি বস্তু। কালো টেপে মোড়ানো ওই বস্তুতে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এর ভেতর শুধু বালু পেয়েছে।

তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় গতকাল রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সব ইউনিটপ্রধান ও কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। এতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে সার্বিক দিক তুলে ধরেছেন।

পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, পল্টনের বোমা বিস্ফোরণটি জঙ্গিরা ঘটাতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। যে ধরনের বিস্ফোরক ছিল, তা সাধারণত জঙ্গিরাই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এখনো নিশ্চিত কোনো সূত্র তাঁরা পাননি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, সিটিটিসি থেকে ডিএমপির সব উপকমিশনারকে আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও বিশেষ উদ্যোগ নিতে তাগাদা দেওয়ার জন্য সভা ডাকা হয়েছিল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে নিয়মিত চেকপোস্ট বসাতে এবং নতুন ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App