×

মুক্তচিন্তা

এখনই করণীয় ঠিক করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২০, ০৮:২৩ পিএম

কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে এবারো চামড়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। করোনা ব্যাধি সংক্রমণের আশঙ্কায় এ বছর কুরবানি কম হবে। এতে চামড়া খাতে কাঁচামালের সরবরাহও কম হবে। ট্যানারি মালিকদের অভিযোগ, করোনাকালীন নানা প্রতিক‚লতা ছাড়াও সাভার শিল্পনগরীতে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার কারণেও পশুর চামড়া সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের করণীয় রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের পর সবচেয়ে জনসম্পৃক্ত খাত চামড়া শিল্প। আমাদের দেশের চামড়া খাত মূলত রপ্তানিনির্ভর। বিশ্বব্যাপী এ দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। করোনার কারণে গত ডিসেম্বর থেকেই চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমেছে। গতবারের কুরবানির ঈদে সংগ্রহ করা পশুর কাঁচা চামড়া এখনো পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। নগরীর ট্যানারিগুলোতে বর্তমানে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার চামড়া জমে আছে। পণ্য বিক্রি না হওয়ায় ট্যানারির মালিকরা অর্থ সংকটে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে নতুন চামড়া সংগ্রহ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকবে, এটা স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন সূত্র জানায়, সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে ১৫৫টি ট্যানারি রয়েছে। অন্যগুলো উৎপাদনে যেতে পারেনি। এ চামড়া শিল্প নগরীর ডাম্পিং ইয়ার্ড ভরে গেছে এবং সিইটিপি সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়। কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারে (সিইটিপি) নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক ক্রোমিয়াম পুনরুদ্ধার বা রিকভারি ইউনিট চালু হয়নি। রাস্তাঘাট সংস্কার কাজের অগ্রগতি সামান্যই। চামড়া সংরক্ষণে এই অনিশ্চয়তায় পাচার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। অতীতে আমরা এমনটাই দেখেছি। কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতন ও চাহিদা কমার অজুহাত তুলে কুরবানির পশুর চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণ করছেন ট্যানারি মালিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের চামড়ার মান ভালো অথচ দাম অনেক কম থাকায় প্রতি বছরই ভারতে চামড়া পাচার হয়ে যায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি শিল্প চামড়া খাতটি ধ্বংসের দিকে যাবে। চামড়া কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। পাশাপাশি সাভারে ঝুলে থাকা নতুন কারখানার নির্মাণকাজ দ্রæত শেষ করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চামড়া শিল্পের অবদান কম নয়। বর্তমানে রপ্তানি খাতে চামড়ার অবদান ৯ শতাংশেরও বেশি। সারা বছরে সংগৃহীত চামড়ার ৬০ শতাংশই আসে কুরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে। গার্মেন্টসের মতো আমাদের দেশে এখন চামড়া খাতের ব্যবসা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপুল সম্ভাবনাও আছে এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার। আমরা মনে করি, একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে আয়ের খাতগুলোর যেমন যথাযথ তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করতে হয়, তেমনি সম্ভাবনাময় খাতগুলোর উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও যথাযথ উদ্যোগের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারলে জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App