জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে দ্বিতীয় বন্যা যেতে না যেতেই হানা দিয়েছে তৃতীয় দফা বন্যা। বন্যা ও করোনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। উপজেলায় দুই লক্ষাধিক মানুষ একমাস ধরে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১০ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তৃতীয় দফা বন্যায় উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা শেষে ২৫০’শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে ২ লক্ষাধিক মানুষ।

টানা একমাস পানিবন্দি হয়ে থাকায় ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো চরম দূর্ভোগে পড়েছে। একদিকে প্রাণঘাতী করোনার থাবা অপর দিকে দফায় দফায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যা। বন্যায় ঘর থেকে বের হতে পরছে না কাজের সন্ধানে। এজন্য মরার উপর খড়ার ঘাঁ। অন্যান্য বছরে বন্যা হলে বন্যার্ত্ব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমাজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অর্থবিত্তবান মানুষ। এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন রকম।

করোনার প্রভাবে এবার বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতার দৃশ্য তেমন চোখে পড়েনি। করোনার কারণে কমেছে আয়। আবারও অনেক বিত্তশালীরা মহামারির ভয়ে ত্রাণ সহায়তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন। দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় পানিবন্দি মানুষসহ গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছ। এমন প্রস্তুতিতে শুধু সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এনামুল হাসানা জানিয়েছেন, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে আড়াই শতাধিক গ্রামের প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাহাদুরাবাদ, চিকাজানী ও চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন। ঈদুল আযহা উপলক্ষে ৮টি ইউনিয়নের ৫৭ হাজার পরিবারদের জন্য ৫৭ মেট্রিকটন চাল ও ৪৫ হাজার টাকার শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বন্যায় উপজেলার ১’শ ২ জন মৎস্যচাষী, ১৪০টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, উপজেলায় বন্যায় ১৮ হাজার ৩২ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানিয়েছেন, বন্যার্ত মানুষের পাশে উপজেলা প্রশাসন নিরালস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।